Category: ভ্রমণ
-
অপরূপ সৌন্দর্যে ভরা বিছানাকান্দি
অপরূপ সৌন্দর্যে ভরা বিছানাকান্দি ভারতের সীমান্তঘেঁষা সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত। সীমান্তবর্তী এ জনপদে প্রকৃতি তার সৌন্দর্য মেলে ধরেছে উদার হয়ে। সম্প্রতি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে এ অঞ্চলের বিছনাকান্দি। অপ্সরীর সাজানো পাথর বিছানা আর অগভীর স্বচ্ছ জলে যে কেউ নাও ছাড়িয়ে গা ভাসিয়ে প্রকৃতির কোলে চড়তে পারেন। এখনও আড়ালেই রয়ে গেছে পাহাড়-পাথর-জলে বন্দী অপ্সরী বিছনাকান্দি।…
-
নয়নাভিরাম শালবন: আলতাদীঘি জাতীয় উদ্যান
নওগাঁ শহর থেকে মাত্র ৫৬ কিলোমিটার পথ পেরুলেই ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা ধামইরহাট উপজেলার নয়নাভিরাম শালবন আর প্রকৃতিকন্যা আলতাদীঘি দেখা যাবে। বরেন্দ্রভূমির এই বিশাল শালবনটির আয়তন ৬৫২ একর। লালমাটির এ রাঙ্গা বনভূমির উঁচু-উঁচু শালগাছ যেন প্রকৃতির গোপন রহস্যে ঠাসা। এই বনভূমি সরকারের রিজার্ভ ল্যান্ড ফরেস্ট হিসেবে সংরক্ষিত। প্রাকৃতিক এই বনভূমির মাঝে নেই কোন কৃত্রিমতা। সরকার ২০১১ সালে শালবনটি জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করে। এ বনের বুনোপথ ধরে কিছুটা এগিয়ে যেতেই দেখা মিলবে শালবনের মাঝে বিশাল টলটলে জলের আলতাদীঘি। প্রকৃতি এখানে নিজ হাতে যেন সবকিছু সাজিয়েছে। নয়নাভিরাম এই শালবন দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করে প্রকৃতিপ্রেমীরা। শালবনে গেলে চোখে পড়বে চারদিকে নিঝুম স্তব্ধতা। দু’চোখে শুধুই সবুজ আর সবুজ। উত্তর–দক্ষিণে লম্বা এ দীঘির দৈর্ঘ্য প্রায় এক কিলোমিটার, চওড়া প্রায় ৪০০ মিটারের মতো। গ্রামের লোকমুখে প্রচলিত আছে বৌদ্ধ যুগের কীর্তি এটি। দীঘির পাড় ঘেঁষে ভারত সীমান্ত। উত্তর পাড়ে দাঁড়িয়ে ভারতের কাঁটাতারের বেড়া। শীতের সময় এখানে অতিথি পাখির আগমন ঘটে। দিঘিতেদাঁড়টানা নৌকা আছে। ইচ্ছা হলে কিছুক্ষণের জন্য নৌভ্রমণও উপভোগ করা যাবে। এ বিশাল জলাশয়ে ৫৫ প্রজাতির দেশীয় মাছ ও প্রায় ১৪ হাজার প্রজাতির অন্যান্য জলজ প্রাণী রয়েছে। আলতাদীঘির অদূরেই রয়েছে পাল শাসনামলে নির্মিত জগদ্দল বৌদ্ধ বিহার। সেখানে বিষ্ণু, শিব ও কারুকার্যখচিত কষ্টিপাথরের নারীর মুখমণ্ডলের প্রতিকৃতি দেখতে পাওয়া যায়। দীঘির পাশেই রয়েছে কয়েকটি আদিবাসী গোষ্ঠীর বসবাস। আলতাদীঘির নামকরণেও রয়েছে ঐতিহাসিক মজার ঘটনা। হাজার বছর আগে এ এলাকা ছিল বটু রাজার। জগদ্দলে ছিল সেই রাজার বাড়ি। রানী একদিন আবদার করলেন, তাকে বড় এক দীঘি খুঁড়ে দিতে হবে। রাজা বললেন, ঠিক আছে। তুমি হাঁটতে শুরু কর। যতক্ষণ পর্যন্ত তোমার পা ফেটে রক্ত বের না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত হাঁটতে হবে। এখান থেকে হাঁটা শুরু করে যেখানে গিয়ে পা থেকে রক্ত বের হবে সেই পর্যন্ত দীঘি কাটা হবে। রানী হাঁটতে থাকলেন। হাঁটা আর শেষ হয় না। রাজা পড়ে গেলেন চিন্তায়। শেষ পর্যন্ত পাশের দেশে গিয়ে দীঘি কাটতে না হয়। তাই কৌশলে তার সৈন্য দিয়ে রানীর পায়ে আলতা লাগিয়ে বললেন, রানীর পা ফেটে রক্ত বেরিয়েছে। দীঘি সে পর্যন্তই খোঁড়া হল। প্রায় হাজার বছরের স্মৃতি নিয়ে আজও সৌন্দর্য বিলিয়ে যাচ্ছে এ ঐতিহ্যবাহী আলতাদীঘি। যাতায়াত সারা দেশের সাথে নওগাঁর সড়ক ও ট্রেন যোগাযোগ আছে। এখান থেকে আলতাদীঘি যেতে হলে নওগাঁ সদরের বালুডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে ধামইরহাট যেতে হবে। ধামইরহাট উপজেলা সদর থাকে রিকশা অথবা ভ্যানে ৪ কিলোমিটার দূরে আলতাদীঘি। জয়পুরহাট জেলা সদর থেকেও আলতাদীঘি যাওয়া যায়। এক্ষেত্রে জয়পুরহাট থেকে বাসে ধামইরহাট তারপরে সেখান থেকে আলতাদীঘি। থাকা ধামইরহাটে ডাকবাংলো আছে; দূরত্ব যেহেতু বেশি নয় তাই চাইলে নওগাঁ, জয়পুরহাট কিংবা সান্তাহারেও থাকা যায়। সার্কিট হাউস ও জেলা পরিষদের ডাকবাংলোর পাশাপাশি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় কয়েকটি আবাসিক হোটেল রয়েছে। আবাসিক হোটেলগুলোর কাছাকাছি রয়েছে একাধিক খাবার হোটেল, রেস্তরাঁ ও মিনি চাইনিজ রেস্তরাঁ।