প্রেমের জন্য সিংহাসান ত্যাগ
প্রেমের জন্য সাধারণ মানুষই কত কিছু না করতে পারে। সেখানে প্রিয় মানুষটিকে পাওয়ার জন্য রাজপরিবারের সদস্যরা পিছিয়ে থাকে? বিশ্বের ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যাবে শুধু প্রেমের জন্য কত কত যুদ্ধ হয়েছে। মনের মানুষটির জন্য কত স্থাপনা তৈরি হয়েছে! প্রেমের জন্য রাজপরিবার বা সিংহাসন ত্যাগের ঘটনাও বিরল নয়। আধুনিক সময়ের প্রেমের জন্য রাজপরিবার বা সিংহাসন ত্যাগের ঘটনা দেখে নেয়া যাক
ব্রিটিশ রাজপরিবারের ‘প্রেম’ সংকট
প্রায় বারোশ বছরের পুরনো ব্রিটিশ রাজপরিবারের ইতিহাস। বিশ্বজুড়ে ব্রিটিশ রাজপরিবারের শাসন এত বিস্তৃত ছিল যে, বলা হতো ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে সূর্যাস্ত যেত না। বর্তমানে তা কমতে কমতে ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জে এসে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার শহরের ‘বাকিংহাম প্যালেস’ ব্রিটেনের রাজতন্ত্র ও রাজকীয় আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে সর্বদাই বর্তমান। সিংহাসনে সুদীর্ঘ সময় আছেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। বিশ্বের ১৪টি সার্বভৌম রাষ্ট্রের এবং কমনওয়েলথের প্রধান হিসেবে নিখুঁত আভিজাত্য বিশ্বে আগ্রহের কারণ। দুর্দান্ত প্রভাবশালী এবং অভিজাত ব্রিটিশ রাজপরিবার ‘হাউস অব উইন্ডসর’কে একাধিকবার সংকটে পড়তে হয়েছে শুধু ‘প্রেমের কারণে’। আভিজাত্যের সঙ্গে প্রেমের সংঘর্ষে বিশ্বজুড়ে আলোচিত হয়েছে ব্রিটিশ রাজপরিবার। প্রেমের জন্য সিংহাসার ত্যাগের ঘটনায় বিশ্বজুড়ে সব চেয়ে আলোচিত নাম রাজা অষ্টম এডওয়ার্ড।
যুবরাজ অষ্টম এডওয়ার্ড এক সাধারণ মার্কিন নারীর প্রেমে পড়েন। এক পার্টিতে ওয়ালিসের সঙ্গে এডওয়ার্ডকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন তার তৎকালীন প্রেমিকা লেডি ফারনেস। ওয়ালিস তখন দ্বিতীয় স্বামীর ঘর করছেন। কিন্তু তিন বছরের মধ্যেই তার প্রেমে ডুবে যান এডওয়ার্ড।
১৯৩৬ সালে বাবা রাজা পঞ্চম জর্জ মৃত্যুর পর রাজা হন ৪২ বছর বয়স্ক অষ্টম এডওয়ার্ড। পরের দিনই প্রথা ভেঙে সেন্ট জেমস প্যালেসের জানালায় দেখা দেন নতুন রাজা, পাশে ছিলেন ওয়ালিস সিম্পসন। তিনি তখনো আর্নস্ট সিম্পসনের স্ত্রী! গুজব চাউর হয়েছিল বেশ আগে থেকেই। তবে রাজপরিবারের প্রতি সম্মান দেখিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমগুলো সেদিন এ নিয়ে কোনো খবর প্রকাশ করেনি। কিন্তু বিদেশি পত্রপত্রিকায় ছাড় দেবে কেন? তারা ফলাও করে ছাপল। এদিকে ব্রিটিশ রাজপরিবারের ভূলুণ্ঠিত হওয়ার অবস্থা। আদালত আর সরকারকে নড়েচড়ে বসতেই হলো। সেই ঘোলাটে পরিস্থিতির মধ্যে এডওয়ার্ডের জন্য সুখবর বয়ে আনলেন ওয়ালিস। তার দ্বিতীয় ঘরটাও ভেঙেছে। কিন্তু রাজাকে কি বিয়ে করা যাবে? উইলিস সিম্পসন কীভাবে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের রানির মুকুট মাথায় পরবেন, এ নিয়েই ওই সময় তুমুল আলোচনার জন্ম দেয়। দুইবার তালাকপ্রাপ্ত মেয়েকে এডওয়ার্ড বিয়ে করলে ব্রিটিশ সরকার পদত্যাগ করবে – এমন হুমকি দেওয়া হলো। একজন দুইবার তালাকপ্রাপ্ত সাধারণ এক মার্কিন পরিবারের মেয়েকে ব্রিটিশ রাজার বিয়ে করার সিদ্ধান্তে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল স্বয়ং ইংল্যান্ডের চার্চ, যেখানে রাজা নিজেই চার্চের প্রধান! তখনকার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্ট্যানলে বল্ডউইনও এডওয়ার্ডের এই অন্ধ প্রেমের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে অবস্থান নেন। বল্ডউইন এডওয়ার্ডকে তিনটি প্রস্তাব দিয়েছিলেন – ১. ওয়ালিসকে বিয়ের চিন্তা বাদ দাও, ২. প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে করা ও ৩. সিংহাসন ত্যাগ করা। চাপ সহ্য করতে না পেরে ওয়ালিস তখন পালিয়ে যান ফ্রান্সে। সিদ্ধান্ত নিলেন এডওয়ার্ডের সঙ্গে আর সম্পর্ক রাখবেন না। কিন্তু এডওয়ার্ড জানতেন, সেটি তার মনের কথা নয়। প্রেয়সীর মনের কথাটা বাস্তবে প্রতিফলিত করতেই বল্ডউইনকে এডওয়ার্ড জানিয়ে দেন, তিনি তৃতীয় প্রস্তাবটিতে রাজি! ১৯৩৬ সালের ১০ ডিসেম্বর এডওয়ার্ড ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ‘অ্যাবডিকেশন’ (পদত্যাগ) জমা দেন। পরদিন তা অনুমোদন করা হয়। ফলে তার ছোট ভাই ষষ্ঠ জর্জ রাজা হন।
মাত্র ৩২৬ দিনের মাথায় সিংহাসন ত্যাগ করে ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের ইতিহাসে সবচেয়ে কম মেয়াদি রাজার তালিকায় নাম লিখিয়েছিলেন অষ্টম এডওয়ার্ড। প্রেমের জন্য সিংহাসন ত্যাগের ঘটনা আলোড়ন তোলে বিশ্বজুড়ে। এরপর এডওয়ার্ড চলে যান ফ্রান্সে তার প্রেয়সীর কাছে। ১৯৩৭ সালের ৩ জুন এডওয়ার্ড ওয়ালি সিম্পসনকে বিয়ে করে প্যারিসে বসবাস শুরু করেন। তারা কি সুখী হতে পেরেছিলেন? বেঁচে থাকতে ওয়ালিস শুধু একবার বলেছিলেন, কেউ জানে না অমর এক প্রেমকাহিনির মতো জীবনযাপন করা কত কঠিন! এডওয়ার্ড-ওয়ালিসের বিবাহ এখনো ব্রিটিশ রাজপরিবারের অন্যতম বিতর্কিত ঘটনা হিসেবে আলোচিত হয়।
প্রেমের জন্য ব্রিটিশ রাজসিংহাসন কিংবা রাজপরিবার ছাড়ার ইতিহাসে যোগ হয়েছে আরেক নাম। মার্কিন অভিনেত্রী মেগান মার্কেলের সঙ্গে প্রিন্স হ্যারির বিয়ের পর থেকেই চলছিল নানা রকমের জল্পনা। ২০২০ সালে একটি বিবৃতি দিয়ে ডিউক ও ডাচেস অব সাসেক্স জানান, রাজকর্তব্য থেকে সরে আসতে চলেছেন তারা। ব্রিটিশ রাজপরিবারের শীর্ষ সদস্য হিসেবে নিজেদের দায়িত্ব ছেড়ে ব্যক্তিগত জীবনে ‘আর্থিকভাবে স্বনির্ভর’ হতে চান বলে জানায় এই জুটি। তারা আর ব্যবহার করবেন না রাজকীয় উপাধি (হিজ/হার রয়্যাল হাইনেস)। রাজকীয় দায়িত্ব পালনের জন্য সরকারি অর্থও গ্রহণ করবেন না তারা। এ ছাড়া আনুষ্ঠানিকভাবে এই দম্পতি আর ব্রিটেনের রানির প্রতিনিধিত্বও করবেন না।
রাজকীয় দায়িত্ব ছাড়ার পর ২০২১ সালে হ্যারি ও মেগান যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে চলে যান। এর পর থেকে এক নতুন জীবন শুরু করেছেন এই দম্পতি। জনসমক্ষে ক্রমে তাঁদের বেশি দেখা যেতে থাকে। সহানুভূতিশীল গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের সঙ্গেও যোগাযোগ বজায় রাখা শুরু করেন তাঁরা। যুক্তরাজ্য ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে তাঁদের এ পাড়ি জমানোকে ব্রিটিশ গণমাধ্যমগুলো ‘মেক্সিট’ নামে আখ্যায়িত করে থাকে।
প্রেমের জন্য স্বেচ্ছায় সিংহাসন ছেড়ে দিয়েছিলেন পাঁচ জাপানি রাজকন্যা
প্রেমের জন্য প্রথম রাজপরিবার ছাড়েন জাপানের সম্রাট হিরোহিতোর ২১ বছর বয়সী কন্যা রাজকুমারী আতসুকো ১৯৫২ সালের তাকামাস ইকদা নামে একজন দুগ্ধ খামারিকে বিয়ে করেন। রাজপরিবারের অনেক সদস্য তাদের বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন, কিন্তু তার বাবা ছিলেন না।
এর পরে ২০০৫ সালে, জাপানের সম্রাট আকিহিতো এবং সম্রাজ্ঞী মিচিকোর একমাত্র কন্যা, রাজকুমারী সায়াকো একজন নগর পরিকল্পনাবিদ, ইয়োশিকি কুরোদার প্রেমের জন্য তার উপাধি ত্যাগ করেন।
২০১৮ সালে, জাপানের সম্রাট আকিহিতোর তুতো ভাই প্রিন্স তাকামাদোর কন্যা প্রিন্সেস আয়াকো চতুর্থ জাপানি রাজকুমারী যিনি সাধারণ নাগরিক কে ভালোবেসে বিয়ে করে রাজকীয় মর্যাদা বিসর্জন দেন। এর আগে তার বড় বোন প্রিন্সেস নারিকো ২০১৪ সালে একইভাবে একজন সাধারণ নাগরিককে বিয়ে করে তার উপাধি ত্যাগ করেন।
সাম্প্রতিক জাপানের বর্তমান সম্রাট নারুহিতোর ছোট ভাই যুবরাজ আকিশিনোর প্রথম সন্তান রাজকুমারী মাকো তার দীর্ঘদিনের প্রেমিক কেই কোমুরোকে বিয়ে করতে চলেছেন।
এই ঘটনাটি আপাত দৃষ্টিতে সাধারণ হলেও, জাপানি রাজ পরিবারের নিয়ম অনুযায়ী, রাজকুমারীরা রাজবংশের বাইরে সাধারণ পরিবারের কাউকে বিয়ে করলে রাজকীয় পদমর্যাদা হারায় এবং তাদের বঞ্চিত হতে হয় রাজপ্রাসাদের সবকিছু থেকে। এর ফলে মাত্র ১২ জন নারী এবং পাঁচজন পুরুষ থেকে যাবেন এই রাজপরিবারে। তাদের মধ্যে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী মাত্র তিনজন।
সুইডিশ রাজকুমারদের সিংহাসন ত্যাগ
১৯৪৬ সালে সুইডেনের রাজা গুস্তাফ ষষ্ঠ অ্যাডলফের পুত্র যুবরাজ কার্ল জোহান সাংবাদিক কার্স্টিন উইজমার্কের প্রেমে পড়েন – এবং তিনি তাকে বিয়ে করার জন্য তার রাজকীয় উপাধি ত্যাগ করেন। শুধুমাত্র কার্ল জোহান (পরে কার্ল বার্নাডোট)ই নয় সুইডিশ রাজকুমারদের রাজপরিবার ছাড়ায় তালিকায় আছেন তার বড় চাচা যিনি ১৮৮৮ সালে রাজপরিবার ছাড়েন। তার চাচাতো ভাই, লেনার্ট (১৯৩২ সাল) এবং কার্ল বার্নাডোটের ভাই, সিগভার্ড এবং আরও একজন, তাদের আরেক ভাই, বার্টিল, যিনি তিন দশকের সম্পর্কের পর ১৯৭৬ সালে সাধারণ নারীকে বিয়ে করে রাজকীয় উপাধি ত্যাগ করেন।
ডাচ প্রিন্স জোহান ফ্রিসো
(ছবি: https://ichef.bbci.co.uk/news/976/mcs/media/images/69244000/jpg/_69244838_018939840-1.jpg)
নেদারল্যান্ডসের রানি বিয়াট্রিক্সের ২য় ছেলে ডাচ প্রিন্স জোহান ফ্রিসো ‘প্রিন্স ব্রিলিয়ান্ট’ নামে পরিচিত ছিলেন। তার বড় ভাই উইলেম-আলেকজান্ডার বর্তমানে নেদারল্যান্ডসের রাজা। ২০০৩ ম্যাবেল উইস স্মিথের সাথে প্রেমে সম্পর্কের বিষয়টি প্রকাশ্য আসলে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠে। রাজপরিবার, রাজনৈতিক অঙ্গন এবং জনসাধারণের অসন্তুষ্টি পাশাপাশি ম্যাবেলের সাথে দেশটির শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী কথিত সম্পর্ক এবং অন্ধকার অতীত নিয়ে সংবাদমাধ্যমে ক্রমাগত গুজব প্রচারিত হতে থাকে। এরপরেও ২০০৪ সালে ম্যাবেল উইস স্মিথকে বিয়ে করেন ডাচ রাজপুত্র। সরকারি অনুমোদন ছাড়াই বিয়ের কারণে, প্রিন্স ফ্রিসো ডাচ রয়্যাল হাউসের সদস্যপদ এবং সিংহাসনের উত্তরাধিকারসূত্র হারান।
থাইল্যান্ডের রাজকুমারী উবোলরতনা
রাজকুমারী উবোলরতনা রাজকন্যা সিরিভাধানা বারনাভাদি থাইল্যান্ডের রাজা ভূমিবল আদুলিয়াদে বড় মেয়ে। রাজকুমারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে (এমআইটি) পড়তে গিয়ে মার্কিনীর প্রেমে পড়েন। ১৯৭২ সালে প্রেমটা বিয়েতে গড়ালে তার রাজ সম্মান কেড়ে নেওয়া হয়। ১৯৯৮ সালে বিয়ে ভেঙে গেলে তিনি দেশে ফিরে আসেন কিন্তু তাকে তার সম্মান ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি। যদিও থাইল্যান্ডের জনগণ তাকে রাজ পরিবারের সদস্যদের মতোই সম্মান করেন।
২০১৯ সালে থাইল্যান্ডের নির্বাচনে রাজকুমারী উবোলরতনা প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচনে অংশ নিতে চেয়েছিলেন। পেয়েছিলেন মনোনয়নও। কিন্তু তার ছোট ভাই বর্তমান রাজা মহা ভজিরালঙ্কম তার নির্বাচনে অংশগ্রহণের তীব্র সমালোচনা করেন। এরপর পারই রাজকুমারী উবোলরতনার প্রার্থিতা বাতিল করে দেশটির নির্বাচন কমিশন। উল্লেখ্য, ১৯৩২ সাল থেকে থাইল্যান্ডে সাংবিধানিক রাজতন্ত্র বজায় রয়েছে। দেশটির ওপর রাজ পরিবারের রয়েছে ব্যাপক প্রভাব।
সুলতান মুহাম্মদ পঞ্চম
ব্রিটিশ রাজ থেকে স্বাধীন হওয়া মালয়েশিয়ার ৬০ বছরের ইতিহাসে প্রথম এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র প্রেমের জন্য সিংহাসন ত্যাগের ঘটনা হলো এটি। মালয়েশিয়া একমাত্র দেশ, যেখানে পর্যায়ক্রমে সিংহাসনে আরোহণের ঘটনা ঘটে থাকে। প্রতি পাঁচ বছর পরপর উত্তরাধিকার সূত্রে নয়জন শাসকের মধ্যে ব্যাপক আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে পর্যায়ক্রমে সিংহাসন হাতবদল হয়।
তবে এই গল্পের শুরুটা রূপকথার মত দারুন হলেও শেষটা ছিল নোংরামীতে ভরা। মালয়েশিয়ার রাজা হিসেবে ক্ষমতাগ্রহণের মাত্র ২ বছরের মাথায় পদ ছাড়েন রাজা সুলতান মুহাম্মদ পঞ্চম। রাশিয়ায় সুন্দরী প্রতিযোগিতার মুকুটজয়ী ওকসানা ভোয়েভোদিনাকে বিয়ে করে ২০১৯ সালে সিংহাসন ছাড়েন এই রাজা।
২০১৮ এর নভেম্বরে ২ মাসের চিকিৎসার জন্য ছুটি নেন সুলতান মোহাম্মদ পঞ্চম। ছুটির মধ্যেই জানা যায়, রাশিয়ায় সাবেক মিস মস্কো কে বিয়ে করেছেন তিনি। এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিভিন্ন রুশ সংবাদ মাধ্যমও। প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় দেড় বছর আগে ওক্সানার সাথে দেখা হয় সুলতান মুহম্মদ পঞ্চমের। তারপর থেকেই প্রণয়, যা পরিণতি পেলো এতদিনে।
সুলতান মুহাম্মদ আর ওক্সানার প্রেমের প্রথম অংশের শেষ হয় এখানেই। এর পর শুরু হয় আরেক অধ্যায়। ওকসানার একটি আপত্তিকর ভিডিও সমানে আসে। রাশিয়ার একটি টেলিভিশনের ‘সেক্স ইন দ্য পুল’ শীর্ষক রিয়্যালিটি শোতে একটি সুইমিংপুলে এক ব্যক্তির সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হতে দেখা যায় তাকে। কিছু কিছু গণমাধ্যমের খবর ওকসানার এই আপত্তিকর ভিডিও ফাঁস হওয়ার পরই তাদের মধ্যে দম্পত্য কলহ শুরু হয়। এর পরিণতিকে ২০১৯ সালের জুলাইয়ের শুরুর দিকে ওক্সানাকে তালাক দেয়ার মাধ্যমে সম্পর্কের ইতি টানেন সুলতান মোহাম্মদ। তাদের বিচ্ছেদের ঘোষণাপত্রও প্রকাশ করে মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম। এবার একমাত্র সন্তানের জন্ম নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সাবেক এ রাজা।
সুলতানের পক্ষে তার আইনজীবী গণমাধ্য কে জানান, এটি যে সুলতান মুহাম্মদেরই সন্তান সে বিষয়ে কোনো প্রমাণ নেই। রুশ সুন্দরী ওক্সানা আবার রাজার সঙ্গে বিচ্ছেদের খবর অস্বীকার করেন।
Leave a Reply