২০২৪: বিশ্ব জুড়ে নির্বাচনের বছর

২০২৪ সালের পুরোটা হতে চলেছে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বড় নির্বাচনী বছর। এ বছরের পুরোটা জুড়ে বিশ্বের ৭৮টি দেশে হতে চলেছে জাতীয় নির্বাচন। যাতে অংশ নিবে নিবে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক মানুষ। বিশ্বব্যাপী এসব নির্বাচনের ফলাফলই ঠিক করে দেবে সামনের দিনে বিশ্ব রাজনীতি কোন পথে গড়াবে। ফলে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে আসতে পারে পরিবর্তন। বিস্তারিত: শামস্ বিশ্বাস

২০২৪: বিশ্ব জুড়ে নির্বাচনের বছর

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারতের মতো শক্তিশালী দেশের পাশাপাশি অর্থনৈতিক দিক দিয়ে দুর্বল দক্ষিণ সুদান, স্বৈরাচারী রাশিয়া, ইরান এবং চাপের মধ্যে থাকা তাইওয়ান, ইউক্রেনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যে দেশগুলো নির্বাচনে যাচ্ছে তাদের মধ্যে অনেকে জি২০ ও জি৭ এর মতো শক্তিশালী জোটের সদস্য। এ কারণে নির্বাচনগুলোতে ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব থাকতে পারে। তাই সবার নজর থাকবে ভোটের ফলাফলের দিকে।

বছরজুড়ে নির্বাচনের বছর

আগমী ৭ জানুয়ারিতে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় নির্বাচনী বছর। বৈশ্বিক জিডিপির একটি বড় অংশের প্রতিনিধিত্বকারী এসব দেশের বিশ্ব জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক। ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংক ট্যাংক আটলান্টিক কাউন্সিলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৭৮টি দেশে ৮৩টি জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচন হবে এই বছর। ২০৪৮ সালের আগে এক বছরে এত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আর সম্ভাবনা নেই।

ব্রাজিল ও তুরস্কের মতো কিছু জায়গায় সাধারণ নির্বাচন হবে না, তবে স্থানীয় বা পৌরসভা নির্বাচন হবে যেখানে পুরো দেশ অংশগ্রহণ করবে।

নির্বাচনে অধিকাংশ মহাদেশ অংশ নিলেও সবচেয়ে বেশি ভোটার এশিয়া মহাদেশে। জানুয়ারিতে বাংলাদেশের জাতিয় নির্বাচন শেষ হওয়ার পরপরই ফেব্রুয়ারিতে এশিয়ার জনবহুল দুই রাষ্ট্র পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়া প্রায় এক সপ্তাহের ব্যবধানে জাতিয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

আফ্রিকার দেশের মধ্যে আলজেরিয়া, বতসোয়ানা, চাদ, কোমোরোস, ঘানা, মৌরিতানিয়া, মরিশাস, মোজাম্বিক, নামিবিয়া, রুয়ান্ডা, সেনেগাল, সোমালিল্যান্ড, দক্ষিণ সুদান, তিউনিসিয়া ও টোগোতে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় নির্বাচন। এই মহাদেশে ২০২৪ সালে সর্বোচ্চ সংখ্যক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

এ বছরজুড়ে ইউরোপে ১০টির বেশি দেশে সংসদীয় ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। ফিনল্যান্ড, বেলারুশ, পর্তুগাল, ইউক্রেন, স্লোভাকিয়া, লিথুয়ানিয়া, আইসল্যান্ড, বেলজিয়াম, ইউরোপীয় পার্লামেন্ট, ক্রোয়েশিয়া, অস্ট্রিয়া, জর্জিয়া, মলদোভা ও রোমানিয়ার মতো দেশে ক্রমান্বয়ে অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন।

২০২৪ সালে রাশিয়ার পর সবচেয়ে অর্থহীন বা উদ্দেশ্যহীন নির্বাচন হতে যাচ্ছে সম্ভবত বেলারুশে। আবার অনেক নির্বাচন টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে। যেমন ইরানের পিতৃতান্ত্রিক নারীবিদ্বেষী রক্ষণশীল প্রশাসন আগামী মার্চের নির্বাচনে ক্ষমতায় হারালে তা দেশটির জন্য ইতিবাচক হবে। তবে তা হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ দেশটির ইসলামি বিপ্লবের সমর্থক প্রশাসন এরই মধ্যে বিরোধীদের ২৫ শতাংশ প্রার্থিতা বাতিল করে দিয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকেও নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। অন্যদিকে আবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে নির্বাচনী পরীক্ষা দিতে হবে। যদিও গাজা ইস্যুতে তার পদত্যাগের দাবি উঠছে এখনই। সব মিলিয়ে এই সব নির্বাচনের ভোটের ফলাফলের দিকে সারা বিশ্বের নজর থাকবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

২০২৪ সালের ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। এটি প্রায় নিশ্চিত যে এবারের নির্বাচনেও জো বাইডেন-ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বৈরথ দেখবে বিশ্ব। মার্কিন ভোটাররা ট্রাম্পকে ফিরিয়ে আনতে কী পরিবর্তন নিয়ে আসে তা দেখার জন্য মুখিয়ে আছে বিশ্ব।

জনমত জরিপ মতে, ৮৬ বছর বয়সী ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বাইডেনকে অধিকাংশ ভোটারই সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের (৭৭) তুলনায় বেশি বয়সী বলে ভাবছেন। আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে নানা গুজবও ছড়িয়ে পড়ছে।

একাধিক ফৌজদারি অপরাধ, আর্থিক কেলেঙ্কারি, কারসাজি ও যৌন হয়রানির মতো বেশ কিছু অভিযোগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা চলছে। নির্বাচন করলেও ট্রাম্পের আইনি লড়াই শেষ হবে না। তাকে অধিকাংশ সময় আদালতেই কাটাতে হবে। তা সত্ত্বেও, রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে ট্রাম্পই ‘ফেভারিট’ হিসেবে বিবেচিত।

অন্যদিকে বাইডেনের সক্ষমতা নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগ রয়েছে। যদিও স্বতন্ত্র ভোটারদের টানতে বাইডেনে আস্থা রাখতে উৎসাহী ডেমোক্র্যাটরা। ইতোমধ্যে রিপাবলিকানদের নেতৃত্বাধীন হাউস অব রিপ্রেজেন্টিটিভস বাইডেনকে অভিশংসনের আওতায় আনতে তদন্তের প্রস্তাব এনেছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশসনে ভাইস-প্রেসিডেন্ট থাকার সময় বাইডেন তার ছেলে হান্টার বাইডেনের ব্যবসা থেকে অনৈতিকভাবে মুনাফা করেছিলেন—এই অভিযোগ সত্য, কি না তা খতিয়ে দেখতেই এই তদন্ত।

আগামী নির্বাচনে বাইডেন নির্বাচিত হয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এলে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসবে না। তবে বিপত্তি বাধবে ট্রাম্প সরকার গঠন করলে। ট্রাম্প নির্বাচিত হয়ে ফিরলে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি কেমন হবে তা এখনো অস্পষ্ট। তবে এটি নিশ্চিত তিনি বাইডেনের সব নীতি থেকে সরে আসবেন।

ইউক্রেনকে দেওয়া মার্কিন সহায়তা কমিয়ে দিতে পারেন ট্রাম্প। ইইউ ও ন্যাটোর সঙ্গে উত্তেজনা ফের দেখা দিতে পারে। ট্রাম্প এলে চীনবিরোধী নীতি আরও জোরদার হতে পারে। 

রাশিয়া

২০২৪ সালের সবচেয়ে অর্থহীন বা উদ্দেশ্যহীন নির্বাচন হতে যাচ্ছে সম্ভবত রাশিয়ায়। দুবছর ধরে চলা ইউক্রেন যুদ্ধে শক্ত অবস্থানে থাকা ভ্লাদিমির পুতিন রাষ্ট্রপতি পদে আছেন ২৪ বছর ধরে। ২০২৪ এর মার্চে হতে যাওয়া নির্বাচনে জিতে আরও ছয় বছর এ পদে থাকবেন। একই সময় ইউক্রেনেরও প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।

২০২০ এ সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে ২০৩৬ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার পথ সুগম করেন পুতিন। এবার নির্বাচিত হলে জোসেফ স্তালিনের শাসনামলকে ছাড়িয়ে যাবে। কার্যত, পুতিনের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। তার মূল ও একমাত্র গ্রহণযোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যালেক্সেই নাভালনি ১৯ বছরের কারাদণ্ডাদেশ নিয়ে কারাগারে রয়েছেন। ফলে এবারও ভ্লাদিমির পুতিনই জয়ী হবেন।

নির্বাচন ঘিরে রাশিয়ায় বিক্ষোভ দেখা দিতে পারে। রুশ সমাজে বিভাজন বাড়বে। ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে রাশিয়ান নিরাপত্তা বাহিনীর দৃষ্টি কিয়েভের দিকে। ফলে এ সময় দেশে নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়বে পারে। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ক্রেমলিনের মনোভাবের কোনো পরিবর্তন হবে না। ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। এই সম্পর্ক উন্নত হওয়ার কোনো সম্ভবনা নেই। মূলত পুতিনও চাইছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘ করতে। কেননা তিনি মনে করছেন, যুদ্ধ দীর্ঘ হলে ইউক্রেনকে সহায়তা করতে করতে পশ্চিমারা ক্লান্ত হয়ে পড়বে। একপর্যায়ে পশ্চিমা সহায়তায় ভাটা পড়বে।

ভারত

আগামী এপ্রিল-মে মাসে প্রায় শত কোটি ভারতীয় নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এই নির্বাচনের মাধ্যমে দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ভারতীয় জনতা পার্টি তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করবে। তবে ২৮ দলীয় বিরোধী জোটের কারণে মোদির আশা ভঙ্গ হতে পারে! আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই ভারতের পাঁচটি প্রধান প্রদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এসব নির্বাচনের ফল আগামী সাধারণ নির্বাচনের ভিন্ন মাত্রা যোগ করতে পারে।

এএফপির বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের বিপুল পরিমাণ হিন্দু জনগোষ্ঠী মোদির ভোটব্যাংক হিসেবে কাজ করতে পারে। সংখ্যালঘু মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ রয়েছে বিজেপির বিরুদ্ধে।

নাগরিক স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগ থাকলেও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন মোদি—এমনটাই ভাবেন অনেক ভারতীয়। ফলে ভোটে বেশ ভালো করার সম্ভাবনা আছে মোদির।

তৃতীয় মেয়াদে মোদি সরকার ক্ষমতায় এলে ব্যবসাবান্ধব সংস্কারকেই অগ্রাধিকার দেবে। একই সঙ্গে বিশ্বমঞ্চে বৃহত্তর ভারতীয় প্রভাব বাড়ানোর জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে নয়াদিল্লী। এর সাথে সাথে ভারত ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আরও উষ্ণ হবে। 

ইউরোপ

২০২৪ সালের আরেকটি বড় ও উল্লেখযোগ্য নির্বাচন হল ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচন। আগামী বছরের একে বারে মাঝামাঝি ইউরোপীয় ইউনিয়নে ক্ষমতার রদবদল হবে। জুন ও জুলাই মাসে দুই ধাপে ইইউ নির্বাচন হবে। ভোটের মাধ্যমে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নতুন সদস্য নির্বাচন করবেন ইউরোপীয়রা। এর পর জোটের সদস্য দেশগুলো ইউরোপীয় কমিশনের নতুন প্রেসিডেন্ট, কমিশনারসহ প্রধান প্রধান পদে নিয়োগ দেবে। এই বহুজাতিক নির্বাচনে ভোট দেবেন ইউরোপের ৪০ কোটি মানুষ। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাচনও বৈশ্বিক রাজনীতিতে প্রভাব ফেলবে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই ভোট কট্টর ডানপন্থী, ‘পপুলিস্ট’ (জনতোষণবাদী) নেতাদের জন্য একটি অগ্নিপরীক্ষা।

নভেম্বরে ডাচ নির্বাচনে গ্রিট ওয়াইল্ডারের ইসলামবিরোধী ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিরোধী পিভিভি ফ্রিডম পার্টি ও গত বছর ইতালিতে জর্জিয়া মেলোনির কট্টর ডানপন্থী ব্রাদার্স অব ইতালির বিজয় ডানপন্থীদের পালে হাওয়া দিলেও, এই নির্বাচনেই তাদের জনপ্রিয়তা যাচাই হবে।

তবে পোল্যান্ডকে দেখে সাহস পেতে পারে ব্রাসেলস। ইইউর সমর্থক হয়েও ক্ষমতায় ফিরেছেন ইউরোপীয় কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি ডোনাল্ড টাস্ক।

নির্বাচনকেন্দ্রিক জনমত জরিপ বলছে, এবারের ইউরোপীয় পার্লামেন্ট বিভক্ত ও অপ্রত্যাশিত হবে। মধ্য-ডান ঘেঁষা ইপিপিই সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে থাকবে। অন্যদিকে জাতীয়তাবাদী ভাবধারার রক্ষণশীল দলগুলো বড় ধরনের কিছু লাভ করতে পারে।

ইউরোপীয় কমিশনে নতুন জোট ক্ষমতায় এলে বেশকিছু পরিবর্তন আসতে পারে। পরিবেশ ও ডিজিটাল নিয়ন্ত্রণ অগ্রাধিকার পেলেও বিভিন্ন সংস্কার পরিকল্পনার গতি ধীর করার চাপ বাড়বে। ইইউ বাজেটে প্রভাব পড়বে। ফলে কৃষি, অবকাঠামোগত তহবিল ও প্রতিরক্ষা ব্যয় প্রভাবিত হবে। ইইউতে ইউক্রেনের যোগদান বড় ইস্যু হিসেবে দেখা দেবে। অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন বজায় রাখার চেষ্টা অব্যাহত রাখবে ইইউ। মার্কিন নির্বাচন ঘিরে অনিশ্চয়তার ফলে এ বিষয়টি আরও প্রকট হবে। 

মেক্সিকো

জুনে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়বেন দুই নারী। যার ফলে যুগ যুগ ধরে চলে আসা পুরুষতান্ত্রিক ক্ষমতা অবকাঠামোয় আসতে যাচ্ছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন।

এক দিকে আছেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস মানুয়েল লোপেজ ওবরাদরের মোরেনা পার্টির প্রার্থী ক্লদিয়া শেইনবম। তিনি রাজধানী মেক্সিকো সিটির সাবেক মেয়র।

অপরদিকে আছেন দেশটির ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রতিনিধি জোচিল গালভেজ। তিনি বিরোধীদলীয় জোট ‘ব্রড ফ্রন্ট ফর মেক্সিকোর’ পক্ষ থেকে নির্বাচনে অংশ নেবেন। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী।

দক্ষিণ আফ্রিকা

মে মাসে আফ্রিকার সবচেয়ে শিল্পোন্নত দেশ দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় নির্বাচন। ১৯৯৪ সালে বর্ণবৈষম্যের অবসানের পর থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন হিসেবে দেখা হচ্ছে এটিকে।

দক্ষিণ আফ্রিকায় নব্বইয়ের দশক থেকে ক্ষমতাসীন আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এনএনসি) এবার ব্যাপক চাপের মুখে। তাদের হারাতে জোট বেঁধেছে বিরোধীরা। আসন্ন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন এএনসি কে চড়াই-উতরাই পাড়ি দিতে হবে। কারণ আশঙ্কা করা হচ্ছে ক্ষমতায় থাকার জন্য দলটি হয়তো ৫০ শতাংশ ভোটও পাবে না।

তাইওয়ান

তাইওয়ানের নির্বাচনে চীনপন্থি নেতার জয় হয়, নাকি ক্ষমতাসীন স্বাধীনতাপন্থি দলই ক্ষমতায় ফিরে আসে তা নিদ্ধারণ হবে কয়েকদিনের মধ্যে।

আগামী ১৩ জানুয়ারি জানুয়ারি স্বশাসিত দ্বীপটিতে ভোট হবে। চীনের সঙ্গে টানাপোড়েনের মধ্যেই নির্বাচনের পথে হাঁটছে তাইওয়ান। ফলে বেইজিং-তাইপের এ সম্পর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসতে পারে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।

বর্তমানে ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টির (ডিপিপি) ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চীনের কট্টর সমালোচক লাই চিং নির্বাচনী দৌড়ে বেশ এগিয়ে আছেন। তবে চীনঘেঁষা বিরোধীরা জোট গঠন করে নির্বাচনের মাঠে নামলে বিপদে পড়তে পারেন তিনি। নির্বাচনে ডিপিপি পার্টি জয়ী হলে চীনের সঙ্গে তাইওয়ানের উত্তেজনা বাড়বে। দুদেশের ব্যবসায়ও এর প্রভাব পড়বে, বিশেষ করে প্রযুক্তি খাতে। বিভিন্ন কোম্পানির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাও আসতে পারে। এ ছাড়া এই নির্বাচনী ফলাফলের প্রভাব তাইওয়ান প্রণালি পেরিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পড়বে পারে

স্বশাসিত দ্বীপ অঞ্চলটিকে নিজেদের অংশ বলে মনে করে চীন। এমনকি প্রয়োজন হলে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে এর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার কথা জানিয়ে রেখেছে বেইজিং। তাইওয়ানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক না রাখলেও এ বিষয়ে ‘কৌশলগত অস্পষ্টতার’ নীতি মেনে চলে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে তাইওয়ানকে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র দিয়ে থাকে ওয়াশিংটন। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এ নির্বাচনই ওয়াশিংটন-বেইজিং সম্পর্ক ঠিক করে দেবে।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, দ্য ইকোনমিস্টের এবং এএফপি


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *