চার্টার্ড সেক্রেটারি হতে চাইলে

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন কোম্পানি, ব্যাংক, বিমা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে কোম্পানি সেক্রেটারি ও কর্পোরেট ম্যানেজার পদটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এসব পদের জন্য উপযুক্ত প্রার্থীর অভাব কোম্পানি সুশাসন প্রতিষ্ঠার পথে অন্তরায়। চার্টার্ড সেক্রেটারি বর্তমান সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে একটি আকর্ষণীয় পেশা।

শিক্ষার পাশাপাশি আমাদের সবার প্রয়োজন পেশাগত দক্ষতা। দক্ষতা বাড়ানোর জন্য কোনো না কোনো প্রতিষ্ঠানে নিজেদেরকে জড়াতে হয়। যখন দক্ষ কর্মী হিসেবে নিজেকে পেশায় প্রতিষ্ঠা করা যায় তখন সাফল্য হাতছানি দিয়ে ডাকতে বাধ্য থাকবে। সব শিক্ষারই প্রাথমিক লক্ষ্য হলো একটি ভালো ও মর্যাদাশীল পেশা বা চাকরি। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশেও উচ্চশিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হলো দ্রুত একটি ভালো প্রফেশন, একটি ভালো চাকরি। তবে গতানুগতিক সাধারণ শিক্ষার তুলনায় এখানে ব্যতিক্রমধর্মী ও সময়োপযোগী বিষয়গুলোর চাহিদা সব সময়ই বেশি। এ ক্ষেত্রে পেশাগত ডিগ্রি বা যোগ্যতা যেন সোনায় সোহাগা। কোনো সাধারণ বিষয়ে সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়েও যেখানে চাকরির জন্য প্রতিযোগিতায় হিমশিম খেতে হয় সেখানে ব্যতিক্রমধর্মী প্রফেশনাল ডিগ্রি থাকলে অতি সহজেই সম্মানজনক চাকরি পাওয়া সম্ভব। বেকার হলে তো কথাই নেই, তবে যারা চাকরিজীবী তারাও এসব বিষয়ে প্রফেশনাল দক্ষতা অর্জনের ব্যাপারে মনোযোগী হতে পারেন। চার্টার্ড সেক্রেটারি বর্তমান প্রেক্ষিতে এমনই একটি চ্যালেঞ্জিং প্রফেশন।

বিশ্বজুড়ে কোম্পানি সুশাসন আজ একটি আলোচিত বিষয়। আর সুশাসন প্রতিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছে চার্টার্ড সেক্রেটারি প্রফেশন। এ কারণে আজ সারা বিশ্বে চার্টার্ড সেক্রেটারি একটি গুরুত্বপূর্ণ ও সম্মানজনক পেশা হিসেবে পরিচিত। তাছাড়া কোম্পানিকে লাভজনক ও যথাযথভাবে পরিচালনার জন্য প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন। এরকম প্রাতিষ্ঠানিক কাজ সম্পাদনের জন্য কোম্পানির সেক্রেটারি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অনেক সময় দেখা যায় এদের ভূমিকার ওপর নির্ভর করে কোম্পানি সাফল্যের দৌড়ে অনেক দূর এগিয়ে যায়। এমনকি এদের কর্মপরিধির জন্য কোম্পানি অনেক সময় কঠিন কাজ সহজে আদায় করতে পারে। এজন্য এ পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তিকে আইনি পরিপালন, হিসাব ও ব্যবসা-প্রশাসন সংক্রান্ত বিষয়ে হতে হয় দক্ষ, অভিজ্ঞ ও কৌশলী। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন কোম্পানি, ব্যাংক, বীমা ও বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানে কোম্পানি সেক্রেটারি এবং কর্পোরেট ম্যানেজার পদটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড সেক্রেটারিজ অ্যান্ড ম্যানেজারস অব বাংলাদেশ (আইসিএসএমবি) এ পেশার উন্নয়ন ও প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।

ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড সেক্রেটারিজের পরিচিতি: বর্তমান বিশ্বে চার্টার্ড সেক্রেটারি একটি গুরুত্বপূর্ণ ও সম্মানজনক পেশা হিসেবে স্বীকৃত। বাংলাদেশ সরকারের চার্টার্ড সেক্রেটারিজ আইন, ২০১০ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধিভুক্ত ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড সেক্রেটারিজ অব বাংলাদেশ (আইসিএসবি) এই পেশার উন্নয়নকল্পে পরিচালনা করে আসছে চার্টার্ড সেক্রেটারিশিপ (সিএস) প্রফেশনাল কোর্স। পেশাগত শিক্ষা ও যোগ্যতা প্রদানের ক্ষেত্রে ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড সেক্রেটারিজ অ্যান্ড ম্যানেজারস অব বাংলাদেশ গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে কাজ করে চলেছে। আজ তাই চার্টার্ড সেক্রেটারি একটি সুপরিচিত ও সুগ্রহণীয় পেশাগত যোগ্যতা। বর্তমানে চাকরিরত এবং চাকরিপ্রার্থী উভয়ের জন্য এ প্রফেশনাল কোর্সটি সমান গুরুত্বপূর্ণ। চার্টার্ড সেক্রেটারিশিপ আপনাকে কর্মরত প্রতিষ্ঠানে বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে সম্মানজনক চাকরির সুযোগ করে দেবে।

ক্যারিয়ার: বর্তমানে পছন্দের পেশার তালিকায় প্রথম সারিতে আছে কর্পোরেট পেশা। আর চার্টার্ড সেক্রেটারি এরই একটি অংশ। কেননা, কোম্পানিকে লাভজনক ও যথাযথভাবে পরিচালনার জন্য প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন। সে ক্ষেত্রে আইনি পরিচালক হিসেবে ও ব্যবসায় প্রশাসনসংক্রান্ত বিষয়ে হতে হয় দক্ষ, অভিজ্ঞ ও কৌশলী। আর এ কাজটি দক্ষতার সঙ্গে করতে পারেন একজন কোম্পানি সচিব। চার্টার্ড সেক্রেটারিশিপের পেশাদার কোর্সটি করে হওয়া যাবে কোম্পানি সচিব। যাঁরা ইতিমধ্যেই পেশাজীবনে ঢুকেছেন তাঁরাও এ কোর্সটি করে পেশাগত প্রতিযোগিতায় আরও একধাপ এগিয়ে যেতে পারেন। বাংলাদেশে বর্তমানে শুধু তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যাই ৩০০-এর অধিক এবং প্রতিটি কোম্পানিতেই কোম্পানি সেক্রেটারি, অ্যাসিস্ট্যান্ট কোম্পানি সেক্রেটারি, কর্পোরেট ম্যানেজার বা এর সমমর্যাদাসম্পন্ন পদ রয়েছে। ফলে একজন দক্ষ চার্টার্ড সেক্রেটারির পক্ষে খুবই উচ্চতর প্রারম্ভিক বেতনে এসব পদে অতি সহজেই যোগদান করা সম্ভব।

কোর্সের মেয়াদ: পুরো সিএস কোর্স সম্পন্ন করতে সময় লাগবে আড়াই বছর। কোর্স শেষে ইন্টার্নশিপ করতে হবে তিন মাস। আড়াই বছর মেয়াদি এই কোর্স মোট পাঁচটি সেমিস্টারে বিভক্ত। প্রথম তিন সেমিস্টারকে বলা হয় এক্সিকিউটিভ লেভেল এবং শেষ দুই সেমিস্টারকে বলা হয় প্রফেশনাল। এ ছাড়া ব্যবসা ছাড়া অন্য বিভাগ থেকে আসা শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত একটি সেমিস্টার করতে হয়। একে বলা হয় ফাউন্ডেশন লেভেল। প্রতিটি সেমিস্টারের মেয়াদ ছয় মাস।

চার্টার্ড সেক্রেটারিশিপ প্রফেশনাল কোর্স ভর্তির যোগ্যতা: প্রার্থীকে বাণিজ্য শাখায় ন্যূনতম স্নাতক (বিকম/বিকম-অনার্স/ বিবিএ/এমবিএ) ডিগ্রি এবং কমপক্ষে ছয় পয়েন্টের অধিকারী হতে হবে। তবে কোনো পরীক্ষায় তৃতীয় বিভাগ গ্রহণযোগ্য নয়।

যোগাযোগ:

ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড সেক্রেটারিজ অব বাংলাদেশ (আইসিএসবি),

১০৭ কাকরাইল (দ্বিতীয় তলা), ঢাকা।

ফোন: ৯৩৪ ৯৫৭৮, ৯৩৩ ৬৯০১,

ই-মেইল: secretary@icsb.edu.bd

ওয়েবসাইট: www.icsb.edu.bd

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *