ব্রিটিশ রাজপরিবারের ‘প্রেম’ সঙ্কট

ব্রিটিশ রাজবংশের ইতিহাস প্রায় বারোশ বছরের পুরনো। ইংলিশ স্যাক্সন বংশের প্রথম রাজা আলফ্রেড থেকে যা সূত্রপাত হয়। তার পর ব্রিটেনের রাজসিংহাসনে অনেক রাজা-রানির, অনেক রাজবংশের আবির্ভাব হয়েছে কিন্তু মজার ব্যাপার হলো এই যে, প্রায় সবাই-ই ইংলিশ স্যাক্সন বংশের প্রথম রাজা আলফ্রেড দ্য গ্রেটের স্যাক্সন বংশের সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে যুক্ত ছিলেন। রাজা আলফ্রেড দ্য গ্রেটের পর বর্তমান রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ পর্যন্ত ৩২ জন রাজা-রানি ব্রিটিশ রাজসিংহাসন অলঙ্কৃত করেছেন। বর্তমান জার্মান-হ্যানোভার বংশ ‘হাউস অব উইন্ডসর’ যেটি কিনা ব্রিটেনের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী রাজবংশ এটাও ইংলিশ স্যাক্সন বংশের সাথে মিলে গিয়েছে।

ব্রিটিশ রাজপরিবারের ‘প্রেম’ সঙ্কট

প্রায় বারোশ বছরের পুরনো ব্রিটিশ রাজপরিবারের ইতিহাস। বিশ্বজুড়ে ব্রিটিশ রাজপরিবারের শাসন এত বিস্তৃত ছিল যে, বলা হতো ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে সূর্যাস্ত যেত না। বর্তমানে তা কমতে কমতে ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জে এসে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার শহরের ‘বাকিংহাম প্যালেস’ ব্রিটেনের রাজতন্ত্র ও রাজকীয় আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে সর্বদাই বর্তমান। সিংহাসনে সুদীর্ঘ সময় আছেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। বিশ্বের ১৬টি সার্বভৌম রাষ্ট্রের এবং কমনওয়েলথের প্রধান হিসেবে নিখুঁত আভিজাত্য বিশ্বে আগ্রহের কারণ। দুর্দান্ত প্রভাবশালী এবং অভিজাত ব্রিটিশ রাজপরিবার ‘হাউস অব উইন্ডসর’কে একাধিকবার সংকটে পড়তে হয়েছে শুধু ‘প্রেমের কারণে’। আভিজাত্যের সঙ্গে প্রেমের সংঘর্ষে বিশ্বজুড়ে আলোচিত হয়েছে ব্রিটিশ রাজপরিবার। আজ রাইলো ব্রিটিশ রাজপরিবারের ‘প্রেম’ সংকটে কাহিনী:

১০ মাসের রাজা অষ্টম এডওয়ার্ড

যুবরাজ অষ্টম এডওয়ার্ড রাজকীয় ঐশ্বর্যে লালন হলেও এক সাধারণ মার্কিন নারীর প্রেমে পড়েন। এক পার্টিতে ওয়ালিসের সঙ্গে এডওয়ার্ডকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন তার তৎকালীন প্রেমিকা লেডি ফারনেস। ওয়ালিস তখন দ্বিতীয় স্বামীর ঘর করছেন। কিন্তু তিন বছরের মধ্যেই তার প্রেমে ডুবে যান এডওয়ার্ড। ওয়ালিসকে দামি উপহার আর বিদেশে ছুটি কাটাতে গিয়ে রাজকার্যে মনোযোগ হারিয়ে ফেলেন রাজকুমার। কিন্তু এড়ানোর পথ ছিল না।

১৯৩৬ সালে বাবা রাজা পঞ্চম জর্জ মৃত্যুর পর রাজা হন ৪২ বছর বয়স্ক অষ্টম এডওয়ার্ড। পরের দিনই প্রথা ভেঙে সেন্ট জেমস প্যালেসের জানালায় দেখা দেন নতুন রাজা, পাশে ছিলেন ওয়ালিস সিম্পসন। তিনি তখনো আর্নস্ট সিম্পসনের স্ত্রী! গুজব চাউর হয়েছিল বেশ আগে থেকেই। তবে রাজপরিবারের প্রতি সম্মান দেখিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমগুলো সেদিন এ নিয়ে কোনো খবর প্রকাশ করেনি। কিন্তু বিদেশি পত্রপত্রিকায় ছাড় দেবে কেন? তারা ফলাও করে ছাপল। এদিকে ব্রিটিশ রাজপরিবারের ভূলুণ্ঠিত হওয়ার অবস্থা। আদালত আর সরকারকে নড়েচড়ে বসতেই হলো। সেই ঘোলাটে পরিস্থিতির মধ্যে এডওয়ার্ডের জন্য সুখবর বয়ে আনলেন ওয়ালিস। তার দ্বিতীয় ঘরটাও ভেঙেছে। কিন্তু রাজাকে কি বিয়ে করা যাবে? উইলিস সিম্পসন কীভাবে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের রানির মুকুট মাথায় পরবেন, এ নিয়েই ওই সময় তুমুল আলোচনার জন্ম দেয়। দুইবার তালাকপ্রাপ্ত মেয়েকে এডওয়ার্ড বিয়ে করলে ব্রিটিশ সরকার পদত্যাগ করবেÑ এমন হুমকি দেওয়া হলো। একজন দুইবার তালাকপ্রাপ্ত সাধারণ এক মার্কিন পরিবারের মেয়েকে ব্রিটিশ রাজার বিয়ে করার সিদ্ধান্তে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল স্বয়ং ইংল্যান্ডের চার্চ, যেখানে রাজা নিজেই চার্চের প্রধান! তখনকার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্ট্যানলে বল্ডউইনও এডওয়ার্ডের এই অন্ধ প্রেমের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে অবস্থান নেন। বল্ডউইন এডওয়ার্ডকে তিনটি প্রস্তাব দিয়েছিলেন- ১. ওয়ালিসকে বিয়ের চিন্তা বাদ দাও, ২. প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে করা ও ৩. সিংহাসন ত্যাগ করা। চাপ সহ্য করতে না পেরে ওয়ালিস তখন পালিয়ে যান ফ্রান্সে। সিদ্ধান্ত নিলেন এডওয়ার্ডের সঙ্গে আর সম্পর্ক রাখবেন না। কিন্তু এডওয়ার্ড জানতেন, সেটি তার মনের কথা নয়। প্রেয়সীর মনের কথাটা বাস্তবে প্রতিফলিত করতেই বল্ডউইনকে এডওয়ার্ড জানিয়ে দেন, তিনি তৃতীয় প্রস্তাবটিতে রাজি! ১৯৩৬ সালের ১০ ডিসেম্বর এডওয়ার্ড ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ‘অ্যাবডিকেশন’ (পদত্যাগ) জমা দেন। পরদিন তা অনুমোদন করা হয়। ফলে তার ছোট ভাই ষষ্ঠ জর্জ রাজা হন।

মাত্র ৩২৬ দিনের মাথায় সিংহাসন ত্যাগ করে ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের ইতিহাসে সবচেয়ে কম মেয়াদি রাজার তালিকায় নাম লিখিয়েছিলেন অষ্টম এডওয়ার্ড। প্রেমের জন্য সিংহাসন ত্যাগের ঘটনা আলোড়ন তোলে বিশ্বজুড়ে। এরপর এডওয়ার্ড চলে যান ফ্রান্সে তার প্রেয়সীর কাছে। ১৯৩৭ সালের ৩ জুন এডওয়ার্ড ওয়ালি সিম্পসনকে বিয়ে করে প্যারিসে বসবাস শুরু করেন। তারা কি সুখী হতে পেরেছিলেন? বেঁচে থাকতে ওয়ালিস শুধু একবার বলেছিলেন, কেউ জানে না অমর এক প্রেমকাহিনীর মতো জীবনযাপন করা কত কঠিন! এডওয়ার্ড-ওয়ালিসের বিবাহ এখনো ব্রিটিশ রাজপরিবারের অন্যতম বিতর্কিত ঘটনা হিসেবে আলোচিত হয়।

চার্লস ও ক্যামিলা

বিয়ের ১২ বছর পর ১৯৯২ সালে লেডি ডায়ানার সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় যুবরাজ চার্লসের। মনোমালিন্য ছাড়াও এই বিচ্ছেদের পেছনে অন্যতম কারণ ছিল চার্লসের প্রাক্তন প্রেমিকা ক্যামিলা পার্কার বোলস। ১৯৭০ সালে এক পোলো খেলায় চার্লসের সঙ্গে ক্যামিলার সাক্ষাৎ ঘটে ও সম্পর্ক গড়ে ওঠে। অনেকের ধারণা, চার্লস তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু ক্যামিলাকে ভবিষ্যৎ রাজার যোগ্য সহধর্মিণী হিসেবে বিবেচনা করা হয়নি। তার পরও ক্যামিলা প্রিন্স চার্লসের বন্ধুদের একজন হিসেবে ছিলেন। ১৯৭৩ সালে সেনা কর্মকর্তা ও চার্লসের বন্ধু অ্যান্ড্রু পার্কার বোলসকে বিয়ে করেন ক্যামিলা। বিয়ের কয়েক বছর পর থেকেই চার্লসের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটতে থাকে। ১৯৯৫ সালে ক্যামিলার বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। এ সংসারে ক্যামিলার দুই সন্তান রয়েছে। রাজপরিবারের অনিচ্ছা সত্ত্বেও ২০০৫ সালে ক্যামিলাকে বিয়ে করেন চার্লস। এই বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন না চার্লসের মা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ও তার পিতা ফিলিপও। কিন্তু সাধারণ জনগণের মধ্যে চার্লস-ক্যামিলার সম্পর্ক গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। বাকিংহাম প্রাসাদের কাছাকাছি সেন্ট জেমসে’স প্যালেসের ক্ল্যারেন্স হাউসে বসবাস করছে চার্লস-ক্যামিলা দম্পতি।

ডায়ানা ও দোদি

প্রিন্স চার্লসের প্রথম স্ত্রী এবং রাজপুত্র উইলিয়াম ও হ্যারির মা প্রিন্সেস অব ওয়েলস ডায়ানা ফ্যাশন, সৌন্দর্য, এইডস রোগ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি এবং ভূমি মাইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের জন্য বিখ্যাত হয়েছিলেন। জীবদ্দশায় ডায়ানাকে বলা হতো বিশ্বের সর্বাধিক আলোকচিত্রিত নারী। অবশ্য সমালোচকদের মতে, এই খ্যাতি এবং খ্যাতির জন্য প্রচেষ্টাই ডায়ানার জীবনে কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ডায়ানার পরিচিতি ব্যাপক। তিনি দানশীলতার জন্য খ্যাত ছিলেন। কিন্তু তার এই দাতব্য কার্যক্রম ঢাকা পড়ে যায় বিভিন্ন কেলেঙ্কারির গুজবে, যার মধ্যে ছিল তার বিয়েসংক্রান্ত কাহিনী। চার্লসের সঙ্গে ডায়ানার বিয়ে সুখে-শান্তিতে কাটেনি। নব্বইয়ের দশকে ডায়ানার পরকীয়া প্রেমের কাহিনী সারা বিশ্বের পত্র-পত্রিকায় ছড়িয়ে পড়ে। চার্লসের বিশ্বাসঘাতকতাসহ নানা কারণে অবশেষে ১৯৯৬ সালে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ থাকাকালীন এবং বিচ্ছেদের পরও একাধিক পুরুষের সঙ্গে জড়িয়েছে ডায়ানার নাম। এই তালিকায় আছে তার একান্ত দেহরক্ষী ব্যারি মান্নাকি, প্রপার্টি কনসাল্ট্যান্ট জেমস গিলবি, মেজর জেমস হিউইট, পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ডাক্তার হাসনাত খান। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত মিসরীয় বংশোদ্ভূত চলচ্চিত্র প্রযোজক এবং ধনকুবের দোদি আল ফায়েদের সঙ্গে তার সম্পর্ক। শুরু থেকেই দোদির সঙ্গে ডায়ানার এই সম্পর্ক নিয়ে রাজপরিবার থেকে শুরু করে ব্রিটেনের জনগণের মধ্যে মিশ্র এক প্রতিক্রিয়া ছিল। ১৯৯৭ সালে প্যারিসের যে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ডায়ানা সেই গাড়িতে তার সঙ্গে ছিলেন ফায়েদও। ডায়ানার জীবনযাপন বিষয়ে ব্রিটিশ রাজপরিবারের অসন্তোষ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রায়ই আলোচিত হয়েছে।

প্রিন্সেস মার্গারেট

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের একমাত্র বোন রাজকুমারী মার্গারেট প্রথম শিরোনামে আসেন পিটার টাউনসেন্ডের সঙ্গে তার প্রেমের কারণে। ক্যাপ্টেন পিটার টউজেন্ট ছিলেন একজন বিপত্নীক যুদ্ধবীর। আর পিটারের সঙ্গে প্রিন্সেস মার্গারেটকে হাস্যরত অবস্থায় খুঁজে পাওয়া যায় ১৯৫৩ সালে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের অভিষেক অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠানে দুজন একসঙ্গে ক্যামেরাবন্দি হয়ে পড়লে দুজনের মধ্যকার প্রেমের বিষয়টি সবার নজরে চলে আসে। মার্গারেটের বয়স যখন ২৫ পূর্ণ হলো তখন এই জুটি তাদের বাগদানের ঘোষণা দিল। কিন্তু টউজেন্ট বিপত্নীক হওয়ার কারণে একটা সমস্যা লেগেই ছিল। রাজকীয় রীতি অনুসারে মার্গারেট যদি পিটার টউজেন্টকে বিয়ে করেন তাহলে তাকে রাজপরিবার তো বটেই, পাঁচ বছরের জন্য ইংল্যান্ডও ছাড়তে হবে। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে মার্গারেট ঘোষণা দিলেন, তিনি রাজকীয় রীতির প্রতি সম্মান দেখিয়ে তার ভালোবাসাকে কোরবান করে দিয়েছেন! মার্গারেট একা থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু কয়েক বছর পর পিটার একজন বেলজিয়ান নারীকে বিয়ে করে সংসারী হন। এর পর প্রিন্সেস মার্গারেট চিত্রগ্রাহক অ্যান্টনি আর্মস্ট্রং-জোনসকে বিয়ে করেন। এই বিয়েও সৃষ্টি করে বহু বিতর্ক।

মার্গারেটের প্রথম বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল ১৯৬৬ সালে। তার মেয়ের গডফাদার ফরাসি মদ উৎপাদক অ্যান্টনি বার্টন। এক বছর পর মার্গারেট ব্রিটিশ সাবেক প্রধানমন্ত্রী আলেক ডগলাস-হোমের ভাগ্নে রবিন ডগলাস-হোমের সঙ্গে এক মাসের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তবে মার্গারেট দাবি করেছিলেন, ডগলাস-হোমসের সঙ্গে তার সম্পর্ক প্লাটোনিক ছিল। মার্গারেটের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ হয়ে যাওয়ার ১৮ মাস পর আত্মহত্যা করে রবিন ডগলাস-হোমের। বলা হয়, সুরকার মিক জাগার, অভিনেতা পিটার সেলার্স ও অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার কিথ মিলারের সঙ্গে রোমান্টিকভাবে জড়িত ছিলেন মর্গারেট।

প্রেয়সীর জন্য ‘রাজত্ব’ ছাড়ার ইতিহাস আরেকবার!

প্রেমের জন্য ব্রিটিশ রাজসিংহাসন কিংবা রাজপরিবার ছাড়ার ইতিহাস নতুন নয়। এবার সেই ইতিহাসে যোগ হলো আরেক নাম। মার্কিন অভিনেত্রী মেগান মার্কেলের সঙ্গে প্রিন্স হ্যারির বিয়ের পর থেকেই চলছিল নানা রকমের জল্পনা। সাম্প্রতিক একটি বিবৃতি দিয়ে ডিউক ও ডাচেস অব সাসেক্স জানান, রাজকর্তব্য থেকে সরে আসতে চলেছেন তারা। ব্রিটিশ রাজপরিবারের শীর্ষ সদস্য হিসেবে নিজেদের দায়িত্ব ছেড়ে ব্যক্তিগত জীবনে ‘আর্থিকভাবে স্বনির্ভর’ হতে চান বলে জানায় এই জুটি। আনুষ্ঠানিকভাবে বাকিংহ্যাম প্যালেস ছেড়ে তারা তাদের সময় যুক্তরাজ্য ও উত্তর আমেরিকায় কাটাতে চান। এখন থেকে তারা আর ব্যবহার করবেন না রাজকীয় উপাধি (হিজ/হার রয়্যাল হাইনেস)। রাজকীয় দায়িত্ব পালনের জন্য সরকারি অর্থও গ্রহণ করবেন না তারা। এ ছাড়া আনুষ্ঠানিকভাবে এই দম্পতি আর ব্রিটেনের রানির প্রতিনিধিত্বও করবেন না। একই সঙ্গে এই দম্পতি আরও জানিয়েছেন, তাদের ফ্রগমোর কটেজ সংস্কার করতে খরচ হওয়া সরকারি তহবিলের প্রায় ২৫ লাখ পাউন্ডও তারা শোধ করে দেবেন। যুক্তরাজ্যে অবস্থানকালে তারা এখন থেকে ওই কটেজেই থাকবেন।

প্রিন্স অ্যান্ড্রু

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের দ্বিতীয় ছেলে অ্যান্ড্রুরও পিছু ছাড়েনি বেশ কয়েকটি বিতর্কিত ঘটনা? যেমন- মার্কিন অভিনেত্রী কু স্টার্কের সঙ্গে তার সম্পর্ক। ১৯৮১ সালে শুরু হওয়া এই সম্পর্ক তারা প্রেস, পাপারাজ্জি ও প্রাসাদের চাপের মধ্যে ১৯৮৩ সালে শেষ হয়ে যায়। পরে সারা ফার্গুসনকে বিয়ে করলেও ১৯৯৭ সালে কু স্টার্কের কন্যার ‘গডফাদার’ হন অ্যান্ড্রু, যা নতুন করে খবরের শিরোনামে নিয়ে আসে তাকে। এখানে শেষ নয়, শিশু-কিশোরীদের পাচার ও জোর করে যৌনদাসীর কাজ করানোর মতো গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত মার্কিন ধনকুবের জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সম্পর্ক নিয়ে নানা অভিযোগ ও সমালোচনা হলে প্রিন্সের পক্ষে বিবৃতি দেন কু স্টার্ক।

রাজকুমারী অ্যান

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের একমাত্র মেয়ে ব্রিটিশ রাজকুমারী অ্যান। তিনি এই পরিবারের একমাত্র সদস্য যিনি অলিম্পিকে অংশ নিয়েছেন। ২শর বেশি দাতব্য সংস্থার সঙ্গে জড়িত তিনি। প্রিন্সেস অ্যানের সঙ্গেও জড়িয়ে ছিল নানা পুরুষের নাম, যার মধ্যে অন্যতম ক্যামিলার সাবেক স্বামী অ্যান্ড্রু পার্কার বোলসও। এ ছাড়া অ্যানের প্রথম স্বামী ক্যাপ্টেন মার্ক ফিলিপসের নামও জড়ায় নানা কেচ্ছার সঙ্গে। শুধু তাই নয়, অ্যান-মার্ক বিচ্ছেদের ফলে সংবাদমাধ্যমে আলোচিত হয় ব্রিটিশ রাজপরিবারের বিচ্ছেদ-বিরোধিতা কমার প্রবণতা। ১৯৯২ সালে বিবাহ বিচ্ছেদের কয়েক মাসের মধ্যে অ্যানি কমান্ডার (বর্তমানে ভাইস অ্যাডমিরাল) স্যার টিমোথি লরেন্সকে বিয়ে করেন।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *