আপনার যদি ভালো যোগাযোগের দক্ষতা থাকে, সাথে ব্যবসায়িক বুদ্ধি আর সফল হওয়ার জন্য ড্রাইভ দেয়ার সাহস, তাহলে আপনি বিজনেস ডেভেলপমেন্ট অফিসার বা বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এক্সকিউটিভ হিসাবে ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন। একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক প্রসারে একজন বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সাধারণত প্রতিষ্ঠানের পণ্য/সার্ভিস বিক্রি ও কাস্টমারদের সাথে দীর্ঘস্থায়ী ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ে তোলার মাধ্যমে এ কাজ করতে হবে আপনাকে।
বিজনেস ডেভেলপমেন্ট অফিসার বা বিজনেস ডেভেলপমেন্ট
একজন বিজনেস ডেভেলপমেন্ট অফিসার, এক্সকিউটিভ কিংবা ম্যানেজার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে বড় ভূমিকা পালন করে থাকেন। বিজনেস ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করতে হলে আপনার প্রথম এবং প্রধান লক্ষ হবে প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক উন্নতি এবং বিকাশ। এ লক্ষ্যে পৌছাতে পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে গ্রাহকদের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন, স্ট্রাটেজিক প্ল্যানিং তৈরি এবং বাস্তবায়ন, উপযুক্ত বাজারে নিজেদের মার্কেট শেয়ার বা অবস্থান নির্ণয় করা, বিজনেস অপারেশনের উন্নতি, এবং কিছু ক্ষেত্রে অবস্থান বা খ্যাতির মাধ্যমে লক্ষ্যে পৌঁছানো।
বিজনেস ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করতে হলে আপনি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মধ্যে একটি একক ভূমিকায় থাকতে পারে বা কর্মীদের একটি দলের নেতৃত্ব দিতে পারেন। আপনার কাজ প্রায়ই ব্যবসার সব কিছু জুড়ে হবে।
বিজনেস ডেভেলপমেন্টের ধরণ
বিজনেস ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করার সুযোগ রয়েছে প্রায় সব ধরণের ব্যবসার ক্ষেত্রে। তবে, আপনি এক্সপার্ট হতে চায়লে নির্দিষ্ট একটি সেক্টর বেছে নিতে পারেন। যেমন: শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইটি, উৎপাদন অথবা টেলিযোগাযোগ। অন্যথায়, আপনি বিভিন্ন বিভিন্ন ব্যবসা নিয়ে কাজ করতে পারেন, তবে একটি নির্দিষ্ট ফোকাস রাখতে হবে: বিটুবি (বিজনেস টু বিজনেস) কিংবা বিটুসি (বিজনেস টু কাস্টমারে) তে।
বিজনেস ডেভেলপমেন্ট অফিসার বা, বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এক্সিকিউটিভ হিসাবে কাজের সুযোগ
সাধারণত নতুন কোম্পানিগুলোতে বিজনেস ডেভেলপমেন্ট অফিসার বা, বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এক্সিকিউটিভ নিয়েগ দেয়া হয়। এছাড়া বড় প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন কোন বাজারে ব্যবসা সম্প্রসারণের সময় বিজনেস ডেভেলপমেন্ট অফিসার নিয়োগ দিয়ে থাকে।
ডেভেলপমেন্ট অফিসার বা, বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এক্সিকিউটিভ-এর দায়িত্ব
একজন বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এক্সকিউটিভ, অফিসার কিংবা ম্যানেজারের দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে –
- ব্যবসার প্রসারের জন্য নতুন ধারণা নিয়ে আসা।
- প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানগুলোর পণ্য বা সেবাগুলো যাচাই করা।
- বাজারে কেমন পণ্য বা সার্ভিসের চাহিদা রয়েছে, সে সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা।
- ব্যবসার জন্য প্রয়োজনীয় মেট্রিক ঠিক করা।
- সেলস ও মার্কেটিং দলের সাথে কাজের সমন্বয় ঘটানো।
- প্রতিষ্ঠানের কাস্টমারদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা।
- নতুন কাস্টমারদের সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক তৈরি করা।
- ব্যবসার অগ্রগতি সম্পর্কে নিয়মিত প্রতিবেদন তৈরি করা।
ডেভেলপমেন্ট অফিসার বা, বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এক্সিকিউটিভ-এর যোগ্যতা
অধিকাংশ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ডিভিশনে নিয়োগের সময় শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসাবে নূন্যতম ব্যাচেলর ডিগ্রি চাওয়া হয়। তবে কিছু কোম্পানিতে নূন্যতম হিসাবে মাস্টার্স ডিগ্রির চাওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে যেহেতু প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক উন্নতি নিয়ে কাজ করা হয় সেহেতু বিজনেস গ্রাজুয়েটরা অগ্রাধিকার পায়। এন্ট্রি লেভেলে বিজনেস ডেভেলপমেন্ট অফিসার বা এক্সকিউটিভ নিয়োগের সময় প্রতিষ্ঠানসাপেক্ষে বয়সের সীমা থাকতে পারে। এ ক্ষেত্রে সাধারণ বয়সের সীমা ২৫-৩০ বছর হতে পারে। বিজনেস ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞদের প্রাধান্য দেয়া হয়। সাধারণত ১-২ বছরের ব্যবসা সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা কাজে আসে।
ডেভেলপমেন্ট অফিসার বা, বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এক্সিকিউটিভ-এর দক্ষতা
- নতুন ব্যবসায়িক সুযোগ নির্ণয় করার ক্ষমতা;
- খুঁটিনাটি বিষয় বিশ্লেষণ করার দক্ষতা;
- বাংলা ও ইংরেজি – দুই ভাষাতেই ভালো যোগাযোগ করতে পারা;
- কাস্টমারদের সাথে ভালো ব্যবসায়িক সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষমতা;
- যে কারো সাথে সহযোগিতায় যেতে পারা;
- আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ভালো সিদ্ধান্ত নেবার দক্ষতা।
- এ পেশায় টেকনিক্যাল দক্ষতা আবশ্যক নয়। তবে ব্যবসা সংক্রান্ত বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন জানা দরকারি। যেমন, মাইক্রোসফট এক্সেল কিংবা কাস্টমার রিলেশনশিপ ম্যানেজমেন্ট (CRM) সফটওয়্যার।
ডেভেলপমেন্ট অফিসার বা, বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এক্সিকিউটিভ-এর আয় রোজগার
সাধারণ, মাসিক আয় নির্ভর করে প্রতিষ্ঠানসাপেক্ষ। সাধারণ বিজনেস ডেভেলপমেন্ট অফিসার বা এক্সকিউটিভ ২০ হাজার টাকা বেতন দিয়ে চাকরি শুরু করে। অবশ্য বহু প্রতিষ্ঠানে পণ্য বা সার্ভিস বিক্রিতে ভূমিকার ভিত্তিতে লভ্যাংশ পাবার সুযোগ থাকে।
ডেভেলপমেন্ট অফিসার বা, বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এক্সিকিউটিভ-এর ক্যারিয়ার গ্রাফ
বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিভাগের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট অফিসার বা এক্সকিউটিভ হিসাবে এন্ট্রি লেভেলে আপনার কাজ শুরু হবে। পরে সিনিয়র পদে উন্নীত হবেন। এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পণ্য বা সার্ভিসের ব্যবস্থাপনার জন্য নিযুক্ত করা হতে পারে আপনাকে। আপনার ব্যবসায়িক জ্ঞান ও দক্ষতার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক উন্নয়নে যদি বড় ভূমিকা রাখতে পারেন, সে ক্ষেত্রে খুব তাড়াতাড়ি সিনিয়র পদ পাবেন। সম্ভাব্য সবচেয়ে উঁচু পদ পেতে পারেন আপনার বিভাগের পরিচালক হিসাবে।
Leave a Reply