সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তিদের শীর্ষ তালিকায় নিয়মিত পরিবর্তন হচ্ছে এর সাথে যোগ হয়েছে নানা আলোচনা এবং সমালোচনা। শীর্ষ সম্পদশালীদের তালিকায় নারীরাও পিছিয়ে নেই। চলুন জেনে নেয়া যাক যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসাভিত্তিক ম্যাগাজিন ফোর্বস-এর ২০২৪ সালের ৩ মার্চ পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনী নারীর কারা এবং কিভাবে এই বিপুল সম্পদের মালিক হলেন তারা। বিস্তারিত শামস্ বিশ্বাস।
Top 10 Richest Women in the World in 2024
০১. ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট মেয়ার্স (Françoise Bettencourt Meyers) এবং পরিবার
মার্কিন সাময়িকী ফোর্বস-এর তথ্যানুযায়ী বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ নারী ধনীর তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন ফরাসি প্রসাধন সামগ্রী লরিয়েলের কর্ণধার ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট মেয়ার্স। বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের মধ্যে তার অবস্থান শীর্ষ ১৫তে। তার সম্পদের পরিমাণ ৯৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বেটেনকোর্ট মেয়ার্স এবং তার পরিবারের কাছে লরিয়েলের ৩৩ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা রয়েছে। তিনি কিন্তু স্বপ্রতিষ্ঠিত ধনী নন। লরিয়েলের প্রতিষ্ঠাতা ইউজেন শুয়েলারের নাতনি তিনি। তিনি লরিয়েলের পরিচালনা পর্ষদে যোগ দেন ১৯৯৭ সালে। তাঁর মা লিলিয়ান বেটেনকোর্টের মৃত্যুর পর ২০১৮ সাল থেকে তিনি প্রথম শীর্ষ ধনীর তালিকায় উঠে আসেন।
বেটেনকোর্ট মেয়ার্স প্যারিসে থাকেন। পারিবারিক প্রতিষ্ঠান বেটেনকোর্ট শুয়েলার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান তিনি। বৈজ্ঞানিক গবেষণা,মানবিক সাহায্য এবং সাংস্কৃতিক ও শৈল্পিক ঐতিহ্য রক্ষার মতো নানা কাজের সঙ্গে জড়িত এ সংগঠন।
ব্যবসায়ী পরিচয়ের বাইরে মেয়ার্স একজন লেখকও। তিনি গ্রিক দেবতাদের নিয়ে যেমন লিখেছেন, তেমনি বাইবেলের ওপরও ভাষ্য লিখেছেন।
০২. অ্যালিস ওয়ালটন (Alice Walton)
দ্বিতীয় শীর্ষ নারী ধনী মর্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ সুপারমার্কেট ওয়ালমার্টের প্রতিষ্ঠাতা স্যাম ওয়ালটনের একমাত্র মেয়ে অ্যালিস ওয়ালটন। তাঁর সম্পদের পরিমাণ ৭১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। কলেজ থেকে পাশ করে বেরোনোর পর বহু বছর তিনি ইকুইটি অ্যানালিস্ট ও মানি ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেছেন। তবে এখন ব্যবসার চেয়ে তিনি শিল্প সংগ্রহেই বেশি আগ্রহী। আর্ট কিউরেটর হিসেবে তিনি বিখ্যাত। ২০১১ সালে তিনি তার নিজের শহর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য আরকানসাসের বেন্টনভিলে ক্রিস্টাল ব্রিজেস মিউজিয়াম অব আমেরিকান আর্ট প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর সংগৃহীত শিল্পের মূল্য কয়েক মিলিয়ন ডলার। তাঁর ভাই রব ও জিম ওয়ালটনও উৎসাহী শিল্প সংগ্রাহক। বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের মধ্যে তার অবস্থান শীর্ষ ২১তে।
০৩. জুলিয়া কোচ (Julia Koch) এবং পরিবার
নারী শীর্ষ ধনীর তালিকায় ৬১ দশমিক চার বিলিয়ন মার্কিন ডলার নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছেন জুলিয়া কোচ এবং পরিবার। যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত কোচ ইন্ড্রাস্টিজের ৪২ শতাংশ শেয়ারের মালিক জুলিয়া এবং তার ৩ সন্তান। স্বামী ডেভিড কোচের মৃত্যুর পর শীর্ষ ধনী নারীর তালিকায় তিনি উঠে আসেন। বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের মধ্যে তার অবস্থান শীর্ষ ২৪এ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য আইওয়ার মেয়ে জুলিয়া ১৯৮০ এর দশকে নিউ ইয়র্ক সিটিতে চলে আসেন এবং ফ্যাশন ডিজাইনার অ্যাডলফোর সহকারী হিসাবে কাজ শুরু করেন। সে সময় তিনি ফার্স্ট লেডি ন্যান্সি রেগান সহ অনেক হাই-প্রোফাইল ক্লায়েন্টের সাথে কাজ করেছেন। ১৯৯১ সালে ডেভিড কোচের সাথে দেখা হয়। তারা ছয় মাসের মধ্যে তারা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এবং ১৯৯৬ সালে তারা বিয়ে করে।
জুলিয়া কোচ নিউইয়র্ক সিটিতে অবস্থিত মেমোরিয়াল স্লোয়ান কেটারিং ক্যান্সার সেন্টারের ডেভিড এইচ কোচ সেন্টার ফর ক্যান্সার কেয়ার-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারওম্যান। জুলিয়া কোচ শিক্ষা, সংস্কৃতি, মেডিক্যাল রিসার্চ ইত্যাদি মানসেবামূলক কাজের সঙ্গে জড়িত।
০৪. জ্যাকুলিন মার্স (Jacqueline Mars)
নারীদের শীর্ষ ধনীর তালিকায় ৩৮ দশমিক সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলার নিয়ে চতুর্থ স্থানে আছেন বিশ্বের বৃহত্তম ক্যান্ডি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান মার্সের এক তৃতীয়াংশের মালিক জ্যাকুলিন মার্স। তার দাদা ফ্র্যাংকলিন ক্লারেন্স মার্স ১৯১১ সালে এই কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে পোষা প্রাণীর জন্যে যারা খাবার তৈরি করে তাদের মধ্যে অন্যতম বৃহৎ এই মার্স কোম্পানি।
জ্যাকুলিন মার্স পরিবারের এই ব্যবসায় তিনি কাজ করেছেন প্রায় দুই দষকের বেশি সময় ধরে। ২০১৬ সাল পর্যন্ত তিনি বোর্ডের সদস্যও ছিলেন। এর বাইরেও জ্যাকুলিন একজন দক্ষ অশ্বারোহী এবং বহু বছর ধরেই তিনি ঘোড়ার প্রজনন ও ঘোড়দৌড়ের সাথে যুক্ত আছেন।
বর্তমানে তিনি পরিচিত অত্যন্ত দানশীল এক ব্যক্তি হিসেবে। বিশেষ করে প্রাণী কল্যাণ ও পরিবেশ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে তার অবদান চোখে পড়ার মতো। ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড ও স্মিথসোনিয়ান ন্যাশনাল জু-সহ বেশকিছু সংস্থাকে তিনি নানাভাবে সাহায্য করে চলেছেন। ওয়াশিংটন ন্যাশনাল অপেরা, ন্যাশনাল আর্কাইভসহ আরো কিছু সংস্থার বোর্ড সদস্য তিনি।
বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের মধ্যে জ্যাকুলিন মার্সএর অবস্থান শীর্ষ ৩৫-এ।
০৫. ম্যাকেনজি স্কট (MacKenzie Scott)
পঞ্চম শীর্ষ নারী ধনী সমাজসেবী খ্যাত লেখক ম্যাকেনজি স্কট। মানবকল্যাণমূলক কাজে ইতোমধ্যেই বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার দান করেছেন তিনি। তিনি অ্যামাজন প্রধান জেফ বেজোস-এর সাবেক স্ত্রী। তাঁর সম্পদের পরিমাণ ৩৬ দশমিক এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের মধ্যে তার অবস্থান শীর্ষ ৪৩এ। ২০১৯ সালের মাঝামাঝিতে জেফ বেজোস এবং ম্যাকেঞ্জি দীর্ঘ ২৫ বছরের বৈবাহিক সম্পর্কের ইতি টানেন। জেফ বেজোসের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের আপস-রফা হিসেবে ম্যাকেনজি স্কট অ্যামাজনের ৪ শতাংশ শেয়ারের মালিক হন। হেজ ফান্ড ডি. ই–তে কাজ করার সময় জেভ বেজোস ও ম্যাকেনজির পরিচয়। ১৯৯৩ সালে বিয়ে করেন তারা। এর এক বছর পরেই জেফ আমাজন চালু করেন। আমাজনে যারা প্রথম চাকরি শুরু করেন তাদের একজন ছিলেন ম্যাকেঞ্জি। তিনি যোগ দিয়েছিলেন একজন অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে।
ম্যাকেনজি বহুল আলোচিত দুটি উপন্যাসের লেখিকা। তিনি লেখক টনি মরিসনের ছাত্রী ছিলেন এবং তাঁর জন্য গবেষণা সহায়ক হিসাবে কাজ করেছিলেন।
৬. মিরিয়াম অ্যাডেলসন (Miriam Adelson) এবং পরিবার
ষষ্ঠ শীর্ষ নারী ধনী মার্কিন চিকিৎসক ও মানবসেবী মিরিয়াম। ২০২১ সালে স্বামী বিলিয়নিয়ার ক্যাসিনো ব্যবসায়ী শেলডন অ্যাডেলসনের মৃত্যুর পরে তিনি শীর্ষ ধনীদের দালিকায় আসেন। তিনি এখন নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ-তালিকাভুক্ত ক্যসিনো সাম্রাজ্যের অর্ধেকেরও বেশির মালিক, যার সিঙ্গাপুর এবং ম্যাকাওতে ক্যাসিনো রয়েছে। তার সম্পদের পরিমাণ ৩৪ দশমিক আট বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্বের শীর্ষ ধনিদের তালিকায় তিনি আছেন ৪৫ নম্বরে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটির মেগাডোনার হিসাবে, মিরিয়াম এবং শেলডন অ্যাডেলসন ২০২০ সালে রিপাবলিকান পার্টির প্রচারাভিযান এবং রাজনৈতিক অ্যাকশন কমিটিতে ১৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার চাদা দিয়েছেন।
প্রয়াত স্বামীর প্রতিষ্ঠিত অ্যাডেলসন ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে তারা দুজনেই নানা মানবহিতৈষী কাজে যুক্ত ছিলেন। মেডিক্যাল গবেষণা এবং শিক্ষামূলক নানা কাজে অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছেন তারা।
৭. সাবিত্রী জিন্দাল (Savitri Jindal) এবং পরিবার
সপ্তম শীর্ষ নারী ধনী বিশিষ্ট ভারতীয় ব্যবসায়ী এবং রাজনীতিবিদ সাবিত্রী দেবী জিন্দালের জন্ম ভারতের আসামের তিনসুকিয়া জেলায়। ১৯৭০ সালে তিনি ওম প্রকাশ জিন্দালিনকে বিয়ে করেন, যিনি জিন্দাল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা। সাবিত্রী বর্তমানে জিন্দাল ষ্টীল এন্ড পাওয়ার লিমিটেডের এমেরিটাস চেয়ারপার্সন।
সাবিত্রী জিন্দাল হরিয়ানার হিসার থেকে নির্বাচিত হরিয়ানা বিধানসভার সদস্য ছিলেন। তিনি ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত হন। ২০০৫ সালে তার স্বামী ওম প্রকাশ জিন্দাল হেলিকপ্টার দূর্ঘটনায় মারা গেলে তিনি জিন্দাল গ্রুপের চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব নেন।
তিনি কোম্পানীর দায়িত্ব নেয়ার পর কোম্পানীর আয় ৪ গুন বৃদ্ধি পায়। ১৯৫২ সালে সাবিত্রী দেবীর স্বামী ওম প্রকাশ জিন্দাল ও.পি জিন্দাল গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন, যিনি একজন প্রকৌশলী ছিলেন। পরবর্তীতে এটি ইস্পাত, শক্তি, খনির, তেল ও গ্যাস উৎপাদন শুরু করে। কোম্পানীর এই চারটি খাত তার চার পুত্র পৃথিভিরাজ, সজ্জন, রতন এবং নাভেন জিন্দাল কর্তৃক পরিচালিত হয়। জিন্দাল গ্রুপ ভারতের ৩য় শীর্ষ ইস্পাত উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান।
সাবিত্রী দেবী ভারতের সবচেয়ে ধনী নারী এবং এবং বিশ্বর র্শীর্ষ ধনীদের মধ্যতার অবস্খান ৫০এ।
সাবিত্রী দেবী ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সদস্য। ২০০৫ সালে জিন্দাল হিসার সংসদীয় আসন থেকে হরিয়ানা বিধানসভায় নির্বাচিত হন, এই আসনে তার স্বামী ওম প্রকাশ জিন্দাল প্রতিনিধিত্ব করেন। ২০০৯ সালে তিনি পুনরায় নির্বাচিত হয়ে ২০১৩ সালের ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত রাজ্যসরকারের মন্ত্রী ছিলেন।
০৮. জিনা রাইনহার্ট (Gina Rinehart)
নারীদের শীর্ষ ধনীর তালিকায় অষ্টম স্থানে আছেন অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষ ধনী জিনা রাইনহার্ট। তার মোট সম্পদের পরিমাণ ৩০ দশমিক তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের মধ্যে তার অবস্থান শীর্ষ ৫৩তে। হ্যানকক প্রসপেকটিং গ্রুপের মালিক এবং চেয়ারম্যান জিনা। জিনা লৌহ মানবী হিসেবে পরিচিত। ১৯৯২ সালে জিনা তার পিতা লৌহ খনির ধনাঢ্য ব্যবসায়ী ল্যাং হ্যানককের কাছ থেকে এই বিশাল সম্পক্তি উত্তরসূরি পেয়েছিলেন। প্রায় এক দশক সৎ মা ও তিন ভাইবোনদের সঙ্গে বিভিন্ন আইনি লড়াইয়ে জর্জরিত ছিলেন। তিনি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ সংস্থা হ্যানকক প্রসপেক্টিং পুনর্নির্মাণ করেন।
পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় প্রাকৃতিক সম্পদ উর্বর বিপুল পরিমাণ জমি ক্রয় করে তিনি সেই সম্পদকে কয়েকশগুণ বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছেন। লৌহ খনি থেকে ব্যবসার পরিধি এখন স্বর্ণ খনি পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করেছে।
জিনা রাইনহার্টের সব থেকে বেশি আয় হয় রিনো টিন্টের সঙ্গে যৌথ মালিকানার প্রতিষ্ঠান হোপ ডাউন্স থেকে। সেই সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার বৃহত্তম গবাদি পশুর উৎপাদক প্রতিষ্ঠানটিও তাঁর।
৯. অ্যাবিগাইল জনসন (Abigail Johnson)
২০১৪ সাল থেকে ফিডেলিটি ইনভেস্টমেন্টস এর সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন অ্যাবিগাইল জনসন। তার দাদা দ্বিতীয় এডওয়ার্ড সি. জনসন এই বোস্টনভিত্তিক মিউচুয়াল ফান্ড জায়ান্ট প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। অ্যাবিগাইল এ প্রতিষ্ঠানটির ২৪ দশমিক ৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক, যার পরিচালিত সম্পদে তিন দশমিক সাত ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার রয়েছে। অ্যাবিগাইল জনসন ক্রিপ্টোকারেন্সি গ্রহণ করেছে এবং, ২০১৮ সালে, ফিডেলিটি একটি প্ল্যাটফর্ম চালু করেছে
Leave a Reply