সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের জন্য কীভাবে সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম বেছে নিবেন

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো, মার্কেটিং গোল অর্জনের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম বেছে নেয়া। আপনি এমন একটি ব্যবসার অংশ হতে পারেন যারা ইতিমধ্যে তাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্রেজেন্ট স্টাব্লিশ করেছে। এবং তারা হয়ত সেসব চ্যানেলগুলিতে সক্রিয়। কিন্তু আপনি এমন একজন হতে পারেন, যাকে সেই প্লাটফর্ম ঠিক করতে হবে।

সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেলগুলি বেছে নেয়ার জন্য, আপনার যে বিষয়টি সবার আগে গুরুত্ব দিয়ে চিন্তা করা উচিত তা হলো আপনি আপনার কাস্টমারদের সাথে কোন প্লাটফর্মে যোগাযোগ করবেন। সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিন।

আপনি এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় কী কী বিষয় বিবেচনা করবেন?

সাধারণত সোশাল মিডিয়া মার্কেটিং টিমের দৈনিক কাজ তিনটি। সেগুলো হলো: সোশ্যাল লিসেনিং, পোস্ট তৈরি, এবং যে কাজগুলো করা হয়েছে তার বিশ্লেষণ।

সোশ্যাল লিসেনিংয়ের অর্থ হল, প্রধান প্রধান সোশ্যাল নেটওয়ার্কে থট লিডাররা কী বলছে, কী করছে তা জানা, ট্রেন্ড এবং হ্যাশট্যাগ মনিটরিং এবং বোঝা যে, সেই প্ল্যাটফর্মে কী ঘটছে, লোকেরা কী সম্পর্কে কথা বলছে। কারণ এটি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটারের কাজের দ্বিতীয় অংশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এর উপরে নির্ভর করে পোস্টগুলি বিষয়আসয়।

সোশাল মিডিয়া মার্কেটার কে প্রমাণ করতে হবে যে, তিনি স্টেকহোল্ডারদের সাথে কাজ করে যে কনটেন্ট পাবলিশ করছেন সেটা সেই প্ল্যাটফর্মের অডিয়েন্সদের জন্য অর্থপূর্ণ। কিছু নির্দিষ্ট ধরনের কনটেন্ট আছে যেগুলোতে তাকে নিশ্চিত করতে হবে যে, তার ব্যবসা বা ব্রান্ড অন্যদের সাথে অ্যালাইন আছে।

আমার জানি প্রত্যেকটা সোশাল নেটওয়ার্কের আলাদা আলাদা টোন আছে। কনটেন্ট তৈরি শুরুর আগে সোশ্যাল লেন্সে দেখা যে সোশ্যালের জন্য কনটেন্ট তৈরি করা হবে কার টোন কি। যেমন: লিংকডইন পেশাদারদের নেটওয়ার্ক – অনেকটা ফর্মাল। এখানে আপনি সাধারণত কারো কোথাও ঘুরতে যাওয়ার ছবির পোস্ট দেখতে পাবেন না। আপনি যদি টুইটারে থাকেন তবে জানেন, এটি একটি মাইক্রোওয়েভের মতো। এখানে লোকে ফাস্ট এবং কুইক সাড়া দিচ্ছে, এটা অনেক ক্যাজুয়াল। প্রচুর ইমোটিকন।

প্রতিটা সোশ্যাল প্লাটফর্মেরই নির্দিষ্ট কিছু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য আছে। আলাদা ভাষা আছে। এগুলো বুঝে নিশ্চিত করা যে, যখন যে প্ল্যাটফর্মে যাবেন, তখন তার সাথে মেলে।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটারের কাজের তৃতীয় অংশটি হল বিশ্লেষণ। চমৎকার কনটেন্ট যা দেখতে সুন্দর। প্ল্যাটফর্মগুলিতে লোকেরা এটি পছন্দ করে, তবে দিনের শেষে এখনে প্রমাণ করতে হবে যে এটার সোশ্যাল ভ্যালু রয়েছে।

বিভিন্ন সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে কতজন লোক এনগেজ হয়েছে, কতজন ক্লিক করছে, কখন তারা ক্লিক করছে তারা সেখান থেকে কোথায় যাচ্ছে? তারা কি বিজনেসের ওয়েবসাইটে যাচ্ছে? তারা কি প্রোডাক্ট কিনেছে যা আমরা বিক্রি করতে চাই? তারা কি আমাদের ওয়েবসাইটে থেকে সেকেন্ড অ্যাকশন নিতে যথেষ্ট দীর্ঘ নিচ্ছে?

তাই সোশ্যাল রিয়ালিটির এনালিটিক সাইড সব সময় পরিষ্কার নয় যে এর মূল্য কী। তাই কনভারসেশন সোশ্যাল ভ্যালু অংশ। একটি কারণে একে সোশাল মিডিয়া বলা হয়। আর তাই ২০০টি লাইক পাওয়া পোস্টের মূল্য বলা মুশকিল। হতে পারে যে ২০০ জন বেশি পছন্দ করেছে। কিন্তু সত্যিই আপনি কিন্তু একটা সম্পর্ক তৈরি করছেন। আপনি আপনার ব্র্যান্ড তৈরি করছেন তাই এটি গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু আপনাকে আপনার রেজাল্ট সংখ্যায় প্রকাশ করতে হবে। যেমন বিজনেসের ওয়েবসাইটে ২০০ ভিজিটার এসেছে। এই ক্যাম্পেইন থেকে সেল হয়েছে কারণ তারা সোশ্যাল পোস্টগুলিতে ক্লিক করেছে৷ সুতরাং বিশ্লেষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, সম্ভবত কনটেন্ট তৈরি লেখার এবং পোস্ট করার চেয়ে একটু কঠিন। কিন্তু এটি সমানভাবে মূল্যবান এবং সোশ্যাল চ্যানেল বেছে নিতে সহায়তা করে।

সোশ্যাল প্লাটফর্ম এনালিটিক্সের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল কাস্টমার সার্ভিস। সুতরাং এটি একটি মেট্রিক বা সোশ্যাল সাফল্য পরিমাপের উপায়গুলির মধ্যে একটি যে আপনি কত দ্রুত সাড়া দিচ্ছেন। আপনার সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টে করো যদি প্রশ্ন থাকে, আপনি তার দ্রুত উত্তর দিন। এবং সঠিক সিস্টেম সেট আপ করুন এবং আপনি কত দ্রুত প্রশ্ন এবং অভিযোগের জবাব দেয়া যায় তা জেনে নিন। এবং যখন কেউ আপনার ব্র্যান্ডকে ইতিবাচক ভাবে উল্লেখ করে তখন আপনি কত দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানাতে যাচ্ছেন সেটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ মেজারমেন্ট।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং হল একটি কমিউনিটির সাথে অংশ নেয়া এবং ইন্টারঅ্যাক্টিং করা। সেই কমিউনিটিকে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে খুঁজে পেতে পারেন, কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়াতে সক্রিয় হতে সময় এবং প্রচেষ্টা লাগে৷

আপনি যেখানে সক্রিয় থাকবেন এমন একটি ভিন্ন চ্যানেলে পোস্ট করার জন্য আপনাকে শুধুমাত্র কনটেন্ট তৈরি করতে হবে না, আপনাকে প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে, প্ল্যাটফর্মের লোকেদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে এবং আপনার ব্যবসা বা পণ্যের সাথে সম্পর্কিত ট্রেন্ডিং টপিকগুলিকে দৃশ্যমান করার চেষ্টা করতে হবে। যে সবের জন্য সময় এবং প্রচেষ্টা লাগে।

আপনি প্রতিটি প্ল্যাটফর্মে সক্রিয় হতে পারবেন না। কয়েকটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ফোকাস করুর এবং সেখানে অংশগ্রহণ করার জন্য আপনার সময় এবং প্রচেষ্টাকে কাজে লাগান। সমস্ত সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম কভার করার চেষ্টা করলে প্রতিটিতে গ্রাহকদের সাথে সত্যিকার অর্থে ইন্টারেক্ট করার জন্য পর্যাপ্ত সময় এবং রিসোর্স থাকবে না। আপনি শুরু করার আগে, আপনার রিসোর্সগুলি মূল্যায়ন করুন এবং মনে রাখবেন যে একজন ব্যক্তির পক্ষে দুই বা তিনটি প্ল্যাটফর্মে ভাইব্রেন্ট সোশাল ফলোইং ম্যানেজ করা কঠিন!

সাধারণত সময় এবং রিসোর্সের কারণে আমরা সক্রিয় হওয়ার জন্য কয়েকটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম বেছে নিতে বাধ্য হই। তাই আপনাকে সেই কাজটি করতে হবে বুদ্ধিমানের মত।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *