ক্রিকেট

ক্রিকেট
অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মাটিতে শুরু হয়েছে একাদশতম ক্রিকেট বিশ্বকাপের আসর। ক্রিকেটের এই মহাযুদ্ধে টেস্ট খেলুড়ে দশটি দেশের সঙ্গে আইসিসির সহযোগী আরো চারটি দেশ অংশগ্রহণ করছে। ক্রিকেট নিয়ে চারিদিকে যখন এত আয়োজন তখন জেনে নেওয়া যাক এই খেলা এখন পর্যন্ত মজাদার আর বিস্ময়কর ঘটনা। অন্তর্জল ঘুরে-ঘুরে এই সব ঘটনা গ্রন্থনা করেছেন: মীর্জা মোহাম্মদ ফারহান সাদিদ এবং তামিম আল-সাবা।
• ইংল্যান্ডে ১৯৭৫ সালে সর্বপ্রথম ক্রিকেট বিশ্বকাপের আয়োজন করা হয়। ওয়ানডে ক্রিকেট প্রবর্তনের চার বছর পর। ১৯৭১ সালে মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার টেস্ট ম্যাচের পঞ্চম দিনের খেলা বৃষ্টিতে ভেসে গেলে বিকল্প ভাবনার ফসল হিসেবে একটি ৬০ ওভারি ম্যাচের আয়োজন করা হয়।
• ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)’র নিজস্ব ট্রফি প্রদানের সিদ্ধান্ত না থাকায় প্রথম তিন বিশ্বকাপে স্পন্সর প্রুডেন্সিয়াল প্রাইভেট লিমিটেড কোং-এর ‘প্রুডেন্সিয়াল কাপ ট্রফি’ প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে স্পন্সর পরিবর্তন হলে ১৯৮৭ সালের বিশ্বকাপ ট্রফির নাম হয় রিলায়্যান্স কাপ ট্রফি (রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রি), ১৯৯২ সালে বেনসন এন্ড হেজেস কর্তৃক বেনসন এন্ড হেজেস কাপ ট্রফি এবং সর্বশেষ ১৯৯৬ সালে আইটিসি ব্র্যান্ডের উইলস কর্তৃক ‘উইলস কাপ ট্রফি’ প্রদান করা হয়। ১৯৯৯ সালের চ্যাম্পিয়নশিপে বর্তমান ট্রফি তৈরি করা হয়। প্রতিযোগিতার ইতিহাসে এটি স্থায়ী পুরস্কার হিসেবে প্রদান করা হয়। বর্তমান ট্রফির নকশা ও নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান হল লন্ডনভিত্তিক গারার্ড এন্ড কোং।
• প্রথম চারটি বিশ্বকাপে খেলোয়াড়রা মাঠে নেমেছিলেন সাদা পোশাকে। খেলা হয়েছিল যথারীতি লাল বল দিয়ে।
• প্রথম বিশ্বকাপের একটি ম্যাচে ভারতের লিজেন্ডারি ব্যাটসম্যান সুনীল গাভাস্কার প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে ৬০ ওভার ব্যাট করে রান করেছিলেন মাত্র ৩৬ রান। সেই ম্যাচে ভারত ২০৩ রানে বিশাল ব্যবধানে হেরেছিল।
• ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত প্রথম তিনটি বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৯৭৫ সালে অস্ট্রেলিয়া, ১৯৭৯ সালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় ক্যারিবিয়ানরা, কিন্তু ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপে ফাইনালে ভারতের কাছে হেরে যায় তারা। তারপর থেকে আর কোনো বিশ্বকাপের ফাইনালেই নাম লেখাতে পারেনি সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দলটি।
• ক্যারিবিয়ানদের পরে বিশ্বকাপের শিরোপা জয়ের স্বাদ পায় ভারতীয়রা। ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপজয়ী ভারত আবার বিশ্বকাপ জিতে ২০১১ সালে। বিশ্বকাপের সব চেয়ে সফল দল অস্ট্রেলিয়া। তারা ছয়বার বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনালে অংশগ্রহণ করে চারবার বিশ্বকাপ ট্রফি লাভ করে। প্রথম বিশ্বকাপ জিতে ১৯৮৭ সালে। এরপর একমাত্র দল হিসেবে ১৯৯৯, ২০০৩ এবং ২০০৭ সালে পরপর তিন বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। ক্রিকেট বিশ্বের অন্য দুই সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হল পাকিস্তান (১৯৯২) এবং শ্রীলঙ্কা (১৯৯৬)।
• বিশ্বকাপে একটি বড় ঘটনা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে কপিল দেবের ১৭৫ রানের এক অতিমানবীয় ইনিংস। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, ১৯৮৩ সালের ওই ম্যাচ টিভিতে সরাসরি দেখানো হয়নি, এমনকি কোন চ্যানেলের জন্য রেকর্ড করা হয়নি। কারণ সে সময় বিবিসি’র ক্যামেরাম্যানরা ধর্মঘট পালন করছিলেন।
• ১৯৮৩ সালে ভারত যে প্রথম বিশ্বকাপ জয় করেছিল, সেই ‘প্রুডেন্সিয়াল কাপ ট্রফি’টি ভারতীয় ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই)-এর কেন্দ্রীয় দফতরে ১৯৯৯ সালে হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল শিবসেনার উগ্র আচরণে ভেঙে গিয়েছিল।
• ১৯৯৬ সালে বিশ্বকাপের ঘটনা। কেনিয়া ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার ম্যাচের মাঝে হঠাৎই দেখা যায় পাকিস্তানি আম্পায়ার খিজির হায়াত মাঠ থেকে দৌড়ে পালাচ্ছেন! বিষয়টি বোঝার জন্য দর্শকরা যখন ভাবনাশঙ্কুল, তখনই দেখা যায় নতুন টিভি আম্পায়ার ফরিদ মালিথ আরো বেশি তাড়াহুড়ো করে মাঠে প্রবেশ করছেন। কাহিনী কী? কেন এই আম্পায়ার পরিবর্তন বা আম্পায়ারের ভোঁ দৌড়। পরে জানা যায় পেটের গণ্ডগোলের কারণে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে খেলার মাঝপথেই দৌড় দিতে হয়েছিলো তাকে।
• বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ষষ্ঠ আররে (১৯৯৬) অস্ট্রেলিয়া এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ নিরাপত্তাজনিত কারণে গ্রুপ ম্যাচে অংশ নিতে শ্রীলংকা যেতে অপারগতা জানায়। ফলে ওই দুই ম্যাচের পয়েন্ট শ্রীলংকার পক্ষে যায়। একই কারণে তারা সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে জয় পেয়ে টিকিট কাটে ফাইনালের।
• ভিভ রিচার্ডস একমাত্র খেলোয়াড়, যিনি ক্রিকেট, ফুটবল দুই বিশ্বকাপে খেলেছেন। অ্যান্টিগার হয়ে ফুটবল এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ক্রিকেট বিশ্বকাপে খেলেছেন তিনি।
• বিশ্বসেরাদের এই প্রতিযোগিতার মঞ্চে বাবা-ছেলের অংশগ্রহণের মতো বিরল ইতিহাসও রয়েছে। বিশ্বকাপের গত ১০ আসরে বাবা ও ছেলের বিশ্বকাপ খেলার মতো ঘটনা ঘটেছিল মাত্র তিনবার। ডন প্রিঙ্গল-ডেরেক প্রিঙ্গল, ল্যান্স কেয়ার্নস-ক্রিস কেয়ার্নসের পর যোগ হয়েছে ক্রিস ব্রড- স্টুয়ার্ট ব্রড। এবারের বিশ্বকাপে বাবা-ছেলের আরও তিন জুটি দেখতে পাবে ক্রিকেটবিশ্ব। ভারতের স্টুয়ার্ট বিনি, অস্ট্রেলিয়ার মিচেল মার্শ এবং নিউজিল্যান্ডের টম লাথামের বিশ্বকাপ অভিষেক হতে যাচ্ছে। তাদের বাবা- রজার বিনি, জিওফ মার্শ এবং রড লাথাম বিশ্বকাপ খেলেছেন। ভারতের হয়ে রজার বিনি ১৯৮৩ এবং ১৯৮৭ বিশ্বকাপে খেলেছেন, জিওফ মার্শ ‘৮৭ ও ‘৯২-র বিশ্বকাপে খেলেছেন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে, আর কিউই জার্সিতে রড লাথাম খেলেছেন ১৯৯২ বিশ্বকাপে।
• দুই জন ক্রিকেটার দুটি দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলার বিরল রেকর্ডের মালিক। প্রথমজন হলেন কেপলার ওয়েসেল্স। তিনি ১৯৮৩ তে খেলেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে। আর দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ৯২ সালে। অ্যান্ডারসন কামিন্স দ্বিতীয় খেলোয়াড়, যিনি প্রথমবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে ১৯৯২ সালে এবং দ্বিতীয়বার কানাডার হয়ে ২০০৭ সালে। আরও একজন এই তালিকায় অল্পের জন্য নাম লেখাতে পারেননি। কারণ ১৯৯২, ১৯৯৬ ও ১৯৯৯-এ ইংল্যান্ডের হয়ে খেলা গ্রায়েম হিক এর আগে জিম্বাবুয়ে দলের হয়ে ১৯৮৩ বিশ্বকাপে নাম লিখিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি কোন ম্যাচ খেলতে পারেননি।
• বিশ্বকাপের আসরে সর্বোচ্চ ২ হাজার ২৭৮ রানের নজির ভারতের শচীন টেন্ডুলকারের। ৪৫ ম্যাচে এই রান সংগ্রহ করেন লিটল মাস্টার। ক্রিকেট যজ্ঞে সর্বোচ্চ ছয় সেঞ্চুরিও ভারতীয় ব্যাটিং লিজেন্টের। তাছাড়া এক আসরে সর্বোচ্চ ৬৭৩ রানও তাঁর। ২০০৩ সালে ওই রেকর্ড গড়েন তিনি।
• বিশ্বকাপে ৩৯ ম্যাচে সর্বোচ্চ ৭১ উইকেট গ্লেন ম্যাকগ্রার। ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে মাত্র ১৫ রানের বিনিময়ে ৭ উইকেট দখল করেছিলেন অসি পেস কিংবদন্তি।
• বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলার কীর্তি দক্ষিণ আফ্রিকার গ্যারি কারস্টেনের। ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ১৮৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান।
• বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ডিসমিসাল অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডাম গিলক্রিস্টের। আর নন উইকেটকিপার হিসেবে সবচেয়ে বেশি ক্যাচ নেয়ার নজির রিকি পন্টিংয়ের।
• দক্ষিণ আফ্রিকার হারশেল গিবস একমাত্র ব্যাটসম্যান যিনি এক ওভারে ছয়টি ছক্কা মেরেছেন। ২০০৭ বিশ্বকাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে তিনি এই বিরল রেকর্ড গড়েন।
এই কাপে, চা-য়ের কাপের ঝড়:
• ২০১৫ বিশ্বকাপের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে মেলবোর্নের এমসিজিতে। ইংল্যান্ডের লর্ডসের পর পৃথিবীর দ্বিতীয় ক্রিকেট ভেন্যু হিসেবে দুটি ফাইনাল আয়োজনের কীর্তি দেখাবে অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ভেন্যুটি।
• নিউজিল্যান্ডে একটি কোয়ার্টার ফাইনাল ও একটি সেমিফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে। সেজন্য অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে না খেলেই ফাইনালে ওঠার সুযোগ আছে ব্লাক ক্যাপসদের।
• অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের এই বিশ্বকাপের আসরে অস্ট্রেলিয়া কিংবা ভারত বিশ্বকাপ শিরোপা জিতলে সৃষ্টি হবে অনন্য একটি রেকর্ড। বাবা-ছেলে জুটি প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ গ্রহণ করতে পারবেন। কেননা স্টুয়ার্ট বিনির বাবা রজার বিনি ছিলেন ৮৩-র বিশ্বকাপ জয়ী ভারতের সদস্য। আর অসি তারকা মিচেল মার্শের বাবা জিওফ মার্শ ছিলেন ৮৭-র বিশ্বকাপ জয়ী অস্ট্রেলিয়া দলের সদস্য। তবে জিওফ মার্শের কোচ হিসেবেও বিশ্বকাপ জয়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে। ১৯৯৯ সালে তার কোচিংয়েই বিশ্বকাপের দ্বিতীয় শিরোপা জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া।
• হিট উইকেট সব সময়ই বেদনার চেয়ে উপহার দেয় ক্রিকেট কমেডির। গত বিশ্বকাপে হিট উইকেটের দেখা না মিললেও এবারের বিশ্বকাপ দেখলো হিট উইকেটের মতো দুর্লভ ঘটনা। বিশ্বকাপে অষ্টম হিট উইকেট উপহার দিয়েছেন জিম্বাবুয়ে ওপেনার রেজিস চাকাভা। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ব্যাট করার সময় স্পিনার মোহাম্মদ তৌকিরের স্পিনে খেলতে গিয়েই হিট ‌‌‌উইকেট হন চাকাভা। মজার বিষয় হলো সর্বশেষ ২০০৭ বিশ্বকাপের হিট উইকেট উপহার দেওয়া ব্যাটসম্যানও ছিলেন জিম্বাবুইয়ান। সেবার হিট উইকেট হয়েছিলেন ভুসি সিবান্দা। বিশ্বকাপে এরকম ঘটনা দুইবার ঘটিয়েছেন কেনিয়ার মরিস ওদুম্বে।
বিশ্বকাপে বিস্ময়কর হার: অনিশ্চিতের খেলা বলে পরিচিত ক্রিকেটে প্রতিনিয়ত ঘটে যায় নান অঘটন। শেষ মুহূর্তে ঘটে যায় নাটকীয় পরিবর্তন। সেরাদের আসর বিশ্বকাপেও ঘটেছে এমন অনেক ঘটনা। হেবিওয়েট দলগুলো নাকানি চুবানি খেয়েছে আন্ডারডগ দলের কাছে। প্রথম ও চতুর্থ বিশ্বকাপ বাদে প্রায় প্রতিটি বিশ্বকাপে ‘বড়’ আর ‘বুড়’ দলগুলোর একটি অথবা একাধিক ‘অভিজাত’ দলকে নিতে হয়েছে ‘ছোট’ কিংবা ‘নবীন’ দলের কাছে পরা হয়ের স্বাদ।
দ্বিতীয় বিশ্বকাপ (১৯৭৯): এই টুর্নামেন্টে আন্ডারডগ শ্রীলঙ্কা হারায় ভারতকে। তখনো টেস্ট স্ট্যাটাস লাভ করেনি শ্রীলঙ্কা। ১৬ জুনের সেই ম্যাচে ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ৬০ ওভারের ম্যাচে লঙ্কানরা সংগ্রহ করে পাঁচ উইকেটে ২৩৮ রান। এর জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৫৪.১ ওভারে ১৯১ রানেই অলআউট হয়ে যায় ভারত। ফলে শ্রীলঙ্কা ৪৭ রানে জয়ী হয়।
তৃতীয় বিশ্বকাপ (১৯৮৩): ৯ জুন ট্রেন্টব্রিজে নিজেদের প্রথম ওডিআই ইন্টারন্যাশনাল ম্যাচ খেলতে নেমেই অস্ট্রেলিয়াকে কাঁপিয়ে দেয় জিম্বাবুয়ে। প্রথমে ব্যাট করে ৬০ ওভারে ৬ উইকেটে ২৩৯ রান করে জিম্বাবুয়ে। জবাবে ভারতের বর্তমান কোচ ডানকান ফ্লেচারের উড়ন্ত পারফরম্যান্সে অ্যালান বোর্ডার, রডনি মার্শ ও ডেনিস লিলির অস্ট্রেলিয়া ৬০ ওভার খেলে ৭ উইকেটে করে ২২৬ রান। ফলে ১৩ রানে যায় অস্ট্রেলিয়া।
চতুর্থ বিশ্বকাপ (১৯৮৭): ভারত-পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপটা অঘটনের ভরপুর ছিল। স্বাগতিক দলদ্বয় সেমি-ফাইনালে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয়। ভারতর ছিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন। আর আরেক সাবেক চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ গ্রুপ পর্বেই বিদায় নেয়।
পঞ্চম বিশ্বকাপ (১৯৯২): তখনো আইসিসির সহযোগী দেশ জিম্বাবুয়ে। কিন্তু বিশ্বকাপ খেলতে এসে তারা আবার দৈত্য-বধ করে। ১৮ মার্চ অ্যালবুরির লো স্কোরিং ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ৯ রানে হারায় আফ্রিকার দেশটি। জিম্বাবুয়ের ৪৬.১ ওভারে ১৩৪ রান করে। জ্ববাবে ৪৯.১ ওভারে ১২৫ রানে থামে ইংলিশরা।
ষষ্ঠ বিশ্বকাপ (১৯৯৬): নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপে বিশাল বড় এক অঘটনের জন্ম দেয় কেনিয়া। ২৯ ফেব্রুয়ারি পুনেতে প্রথমে ব্যাট করে ৪৯.৩ ওভারে স্কোরবোর্ডে মাত্র ১৬৬ রান তোলে তারা। এর জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে ব্রায়ান লারা, রিচি রিচার্ডসন, শিবনারায়ণ চন্দরপলদের ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩৫.২ ওভারে মাত্র ৯৩ রানেই গুটিয়ে যায়। ৭৩ রানের বড় জয় পায় মরিচ ওদুম্বেরা।
সপ্তম বিশ্বকাপ (১৯৯৯):৩১ মে নর্থদাম্পটনে প্রথম বিশ্বকাপেই বাংলাদেশে বাজিমাত করে দেয়।  সেবার প্রথমে ব্যাট করে টাইগাররা নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২২৩ রান সংগ্রহ করে। এর জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৪৪ ওভার তিন বলে ১৬১ রানেই গুটিয়ে যায় ক্রিকেটের অঅনুমেয় শক্তিরা। পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ৬২ রানের জয় ক্রিকেট বিশ্বের সমীকরণকে ওলটপালট করে দেয়। আর বাংলাদেশের জন্য টেস্ট ক্রিকেটের দরজা খুলে দেয়।
অষ্টম বিশ্বকাপ (২০০১): এই বিশ্বকাপকে অঘটনের বিশ্বকাপ বললে কম বলা হবে না। প্রতিযোগিতার অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ও সহ-স্বাগতিক দেশ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ইংল্যান্ড প্রথম পর্বেই বিদায় নেয়। জিম্বাবুয়ে সুপার সিক্স পর্বে খেলে। অন্যদিকে টেস্টখেলুড়ে দেশের বাইরে কেনিয়া প্রতিযোগিতার সেমি-ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়। কেনিয়ার কাছে শ্রীলঙ্কা ৫৩ রানে, বাংলাদেশ ৩২ রানে ও জিম্বাবুয়ে ৭ উইকেটে হারে। এই বিশ্বকাপের আরেকটি অঘটন ছিল কানাডার কাছে বাংলাদেশের ৬০ রানের পরা জয়।
নবম বিশ্বকাপ (২০০৭):আয়ারল্যান্ডের কাছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের হার। ১৭ মার্চ কিংস্টনে পাকিস্তান ৪৫.৪ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৩২ করে। জবারে আয়ারল্যান্ড ৪১.৪ ওভারে ৭ উইকেটে ১৩৩ করে নেয়। ফলে আয়ারল্যান্ড ৩ উইকেটে ম্যাচটি জিতে নেয়। আয়ারল্যান্ডের দ্বিতীয় অঘটনের শিকার বাংলাদেশ। ১৫ এপ্রিল ব্রিজটাউনে আয়ারল্যান্ড ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৪৩ রান করে। জবাবে টাইগাররা সব উইকেট হারিয়ে ৪১.২ ওভারে ১৬৯ থেমে যায়। আয়ারল্যান্ড ৭৪ রামে ম্যাচটি জিতে নেয়।
দশম বিশ্বকাপ (২০১১): এই বিশ্বকাপেও অঘটনের জন্ম দেয় আয়ারল্যান্ড। আর তাঁদের শিকার হয় ইংল্যান্ড।  ২ মার্চ বেঙ্গালুরুতে ইংল্যান্ড ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩২৭ রান করে জবাবে আয়ারল্যান্ড ৪৯.১ ওভারে ৩ উইকেটে হাতে রেখে ৩২৯ রান করে নেয়।
একাদশতম বিশ্বকাপ (২০১৫): এই বিশ্বকাপেও জায়ান্ট কিলার আইরিশদের হাতে হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের পতন। ১৬ ফেব্রুয়ারি নেলসনের এ ম্যাচে ৩০৪ রান করেও স্বস্তিতে ছিল না ক্যারিবীয়রা। ২৫ বল বাকি থাকতে ৪ উইকেট হাতে রেখে আয়ারল্যান্ড ম্যাচ জিতে নেয়।

Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *