বিশ্বের নবীনতম ১০টি দেশ

বিশ্বের নবীনতম ১০টি দেশ

জনগণের প্রয়োজনে ত্যাগ-তিতিক্ষার মাধ্যমে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জন্ম নেয় স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের। পুরনো সীমানা ভেঙে তৈরি হয় হয় নতুন সীমান্ত। বিশ্বের মানচিত্রে আলাদা করে জানায় নিজেদের স্বতন্ত্র পরিচয়ের।

 

০১.  দক্ষিণ সুদান

পূর্ব-মধ্য আফ্রিকার রাষ্ট্র দক্ষিণ সুদানের সরকারি নাম রিপাবলিক অফ সাউথ সুদান এবং আগেকার নাম ছিল সাউদার্ন সুদান। আয়তন ৬,১৯,৭৪৫ বর্গ কিমি. (৪২তম)। জনসংখ্যা ২০০৮ আদমশুমারি অনুসারে ৮২,৬০,৪৯০ (৯৪তম) জন। বর্তমান রাজধানী জুবা। এটিই দেশটির বৃহত্তম শহর। এ দেশটি মুহাম্মদ আলি রাজবংশের শাসনকালে মিশরের অধীনে ছিল। পরে এটি যুক্তরাজ্য ও মিশরের যৌথমালিকানাধীন এলাকায় পরিণত হয়। ১৯৫৬ সালে সুদান স্বাধীন হয়। সুদানের প্রথম গৃহযুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে সুদান দক্ষিণাঞ্চলীয় স্বশাসিত এলাকা গঠিত হয়। ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত এই স্বশাসন বজায় ছিল। সুদানের দ্বিতীয় গৃহযুদ্ধের পর ২০০৫ সালে “কমপ্রিহেনসিভ পিস এগ্রিমেন্ট” সাক্ষরিত হয়। ওই বছরের শেষ দিকে গঠিত হয় “অটোনমাস গভর্নমেন্ট অফ সাউদার্ন সুদান”। ২০১১ সালে একটি গণভোটে দেশটির ৯৮.৮৩% মানুষ স্বাধীন দক্ষিণ সুদানের পক্ষে মত দেন। সরকারি ভাষা আরবি এবং মুদ্রার নাম সাউথ সুদান পাউন্ড। জিডিপি (মাথাপিছু) ১,০০৬ মার্কিন ডলার।

 

০২.  পূর্ব তিমুর

ওশেনিয়া মহাদেশের এই রাষ্ট্র তিমুর দ্বীপের পূর্ব অর্ধাংশ নিয়ে গঠিত। আয়তন ১৫ বর্গ কিমি. (১৫৮তম)। এ দেশের উত্তরে ওয়েটার প্রণালী এবং দক্ষিণে তিমুর সাগর। দ্বীপের পশ্চিম অংশ ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব নুসা তেঙ্গাররা প্রদেশের অন্তর্গত। ১৬শ শতকের শুরু থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত পূর্ব তিমুর একটি পর্তুগিজ উপনিবেশ ছিল। ইন্দোনেশিয়া ১৯৭৬ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত এটিকে একটি প্রদেশ হিসেবে দাবী করে। ১৯৯৯ সালের আগস্ট মাসে পূর্ব তিমুরের জনগণ একটি গণভোটের মাধ্যমে স্বাধীনতার পক্ষে রায় দেয়। পূর্ণ স্বাধীনতা লাভের আগ পর্যন্ত এটিকে জাতিসংঘের অধীনে রাখা হয়। ২০০২ সালের ২১ মে এটি একটি সম্পূর্ণ স্বাধীন প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়। সরকারি নাম “গণপ্রজাতন্ত্রী পূর্ব তিমুর”। উত্তর উপকূলে অবস্থিত বন্দর শহর দিলি দেশটির রাজধানী। জিডিপি (মাথাপিছু) ৮০০ মার্কিন ডলার। ব্যবহৃত মুদ্রা হল মার্কিন ডলার। জনসংখ্যা ২০০৫ সালের হিসাব অনুসারে আনুমানিক ৯,৪৭,০০০ (১৫৫তম) জন। সরকারি ভাষা পর্তুগিজ এবং তিতুম।

 

০৩. কসোভো

ইউরোপের বলকান অঞ্চলের এ দেশটি সার্বিয়ার একটি স্বশাসিত অঞ্চল ছিলো। নব্বইয়ের দশকে যুগোস্লাভ রিপাবলিক ভেঙে গেল বিভিন্ন স্থান থেকে উৎখাত হওয়া সার্বরা সার্বিয়ায় আসতে থাকলে তাঁদের কসোভোতে পাঠানো হতে থাকে। এর বিরুদ্ধে আলবেনিয়ানরা গঠন করল ‘কসোভো লিবারেশন আর্মি’। শুরু হয় দুপক্ষের সংঘাত। যুগোস্লাভ আর্মি শুরু করল আলবেনিয়ান গণহত্যা। র‍্যাচাকের গণহত্যার পরে ন্যাটোও নড়চড়ে বসে। ১৯৯৯ সালে ন্যাটোর বোমারু বিমান পাঠিয়ে যুগোস্লাভ আর্মির বিরুদ্ধে বোমাবর্ষণ শুরু করে কিন্তু একের পর এক গণহত্যা চলতেই থাকে। যুদ্ধশেষে, ২০০২ সালে ন্যাটো জাতিসংঘের হাতে তুলে দেয় কসোভোর শাসনক্ষমতা। ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ১৭ তারিখে দেশটি স্বাধীনতা ঘোষণা করে এবং ২০১২ সালের ১০ সেপ্টেম্বর পূর্ণ সার্বভৌম অর্জন করে। কসোভো সরকারি নাম রিপাবলিক অব কসোভো। আয়তন ১০,৯০৮ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা ২০১৪ সালের হিসাব অনুসারে ১৮,৫৯,২০৩ জন। এদের বেশিরভাগই জাতিগত ভাবে আলবেনীয়। প্রিস্তিনা কসোভোর সবচেয়ে বড় শহর ও রাজধানী। মাথাপিছু জিডিপি ৮,০০৭ মার্কিন ডলার এবং প্রচলিত মুদ্রা ইউরো।

 

০৪.  সার্বিয়া

মধ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের একটি স্থলবেষ্টিত দেশ। এটি পানোনীয় সমভূমির দক্ষিণাংশে, বলকান উপদ্বীপের মধ্যভাগে অবস্থিত। দেশটির রাজধানী বেলগ্রেড। সার্বিয়ার প্রথম রাজ্য, যা রাস্কা পরিচিত, ৯ম শতকে ভাস্তিমিরভিচ রাজবংশ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে এটি নিমানজিচ রাজবংশের অধীনে সার্বীয় রাজতন্ত্র ও সাম্রাজ্যে প্রসারিত হয়। আধুনিক যুগে বিভিন্ন সময়ে সার্বিয়া বিভিন্ন নামে পরিচিত ছিল। দেশটি ১৮১৭-১৮৭৮ সাল পর্যন্ত ছিল স্বায়ত্তশাসিত রাজ্য, ১৮৭৮-১৯১৮ পর্যন্ত স্বাধীন রাজ্য, ১৯১৮-১৯৪১ সাল পর্যন্ত সার্ব, ক্রোট ও স্লোভেনদের রাজ্যের অংশ (১৯২৯ হতে ইয়ূগোস্লাভ রাজ্য নামে পরিচিত), ১৯৪১-১৯৪৪ পর্যন্ত নাৎসি অধিকৃত রাষ্ট্র, ১৯৪৫ থেকে ১৯৯২ সাল ইয়ূগোস্লাভ যুক্তরাষ্ট্রের অধীনস্থ সমাজবাদী প্রজাতন্ত্র, ১৯৯২-২০০৩ সাল গণতন্ত্রী ইয়ূগোস্লাভ যুক্তরাষ্ট্রের অধীনস্থ একটি প্রজাতন্ত্র, ২০০৩-২০০৬ সার্বিয়া ও মন্টিনেগ্রোর অংশ এবং সর্বশেষ ২০০৬ এর ৫ জুন থেকে সার্বীয় প্রজাতন্ত্র। আয়তন ৮৮,৩৬১ বর্গকিমি (১১৩তম)। জনসংখ্যা ২০০৭ সালের হিসাব অনুসারে ১,০১,৪৭,৩৯৮ (৮০তম) জন। জিডিপি মাথাপিছু ৭,২৩৪ মার্কিন ডলার। মুদ্রার নাম সার্বিয়ান দিনার।

 

০৫.  মন্টিনিগ্রো

দক্ষিণ-পশ্চিম বলকান উপদ্বীপে, অ্যাড্রিয়াটিক সাগরের তীরে অবস্থিত একটি ক্ষুদ্র, পর্বতময় রাষ্ট্র। দেশটির বেশিরভাগ এলাকা পর্বতে আবৃত। ২৯৪ কিলোমিটার দীর্ঘ উপকূলীয় অঞ্চলে সরু বাসযোগ্য সমভূমি রয়েছে। কোতোর উপসাগর ও স্কুতারি হ্রদ দুইটি উল্লেখযোগ্য ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য। ২১ মে, ২০০৬ অনুষ্ঠিত এক গণভোটে মন্টিনেগ্রোর জনগণ সিদ্ধান্ত নেন তারা সার্বিয়ার সাথে সংযুক্ত থাকবে কিনা। পরেরদিন ৫৫.৫% ভোট মন্টিনেগ্রোর স্বাধীনতা নিশ্চিত করে, যা স্বাধীনতার জন্য প্রয়োজনীয় ৫৫ শতাংশ হতে মাত্র দশমিক ৫ ভাগ বেশী। ৩ জুন ২০০৬ স্বাধীন হয় মন্টিনিগ্রো। দেশটির মোট আয়তন ১৩,৮১২ বর্গ কিলোমিটার (১৬১তম)। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে জনসংখ্যা ৬,২৫,২৬৬ জন। রাজধানীর নাম পোডগেরিকো এবং সরকারি ভাষা মন্টিনিগরিন ও সার্বিনিয়ান। দেশটির মুদ্রা ইউরো এবং মাথাপিছু জিডিপি ৩,৮০০ মার্কিন ডলার। মন্টিনেগ্রোর সামরিক বাহিনী স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে গঠিত। নৌবাহিনী আকারে ও ক্ষমতায় উপকূলরক্ষী বাহিনীর মতো। বিমানবাহিনীতে কোনো যুদ্ধবিমান বাহিনী নেই; বরং কয়েকটি পরিবহণ এবং সশস্ত্র হেলিকপ্টার রয়েছে।

 

০৬. পালাউ

পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের একটি স্বাধীন প্রজাতান্ত্রিক দ্বীপরাষ্ট্র। দেশটি কালো দ্বীপপুঞ্জ নামেও পরিচিত। মাইক্রোনেশিয়ার অন্তর্গত প্রায় দুইশ’ দ্বীপ নিয়ে এ স্বাধীন পালাউ প্রজাতন্ত্রের জন্ম হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দেশটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের জাতিসংঘ ট্রাস্ট এলাকার অন্তর্ভুক্ত হয় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শাসনাধীনে চলে যায়। পালাউ ১৯৯৪ সালের পয়লা অক্টোবর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে স্বশাসিত রাষ্ট্রে পরিণত হয়। পালাউ দ্বীপপুঞ্জের কোরোর দ্বীপে অবস্থিত কোরোর শহর দেশটির সবচেয়ে বড় শহর। পালাউয়ের রাজধানী মেলিকিওক। তবে বাবেলথুয়াপ নামে নতুন এক দ্বীপে রাজধানী গড়ে তোলা হচ্ছে। পালাউয়ের আয়তন মাত্র ৪৫৯ বর্গকিলোমিটার। ২০১০ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী জনসংখ্যা ছিল ২০,৮৭৯। পালাউয়ের সরকারি ভাষা ইংরেজি ও পালাউয়ান। ২০০৮ সালের হিসাব অনুযায়ী দেশটির মাথাপিছু আয় ছিল ৮,১০০ মার্কিন ডলার। পালাউয়ের নিজস্ব কোনো মুদ্রা নেই। মার্কিন ডলারের মাধ্যমেই সব ধরনের লেনদেন করে থাকে। দেশটি জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে ১৯৯৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর।

 

০৭.  ইরিত্রিয়া

লোহিত সাগরের তীরে দেশটি, তাই এর নাম ‘লোহিত ভূমি’। হ্যাঁ, ‘ইরিত্রিয়া’ শব্দটিকে বাংলায় অনুবাদ করলে এই অর্থ-ই বোঝায়। উত্তর-পূর্ব আফ্রিকার রাষ্ট্রটি সুদান, ইথিওপিয়া, জিবুতি আর লোহিত সাগর দিয়ে বেষ্টিত দেশটি। দেশটির পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব দিকে লোহিত সাগরের পাড়ে সুবিস্তৃত উপকূলীয় অঞ্চল রয়েছে। এর বিশাল এক অংশ জুড়ে সমুদ্র থাকাতে সেই প্রাচীনকাল থেকে এই পথ দিয়ে এখানে উপনিবেশ গেড়েছে আরব, মিশরিয়, ইংরেজ আর রোমান শাসকরা। ১৯৫২ সালে ইথিওপিয়া দেশটিকে দখল করে। কিন্তু ইরিত্রিয়ার জনগণ স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু করে। দীর্ঘ ৩০ বছরের যুদ্ধ শেষে ২৪ মে ১৯৯৩ সালে দেশটি স্বাধীনতা লাভ করে। দেশটির সরকারি নাম ইরিত্রিয়ার রাষ্ট্র; ১,১৭,৬০০ বর্গকিমি (১০০তম)। আসমারা দেশটির রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। ২০০৯ সালের হিসাব অনুসারে জনসংখ্যা আনুমানিক ৫৬,৭৩,৫২০ (১১৭তম) ছিল। পুরো জাতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীতে বিভক্ত। রাষ্ট্রীয় ভাষা হল: আরবি, ইংরেজি এবং তিগ্রিনিয়া। জিডিপি (মাথাপিছু) ৭৩৮.৬২ মার্কিন ডলার এবং মুদ্রার নাম নাকফা।

 

০৮. চেক প্রজাতন্ত্র

মধ্য ইউরোপের এ দেশটি ২০শ শতকের অধিকাংশ জুড়ে প্রতিবেশী দেশ স্লোভাকিয়ার সাথে মিলিতভাবে চেকোস্লোভাকিয়া হিসেবে বিদ্যমান ছিল। পয়লা জানুয়ারি ১৯৯৩ সালে চেক প্রজাতন্ত্র নামে পৃথক হয়ে যায়। আয়তন ৭৮,৮৬৬ বর্গ কিলোমিটার (১১৬তম)। জনসংখ্যা ২০১২ সালের হিসাব অনুসারে ১,০৫,১৩,২০৯ (৮১তম)। দেশটির মধ্যভাগে অবস্থিত বৃহত্তম শহর ও রাজধানীর নাম প্রাগ। রাষ্ট্রীয় ভাষা চেক। চেক প্রজাতন্ত্রের পর্বতবেষ্টিত পাহাড়ি পশ্চিম ভাগ বোহেমিয়া, পূর্বের নিম্নভূমি মোরাভিয়া এবং উত্তরের নিম্নভূমি অঞ্চল সাইলেসিয়া নামে পরিচিত। বর্তমানে চেক প্রজাতন্ত্র ইউরোপের সবচেয়ে শিল্পায়িত দেশগুলির একটি। পর্যটনও দেশটির আয়ের অন্যতম উৎস। জিডিপি (মাথাপিছু) ১৮,৮৪৬ মার্কিন ডলার এবং মুদ্রার নাম চেক করুনা। চেক প্রজাতন্ত্রের ইতিহাস ও সংস্কৃতি সমৃদ্ধ। গথিক, রেনেসাঁস, বারোক ও আধুনিক ধাঁচের স্থাপত্যকলা, নৈসর্গিক দৃশ্যাবলী সমৃদ্ধ গ্রামাঞ্চল, প্রাচীন প্রাসাদ, স্বাস্থ্যসম্মত খনিজ ঝর্ণা বা স্পা, ফ্রান্ৎস কাফকার লেখা আর আন্তোনিন দ্ভোরাকের সঙ্গীতের জন্য দেশটি বিখ্যাত।

 

০৯.  স্লোভাকিয়া

মধ্য ইউরোপের একটি স্থলবেষ্টিত প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র। স্লোভাকিয়ার আয়তন ৪৯,০৩৭ বর্গকিলোমিটার (১৩০তম)। ১০ম শতাব্দী থেকে ১৯১৮ সাল পর্যন্ত স্লোভাকিয়া হাঙ্গেরির অংশ ছিল। ১৯১৮ সালে এটি চেক অঞ্চল বোহেমিয়া ও মোরাভিয়ার সাথে মিলিত হয়ে এবং সাইলেসিয়ার একটি ক্ষুদ্র অংশ সাথে নিয়ে চেকোস্লোভাকিয়া গঠন করে। ১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর কিছুদিন আগে জার্মান স্বৈরশাসক আডল্ফ হিটলারের চাপে দেশটি স্বাধীনতা ঘোষণা করে, কিন্তু ১৯৪৫ সালে আবার এটি চেকোস্লোভাকিয়ার সাথে মিলিত হয়। ১৯৪৮ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত চেকোস্লোভাকিয়ার ক্ষমতায় ছিল সোভিয়েত-ধাঁচের সাম্যবাদী সরকার। ১৯৯৩ সালের পয়লা জানুয়ারি দেশটি চেকোস্লোভাকিয়া থেকে পৃথক হয়ে স্লোভাকিয়া গঠন করে। স্লোভাকিয়ার রাজধানী ও বৃহত্তম শহর ব্রাটিস্লাভা। প্রধান ভাষা স্লোভাক। দেশটির উত্তর-পশ্চিমে চেক প্রজাতন্ত্র, উত্তরে পোল্যান্ড, পূর্বে ইউক্রেন, দক্ষিণে হাঙ্গেরি এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে অস্ট্রিয়া অবস্থিত। ২০০৭ সালের হিসাব অনুসারে জনসংখ্যা ৫৪,৪৭,৫০২ (১১০তম)। মাথাপিছু জিডিপি ১৮,২০০ মার্কিন ডলার এবং মুদ্রার নাম স্লোভাক কোরুনা।

 

১০.  বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা

ইউরোপ মহাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব অংশে বলকান উপদ্বীপে অবস্থিত এ রাষ্ট্রটি যুগোস্লাভিয়া প্রজাতন্ত্রের অংশ ছিল। আয়তন ৫১,১৯৭ বর্গকিমি (১২৭তম)। ১৯৯২ সালের পয়লা মার্চ মাসে এটি স্বাধীনতা লাভ করে। এর পরপরই বসনীয় মুসলমান, ক্রোয়েশীয় ও সার্বীয় জাতির লোকদের মধ্যে গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৯৫ সালে যুদ্ধ শেষে সার্বীয়রা দেশের ৪৯% এলাকা দখলে সক্ষম হয় এবং এর নাম দেয় সার্ব প্রজাতন্ত্র। বসনীয় ও ক্রোয়েশীয়রা দেশের বাকী অংশের নিয়ন্ত্রণ নেয় যার নাম বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা ফেডারেশন। এই ফেডারেশন ও সার্ব প্রজাতন্ত্র একত্রে বর্তমানে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা রাষ্ট্র নামে পরিচিত। দেশটির উত্তরে ও পশ্চিমে ক্রোয়েশিয়া এবং দক্ষিণে ও পূর্বে সার্বিয়া ও মন্টেনিগ্রো প্রজাতন্ত্র অবস্থিত। অ্যাড্রিয়াটিক সাগরে ক্রোয়েশিয়ার মাঝ দিয়ে বসনিয়ার প্রায় ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ তটরেখা আছে। সারায়েভো বসনিয়ার রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। প্রধান ভাষা বসনিয়ান এবং সার্বিয়ান। মুদ্রা কনভারটিবিলিনা মার্ক এবং জিডিপি (মাথাপিছু) ৯,১৬৮ মার্কিন ডলার। জনসংখ্যা ২০০৭ সালের হিসাব অনুসারে ৩৯,৩৫,০০০ (১২৬তম)।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *