সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করতে হলে প্রথমে যেটা করতে হবে তা হল – সিদ্ধান্তটা হতে হবে নিজের সর্বোচ্চ থেকে। যাতে ফল আর যাই আসুক নিজস্ব ব্যর্থতার প্রসঙ্গটা যেন হয়ে যায় গৌণ একটা বিষয়। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য যে পদ্ধতি অনুসরণ করা যায় তা রইল –
সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি
- কঠিন সময়ে নিজের স্মৃতিশক্তিকে বারবার ওলটপালট করে দেখে নেওয়া। কেবল শেষ ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার ঘটনাকেই মনে রাখবেন, সেটা কাম্য নয়। সামগ্রিকভাবে নতুন পরিস্থিতির ‘রিস্ক ফ্যাক্টর’গুলো খতিয়ে দেখুন।
- আগের একই ধরনের পরিস্থিতিতে অমুক জিনিসটা কাজে দিয়েছিল বলেই যে এবারও সেটাই কাজে লাগবে তার কোনো মানে নেই। অর্থাৎ একই ধরনের প্রোগ্রামে প্রতিবার একই ‘ফেসভ্যালু’ই যে কাজে দেবে তা কিন্তু নাও হতে পারে।
- সব রকম বিকল্পকেই গ্রহণ করা বা মাথায় রাখা দরকার। কোনো সিদ্ধান্তে আসার আগে সেই পরিস্থিতি সম্পর্কে যথাসম্ভব তথ্য জোগাড় করে ফেলা হবে প্রাথমিক কাজ। তারপর সেগুলোকে একত্রিত করে, নতুন ছাঁচে ফেলার মতো করে সেই পরিস্থিতিতে বসিয়ে বিচার করে ভেবে দেখা বাঞ্ছনীয়। অমুকে ওই কাজটা তমুকভাবে করেছে বলে আমাকেও ওইভাবেই করতে হবে এই সিদ্ধান্ত পরে চূড়ান্ত আক্ষেপের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এ ক্ষেত্রে নিজেকে ও নিজের পারিপার্শ্বিককে এবং তার প্রাসঙ্গিকতাকে ভুললে বোকামি হবে।
- নিজেকে নমনীয় রাখা, নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতার প্রতি আসক্তি তৈরি হতে না দেওয়া। অনেক কষ্ট করে, ভাবনাচিন্তা করে সময় দিয়ে ওই সিদ্ধান্তটা নিয়েছিলাম বলে জোর করে সেটাতেই স্থির থাকতে হবে এটা কিন্তু এক ধরনের নির্বুদ্ধিতা। বারবার ভুল করার থেকে নিজেকে একটু ভেঙে, অহংবোধকে একপাশে সরিয়ে রেখে, যুক্তি দিয়ে ভেবে সিদ্ধান্ত নাও। এ ক্ষেত্রে পরের ভালোটুকু মেনে নিতে তো দোষ নেই। মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ করে অনেক সময় আসলের থেকে সুদটা অনেক লাভজনক হয়।
এর পরও ভুল হলে অন্তত নিজেকে এই বলে সান্ত্বনা দিতে পারবেন যে, আপনি আপনার সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সৎ ছিলেন। পরিস্থিতি অনুকূল ছিল না, পারিপার্শ্বিক কারণ ও পরিবর্তিত অবস্থানের কারণে ব্যর্থ হয়েছেন। সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করে ব্যর্থ হলেও দেখবেন আত্মবিশ্বাসটা বেড়েছে, অন্তত বলছে না ‘মানুষ মাত্রই ভুল’।
এই লেখাটি “সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি” এই শিরোনামে দৈনিক আমাদের সময়ের ক্যারিয়ার সময় পাতায় ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে প্রকাশিত হয়েছে।
Leave a Reply