পড়ালেখা, ভ্রমণ, পেশাগত ও ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে বিদেশ যাত্রার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো সঠিকভাবে কাগজপত্র তৈরি করা। এ কাজে একজন ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্ট মানুষকে সহযোগিতা করে থাকেন। বিশ্বায়নের যুগে এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাবার উপলক্ষ ও সুযোগ বেড়ে যাওয়ায় এ পেশার চাহিদাও বেড়েছে।
ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্ট কি?
ভিসা এবং ইমিগ্রেশন কনসালটেন্ট-এর কাজ হল আন্তর্জাতিক ভাবে যারা ইমিগ্রেশনে আগ্রহী তাদের সহয্য করা। এখানে মূল কাজ হলো এই বিষয়ে আইনি সহাযতা প্রদান, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরিতে সহযোগীতা করা এবং সবশের্ষ যে দেশে ইমিগ্রেশন করতে হচ্ছে সে দেশে পৌছানোর পরে যে সকল আইনি সহযোগীতা প্রয়োজন তার ব্যবস্থা করা।
ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্ট-এর কাজ
ভিসা এবং ইমিগ্রেশন কনসালটেন্ট ডেডলাইনের মধ্যে ক্লায়েন্টকে আন্তর্জাতিকভাবে ইমিগ্রেশন করার জন্য যে সব কাগজপত্র প্রয়োজন তা সহজ এবং সঠিক যোগাড় করতে পরামর্শ ও নির্দেশনা দেয়া। কাগজপত্র সঠিক আছে কি না তা যাচায় করে দেয়া। ভিসা কর্তৃপক্ষ এবং ক্লায়েন্টের সঙ্গে ইমেইল বা ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখে। প্রয়োজনে অনুবাদকের সহায়তা নেয়া। সর্বশেষ ক্লায়েন্ট যে দেশে ইমিগ্রেশন করছে যে দেশে পৌছানো পর্যন্ত সগযোগীতা করা।
ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্ট-এর কাজের সুযোগ
সাধারণত ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্ট ট্রাভেল এজেন্সি, মাইগ্রেশন এজেন্সি, ওভারসীজ রিক্রুটিং এজেন্সি এবং স্টুডেন্ট রিক্রুটিং এজেন্সি তে কাজ করে থাকে।
ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্ট-এর দায়িত্ব
- ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্টের প্রধান প্রধান দায়িত্বের মধ্যে ইমিগ্রেশনের জন্য আগ্রহী ক্লায়েন্টকে প্রয়োজনীয় সব বিষয়ে তথ্য দেয়া;
- স্থায়ী মাইগ্রেশনের ক্ষেত্রে ক্লায়েন্টকে চাকরি, ব্যবসা ও পারিবারিক ভিসা সম্পর্কিত তথ্য দেয়া; কাজের ক্ষেত্রে ক্লায়েন্টকে বিদেশে চাকরির সুযোগ সম্পর্কিত তথ্য সরবারহ করা ও দেশের বাইরের এজেন্সিগুলোর সাথে যোগাযোগ করা;
- শিক্ষার্থীদের বেলায় ভিসার সাথে বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়ায় সাহায্য করা;
- ক্লায়েন্টের জন্য দরকারি কাগজপত্র তৈরি করা বা তৈরি করতে সহযোগীতা করা;
- ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্ট কে সব ক্লায়েন্টের সাক্ষাত্কার নিতে হবে এবং ব্যক্তিগতভাবে ইমিগ্রেশন অ্যাপ্লিকেশন ফাইল নিয়ে কাজ করতে হবে।
- ইমিগ্রেশনের পুরো প্রক্রিয়ার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করা ও ক্লায়েন্টকে জানানো;
- ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্টের দায়িত্ব ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত নথি অনুবাদ এবং ক্লায়েন্টদের তা ব্যাখ্যা করা।
- ইমিগ্রেশন যেকোন সমস্যায় ক্লায়েন্টকে সহযোগিতা দেয়া।
- ক্লায়েন্টের দেওয়া সমস্ত তথ্য সঠিক কিনা তা নিশ্চিত করা ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্টের অন্যতম কাজ।
ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্ট-এর যোগ্যতা
ইমিগ্রেশন কনসালটেন্সি এজেন্সিগুলো সাধারণত যেকোন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি চেয়ে থাকে। তবে কিছু কিছু কোম্পানি নূন্যতম হিসাবে মাস্টার্স ডিগ্রির চায়া। ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্ট হিসাবে কাজের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞদের প্রাধান্য দেয়া হয়। সাধারণত ১-২ বছরের ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা কাজে আসে।
ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্ট-এর দক্ষতা
- ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্ট কে দেশ-বিদেশের ইমিগ্রেশন আইন সম্পর্কে যথেষ্ট ভালো ধারণা এবং নিয়মিত হালনাগাদ তথ্য রাখতে হয়।
- ক্লায়েন্টের চাহিদা ও সমস্যা বুঝতে পারা এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া।
- কম সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে বের করার দক্ষতা।
- নির্ভুলভাবে ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত কাগজপত্র তৈরি করতে পারা;
- ইংরেজি ভাষায় দক্ষভাবে যোগাযোগ করতে পারার ক্ষমতা
- নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ক্লায়েন্টের বিদেশ যাবার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দক্ষতা;
- বিভিন্ন ধরনের ক্লায়েন্টকে সহযোগিতা করার মানসিকতা ও ধৈর্য থাকা।
- মাইক্রোসফ্ট অফিসে এবং ভিসা এবং ইমিগ্রেশন কনসালটেন্সি সম্পর্কিত অন্য সফ্টওয়্যারে কাজের দক্ষ হতে হবে।
- ভিসা এবং ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্ট অবশ্যই মোটিভেটেড, এনারজেটিক এবং একটি টিমের অংশ হিসেবে কাজ করতে সক্ষম হতে হবে।
ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্ট-এর আয় রোজগার
সাধারণ, মাসিক আয় নির্ভর করে প্রতিষ্ঠানসাপেক্ষ। ১-২ বছর অভিজ্ঞ কনসালট্যান্টের মাসিক আয় ১৮-২২ হাজার টাকা হয়ে থাকে। তবে কাজের অভিজ্ঞতা, যোগাযোগ এবং ক্লায়েন্ট বাড়লে বেতনও বেড়ে যায়।
ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্ট-এর ক্যারিয়ার গ্রাফ
ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্টের ক্যারিয়ার গ্রাফ সুনির্দিষ্ট নয়। কোন এজেন্সিতে কয়েক বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে সে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার পদে উন্নীত হতে পারেন। অন্যদিকে ফ্রিল্যান্স কনসালট্যান্ট হিসাবেও কাজ করার সুযোগ রয়েছে। অনেকে আবার বেশ কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা অর্জনের পরে নিজেই কনসালটেন্সি এজেন্সির উদ্যোগ নেয়।
Leave a Reply