দক্ষিণ ভারতের চলচ্চিত্র

দক্ষিণ ভারতের চলচ্চিত্র

দক্ষিণ ভারতের চলচ্চিত্র

সাউথ ইন্ডিয়ান ফিল্ম চেম্বার অফ কমার্স

দক্ষিণ ভারতের চলচ্চিত্র কথাটি দক্ষিণ ভারতের পাঁচটি ভিন্ন চলচ্চিত্র শিল্প, যথা- কন্নড়, মালয়ালম, তামিল, তেলুগু এবং তুলু চলচ্চিত্র শিল্পকে একত্রে বোঝাতে ব্যবহার করা হয়। এই পাঁচটি চলচ্চিত্র শিল্পের কেন্দ্র যথাক্রমে বেঙ্গালুরু, কোচি, চেন্নাই, হায়দ্রাবাদ ও ম্যাঙ্গালোরে অবস্থিত। এই চলচ্চিত্র শিল্পটি সাউথ ইন্ডিয়ান ফিল্ম চেম্বার অফ কমার্স দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। তেলুগু ও তামিল চলচ্চিত্র মিলিত ভাবে দক্ষিণ ভারতের চলচ্চিত্র শিল্প রাজস্বের ৩৬% প্রতিনিধিত্ব করে।

স্যান্ডেলউড

কর্ণাটকের চলচ্চিত্র ভারতীয় রাজ্য কর্ণাটকের কন্নড়ভাষী চলচ্চিত্র শিল্প। এই ইন্ড্রিস্ট্রি সাধারণভাবে স্যান্ডেলউড নামে পরিচিত। কন্নড় ছাড়াও তুলু ও কোঙ্কণীতে কিছু কিছু চলচ্চিত্র এই রাজ্যে নির্মিত হয়।

ব্লকবাস্টার সিনেমা কেজএফ কন্নড় ভাষায় মুক্তি পেয়েছে এবং তেলেগু, তামিল, মালায়লাম এবং হিন্দি ভাষায় ডাব করা হয়েছে। এটি সিনেমাটি রেকর্ড করে সর্বকালের সর্বোচ্চ আয়কারী কন্নড় চলচ্চিত্র হয়ে উঠেছে এবং একাধিক ভারতীয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছে।

মলিউড

কেরলের চলচ্চিত্র (বা মালয়ালম চলচ্চিত্র) বলতে বোঝায় ভারতের কেরল রাজ্যে নির্মিত মালয়ালমভাষী চলচ্চিত্র। অনেকে একে বলেন মলিউড। মালা্যালাম ইন্ডাস্ট্রির গোঁড়া পত্তন হয় বেশ আগেই, প্রায় ১৯২০ সালে। কিন্তু পরিচিতি পায় ১৯৪০ সালের দিকে। এই মুভি ইন্ডাস্ট্রি কেরালায় অবস্থিত। যদিও মাঝে এটি চেন্নাই এ স্থানান্তর করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে আবার কেরালায় ফিরিয়ে আনা হয়।

শিল্পগুণের বিচারে কেরলের চলচ্চিত্র ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে গুরুত্বপূর্ণ স্থানের অধিকারী। সাধারণত মালয়ালম চলচ্চিত্রে সামাজিক ও পরিচিত ইস্যুগুলি প্রতিফলিত হয়। এই চলচ্চিত্র বলিউডের তুলনায় অনেক বেশি বাস্তববোধসম্পন্ন। ভারতে প্রযোজিত প্রথম থ্রিডি চলচ্চিত্র, মাই ডিয়ার কুট্টিচাতান মালয়ালম ভাষায় নির্মিত হয়। এই ভাষায় নির্মিত প্রথম সিনেমাস্কোপ চলচ্চিত্র হল তাচোলি অম্বু। মালয়ালম চলচ্চিত্র কেরলের অধিবাসীদের বিনোদনের সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় মাধ্যম।

হিন্দি অনেক মুভি মালায়ালাম মুভির রিমেক। এই তালিকায় গারাম মাসালা, বিল্লু, কিউ কি, ভুল ভুলাইয়া, হেরা ফেরি কিংবা বডিগার্ড-সহ অনেক ছবিই আছে।

কলিউড

তামিল চলচ্চিত্র (বা তামিলনাড়ুর চলচ্চিত্র, তামিল চলচ্চিত্র শিল্প বা চেন্নাই চলচ্চিত্র শিল্প নামেও পরিচিত) দক্ষিণ ভারতীয় রাজ্য তামিলনাড়ুর চেন্নাই-ভিত্তিক তামিলভাষী চলচ্চিত্র নির্মাণশিল্প। এই শিল্পের মূল কেন্দ্র চেন্নাইয়ের কোডামবক্কম অঞ্চল। এই কারণে সাধারণভাবে এই চলচ্চিত্র শিল্পকে কলিউড নামে অভিহিত করা হয়।

ভারতের চলচ্চিত্র শিল্পে তামিলনাড়ুর সিনেমার বিশেষ অবদান রয়েছে। বিংশ শতাব্দীতে তামিল ছাড়াও অন্যান্য চলচ্চিত্র শিল্পের কেন্দ্র হয়ে দাঁড়ায় চেন্নাই। এগুলির মধ্যে শ্রীলঙ্কার চলচ্চিত্রও অন্যতম। আবার তামিলভাষী চলচ্চিত্র নির্মিত হতে থাকে অন্য দেশেও।

তামিল চলচ্চিত্র শ্রীলঙ্কা, সিঙ্গাপুর, কোরিয়া, মালয়েশিয়া, মরিশাস, দক্ষিণ আফ্রিকা, পশ্চিম ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা ও অন্যান্য তামিল জাতি অধ্যুষিত পৃথিবীর নানা অংশে প্রদর্শিত হয়ে থাকে।

টলিউড

তেলুগু চলচ্চিত্র বা অন্ধ্রপ্রদেশের চলচ্চিত্র ভারতের তেলুগু চলচ্চিত্র শিল্প। বাৎসরিক চলচ্চিত্র নির্মাণের সংখ্যা অনুযায়ী এই চলচ্চিত্র শিল্প পৃথিবীতে বৃহত্তম এবং পরিকাঠামোর দিক থেকে দ্বিতীয় বৃহত্তম।ভারতে সর্বাধিক সংখ্যক সিনেমাহল অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যেই অবস্থিত। হায়দ্রাবাদ শহরের আইম্যাক্স একাধিক বিশ্বরেকর্ডের অধিকারী।

কোস্টালউড

তুলু দ্রাবিড়ীয় ভাষা পরিবারের একটি ভাষা। এই ভাষায় দুই মিলিয়ন মানুষ কথা বলে, প্রধানত ভারতের কর্ণাটক প্রদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশ এবং উত্তর কেরালার তুলু নাড়ু নামে পরিচিত সামান্য কিছু অংশের মানুষ এই ভাষায় কথা বলে। তুলু ভাষায় কথা বলা জনগোষ্ঠীকে তুলুভা বা তুলু জনগোষ্ঠী বলা হয়।

ভারতীয় সিনেমার একটি অংশ টুলু সিনেমা, ‘কোস্টালউড‘ নামেও পরিচিত। টুলু চলচ্চিত্র শিল্প বছরে পাঁচ থেকে সাতটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করে।

দক্ষিণে সিনেমা থেকে রাজনীতি

রাজনীতির অন্দরে দক্ষিণ ভারতীয় তারকাদের দাপট বহু দিনের। এম জি রামাচন্দ্রন থেকে জয়ললিতা, চলচ্চিত্র জগতে যেমন, ভোটের রাজনীতিতেও তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। রিল লাইফ থেকে রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন এমন তারকাদের সম্পর্কে রইলো

নন্দমুরি তারকা রামারাও (এনটিআর)

তাকে ভারতীয় চলচ্চিত্রে অন্যতম শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসাবে ব্যপকভাবে গণ্য করা হয়। তিনি ১৯৮২ সালে হায়দরাবাদে তেলুগু দেশম পার্টির প্রতিষ্ঠা করেন। একাধারে অভিনেতা, প্রযোজক, চিত্রনির্মাতা এবং রাজনীতিক এনটিআর তিন বার অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসেছেন।

এম জি রামচন্দ্রন

১৯৭৭ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত দশ বছর তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন প্রখ্যাত তামিল অভিনেতা এবং চিত্রনির্মাতা রামচন্দ্রন ওরফে এমজিআর। সাধারণের কাছে তিনি ‘মাক্কাল তিলাগাম’(জনগণের রাজা) নামে জনপ্রিয় ছিলেন। ১৯৫৩ সালে ডিএমকের সদস্যপদ গ্রহণ করেছিলেন এমজিআর। ডিএমকের প্রতিষ্ঠাতা আন্নাদুরাইয়ের মৃত্যুর পর ডিএমকে ছেড়ে দেন। তখন ডিএমকে-র নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন করুণানিধি। বিরোধী দল হিসেবে এমজিআর গঠন করেন সর্বভারতীয় আন্না দ্রাবিড় মুনেত্র কড়গম (এআইএডিএমকে)।

জয়রাম জয়ললিতা

প্রবাদপ্রতিম তামিল অভিনেতা এম জি রামচন্দ্রনের হাত ধরে তামিল রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ জয়ললিতার। সাধারণের কাছে তিনি ‘আম্মা’নামেই জনপ্রিয়। ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত রাজ্যসভার সাংসদ ছিলেন। এমজিআরের মৃত্যুর পর ১৯৯১ সালে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী হন ‘আম্মা’। মোট তিনবার মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। ২০১৬ সালে মৃত্যু হয় তাঁর।

চিরঞ্জীবী

তিনি একাধারে সুপারস্টার এবং রাজনীতিক। জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনেতা ২০০৮ সালে সক্রিয় ভাবে রাজনীতিতে যোগ দেন। গঠন করেছিলেন নিজের আলাদা দল ‘প্রজা রাজ্যম পার্টি’। ২০১২ সালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হন।

পবন কল্যাণ

অভিনয় দিয়ে কেরিয়ার শুরু করলেও পরে রাজনীতিতে যোগ দেন পবন। নিজের আলাদা দলও গঠন করেছেন তিনি, যার নাম ‘জন সেনা’। ২০১৩ সালে প্রকাশিত ফোর্বসের ১০০ জন ভারতীয় সেলিব্রিটির তালিকায় ২৬ নম্বরে ছিলেন তিনি।

বিজয়কান্ত

সেলুলয়েডের জনপ্রিয়তায় ইনিও কম যান না। ২০০৫ সালে রাজনীতিতে পা রাখেন ক্যাপ্টেন বিজয়কান্ত। গঠন করেন নিজের দল ‘দেশীয় মুরপোক্কু দ্রাবিড় কাঝাগম’। ২০১৬ সালে ভোটের প্রচারে ‘থালাইভা’রজনীকান্তের বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্য ছড়ানোর অভিযোগে বিজয়কান্তের সমালোচনায় মুখর হন রজনী-ভক্তেরা। ২০১১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তিনি তামিল বিধানসভার বিরোধী দলনেতা ছিলেন।

সুরেশ গোপী

সিনেমার পর্দায় সাহসী এবং কর্তব্যনিষ্ঠ পুলিশ অফিসারের ভূমিকায় বহু বার দেখা গিয়েছে এই মালয়ালম অভিনেতাকে। বর্তমানে তিনি রাজ্যসভার মনোনীত সদস্য।

আর শরৎ কুমার

এই দক্ষিণী অভিনেতা ২০০৬ সালে ডিএমকে ছেড়ে এআইএডিএমকেতে যোগ দেন। ২০০৭ সালে ‘অল ইন্ডিয়া সামাথুভা মাক্কাল কাটচি’নামে নিজের আলাদা দল গঠন করেন তিনি।

কমল হাসন

সিনেমার পর্দায় বরাবরই দেখিয়েছেন নিজের ক্যারিশমা। কিন্তু সেই ক্যারিশমা এখনো দেখাতে পারেনি রাজনৈতিক আঙিনায়। নিজের প্রথম লড়াইয়েই হেরে গেছেন দক্ষিণী সুপারস্টার কমল হাসান। তামিলনাড়ুর বিধানসভা নির্বাচনে ভোটে দাঁড়ালেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে বিজেপির প্রার্থীর কাছে মাত্র ১৫৪০ ভোটে হেরে যান এই মহাতারকা। তাঁর দলের নাম মাক্কাল নিধি মইয়ম।

সবচেয়ে বেশি আয় করা দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্রের তালিকা

◉ বাহুবলী ২: দ্য কনক্লুশন (২০১৭) ১,৮১০ কোটি রুপি

◉ আরআরআর (২০২২) ১,০৫১ কোটি রুপি

◉ টু পয়েন্ট জিরো (২০১৮) ৬৫৫.৮১ কোটি রুপি

◉ বাহুবলী: দ্য বিগিনিং (২০১৫) ৬৫০ কোটি রুপি

◉ সাহো (২০১৯) ৪৩৩ কোটি রুপি

◉ পুষ্পা: দ্য রাইজ (২০২১) ৩৬৫ কোটি রুপি

◉ কাবালি (২০১৬) ৩০০ কোটি রুপি

◉ কেজিএফ: চ্যাপ্টার টু (২০২২) ৩০০ কোটি রুপি

◉ এন্থিরান (২০১১) ২৮৫ কোটি রুপি

◉ আলা বৈকুন্ঠপুরামলো (২০২০) ২৬২ কোটি রুপি

দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার কাছে নাস্তানাবুদ বলিউড

বিশ্বজুড়ে এক সময় ভারতের প্রতিনিধিত্ব করে এসেছে বলিউড। কিন্তু সেই প্রতাপশালী দাপট অনেক মলিন হতে বসেছে ভারতেরই আঞ্চলিক কয়েকটি সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি! অদ্ভুত শোনালেও হয়েছে তা-ই। বলিউডের বিগ বাজেট আর সুপারস্টারদের চোখ রাঙাচ্ছে তামিল, তেলেগু, কন্নড়, তুলু, মালয়ালমের মতো দক্ষিণ ভারতের ‘ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র’ ইন্ডাস্ট্রি।

দক্ষিণ চলচ্চিত্রের দাপটে শাহরুখ খান, আমির খান, সালমান খান, অক্ষয় কুমারদের সিনেমা মুক্তি দিতে ভাবতে হচ্ছে কয়েকবার। করোনা মহামারির জন্য দির্ঘ সময় বন্ধ ছিল ভারতের সিনেমা হলগুলো – এ সময় স্পষ্টই ফুটে ওঠে দক্ষিণী সিনেমার দাপটের কাছে বলিউডের অসহায়ত্ব। করোনা প্রকোপ কমে আসার পরে হলগুলো খুলতে শুরু করলে দক্ষিণের পুষ্পা, আরআরআর, কেজিএফ: চ্যাপ্টার টু’র উন্মাদনা সৃষ্টি করে, গত দুই বছরে বলিউডের কোনো সিনেমাও সে পরিমাণ আয় এবং উন্মাদনা সৃষ্টি করতে পারেনি।

বর্তমানে বলিউডের মুক্তির মিছিলে আছে অনেক সিনেমা। কিন্তু বাজেট, গল্প, স্টারকাস্ট কিংবা উন্মাদনা কোনো দিক দিয়েই কেজিএফ: চ্যাপ্টার টু কিংবা পুষ্পার মতো উন্মাদনা সৃষ্টি করা সিনেমা নেই বলিউডের হাতে। দক্ষিণী সিনেমায় এখনো দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন রজনীকান্ত, কমল হাসান, নাগার্জুন, পবন কল্যাণ, মোহনলাল, মামুত্তি কিংবা চিরঞ্জীবীরা। তাদের ছাপিয়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত ধানুশ, সুরিয়া, চিয়ান বিক্রম, থালাপতি বিজয়, রবি তেজা, বিজয় সেতুপতি, বিশাল, আল্লু অর্জুন, জুনিয়র এনটিআর, রামচরণ, মহেশ বাবু, নাগা চৈতন্য, নানি, কিচা সুদীপ, প্রভাষ, যশ, বিজয় দেবরকোন্ডা, দুলকার সালমান, পৃথ্বিরাজরা। দক্ষিণী তরুণদের খ্যাতির ভিড়েই যেন হারিয়ে যেতে বসেছেন শাহরুখ, সালমান, আমিরদের মতো সুপারস্টার।

নয়নতারা, আনুশকা শেঠি, কাজল আগরওয়াল, সাই পল্লবী, সামান্থা আক্কিনেনি, কীর্তি সুরেশ, রাশমিকা মান্দানা, রাশি খান্না, পূজা হেগড়ের মতো নায়িকারা অভিনয়ের পাশাপাশি রূপের দ্যুতি দিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করছেন। সেদিক থেকে আলোচনা থেকে হারিয়ে যেতে বসেছেন কারিনা কাপুর, ক্যাটরিনা কাইফ কিংবা আলিয়া ভাটের মতো অভিনেত্রীরা।

মূলত, গল্প বাছাইয়ে নিজস্বতা, পরিচালনা, অভিনয়, প্রযুক্তি যথোপযুক্ত ব্যবহার এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের প্রচারে বলিউড থেকে এগিয়ে গেছে দক্ষিণের চলচ্ছিত্র। একসময় দক্ষিণের সিনেমা বলতে চোখে ভাসতস অবাস্তব সব মারপিট। এখন সে অবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটেছে। চলচ্চিত্র মানে যদি হয় জীবনের প্রতিচ্ছবি তাহলে দক্ষিণের সিনেমাগুলোতেই তা বেশি দেখা যায়। সিনেমাগুলোর সিনেমাটোগ্রাফি কিংবা অসাধারণ ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকে মুগ্ধ হচ্ছে সিনেমাপ্রেমীরা। বলিউড যেখানে একের পর এক বায়োপিক ঘরানার সিনেমা দিয়ে প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে সেখানে দক্ষিণী সিনেমাগুলো গল্প ও অভিনয় দিয়ে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে সিনেমাবোদ্ধা ও দর্শকদের।

বলিউডপ্রেমীরা এখন বিব্রত হন অযৌক্তিক অ্যাকশন, বস্তাপচা গল্প, চিরাচরিত প্রেম আর চেতনার আবর্তে ঘুরপাক খাওয়ার জন্য। সুপারস্টাররাও অভিযুক্ত বিরক্তিকর অভিনয়ের দায়ে। নতুন যারা আসছেন তারাও খুব বেশি সৃজনশীলতা দেখাতে পারেননি। একজনের নাচ ভালো তো অ্যাকশন ভালো না। অ্যাকশন ভালো তো অভিনয় ভালো না।

একটা সময় ছিল যখন, দক্ষিণী তারকারা মুখিয়ে থাকতেন বলিউডে ডাক পাওয়ার জন্য। সে অবস্থাও পাল্টেছে। বলিউডের সুপারস্টারদের ভিড় করতে দেখা যাচ্ছে দক্ষিণী সিনেমায়। অন্যদিকে বলিউডের সিনেমা হিট করতে সাউথ ইন্ডিয়ার স্টারদের ডাক পড়ছে বলিউডে। শুধু তা-ই নয়, বলিউড সুপারস্টাররা রিমেক করছেন দক্ষিণী সিনেমা।

দক্ষিণের চলচ্চিত্রের সাথে সাথে এখন বলিউডের প্রতিযোগীদের মধ্যে রয়েছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম। বলিউড যদি নিজেদের উন্নতি নিশ্চিত না করে তাহলে একসময় ডাইনোসরের বিলুপ্ত হয়ে যাবে।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *