২০১৫ সালের বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনী দেশ

২০১৫ সালের বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনী দেশ

 

১.       কাতার

পারস্য উপসাগরের মুসলিম দেশ কাতার। আয়তন ১১,৫৭১ বর্গ কিলোমিটার (বিশ্বে ১৬৪তম)। মোট জনসংখ্যা: ২.০৫১ মিলিয়ন (বিশ্বে ১৪৮তম) জন্য। উত্তপ্ত ও শুষ্ক মরুর এ দেশে ভূ-পৃষ্ঠে জলাশয় এবং উদ্ভিদের সংখ্যা সামান্য। বেশির ভাগ লোক শহরে, বিশেষত রাজধানী দোহা শহরে বাস করে। বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে দেশটি ব্রিটিশ শাসনের অধীনে আসে। ১৯৭১ সালে ৩ সেপ্টেম্বর এটি পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে। বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত এটি একটি তুলনামূলকভাবে দরিদ্র দেশ ছিল। ঐ সময় দেশটিতে পেট্রোলিয়ামের মজুদ আবিষ্কৃত হয় এবং এগুলি উত্তোলন শুরু হয়। এর পর থেকে দেশটি উন্নতি করতে থাকে। বর্তমানে মাথাপিছু আয়ের হিসেবে কাতার বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশ একটি; মাথাপিছু আয় ১,০৪,৭৫৬ মার্কিন ডলার বা ৮০,৬৬,২১২ টাকা। এ দেশে কোনো আয়কর উত্তোলন করা হয় না। এমনকি বিশ্বের সবচেয়ে কম কর আদায়কারী দেশ এটি। কাতারের মুদ্রার নাম রিয়াল। রাজতান্ত্রিক এ রাষ্ট্রের সরকারি ভাষা আরবি। ২০২২ সালে ফুটবল বিশ্বকাপের স্বাগতিক দেশ কাতার। প্রতিবছর ২.৫ মিলিয়ন পর্যটক এ দেশ ভ্রমণ করে।

 

 

২.      লুক্সেমবার্গ

পশ্চিম ইউরোপের একটি ক্ষুদ্রায়তন রাষ্ট্র। রাজধানীর নামও লুক্সেমবার্গ। আয়তন ২,৫৮৬ বর্গকিলোমিটার (বিশ্বে ১৭৯তম)। ১৮১৫ সালের ৯ জুন থেকে স্বাধীন দেশটির জনসংখ্যা প্রায় ৫.৩ মিলিয়ন (বিশ্বে ১৭৩তম)। মাথাপিছু আয়ের হিসেবে এটি পৃথিবীর দ্বিতীয় ধনী দেশ। মাথাপিছু আয় ৭৯,৭৮৫ মার্কিন ডলার বা ৬১,৪৩,৪৪৫ টাকা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত বলে এ দেশের প্রচলিত মুদ্রা হলো ইউরো। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ফরাসি ভাষায় পাঠদান করা হয়। হাইস্কুলে পৌঁছার আগে শিখে নেয় জার্মান ভাষা। আর হাই স্কুলে পড়ালে যার প্রধান ভাষা ইংরেজি। তা ছাড়াও তাদের নিজস্ব ভাষা আছে ‘লিতজিবুয়িরগেস’। তবে স্থানীয় পত্রিকাগুলো সব ভাষায় তাদের প্রতিবেদন করে থাকে। প্রতিবছর ৮,৩৪,০০০ পর্যটক এ দেশ ভ্রমণ করে। এই দেশটির প্রধান আয়ের উৎস হল ব্যাংকিং খাত। এই ছোট্ট রাষ্ট্রিটিতে যেন ঠাসাঠাসি করে ২৫০টির বেশি ব্যাংক আছে। এখানকার ব্যাংকিং ব্যবস্থা ইউরোপীয় দেশগুলের মধ্যে সেরা। এমনকি বিশ্বের মধ্যে সেরা। এ দেশের জনগণ খুব বেশি স্মার্ট হিসাবে গণ্য করা হয়। লুক্সেমবার্গ ট্যাক্স-হেভেন বা করের-স্বর্গ নামে সুখ্যাত।

 

৩.      সিঙ্গাপুর

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ৬৩টি দ্বীপ ও সামান্য স্থলভূমি নিয়ে গঠিত দ্বীপ রাষ্ট্র সিঙ্গাপুর। আয়তন ৬৯৯ বর্গকিলোমিটার (বিশ্বে ১৮৯তম)। রাজধানীর নাম সিঙ্গাপুর সিটি। মাথা পিছু আয়ে পৃথিবীর তৃতীয় ধনী দেশ। ব্রিটেন থেকে ১৯৬৫ সালের ৯ আগস্ট স্বাধীনতা লাভ করে। মাথাপিছু আয় ৬১,৫৬৭ মার্কিন ডলার বা ৪৭,৪০,৬৫৯ টাকা। জনসংখ্যা ৫.৩ মিলিয়ন (বিশ্বে ১১৬তম)। মালয়, চীনা, ইংরেজি এবং তামিল ভাষা যৌথভাবে সিঙ্গাপুরের সরকারী ভাষা। সংসদীয় প্রজাতন্ত্রের কাঠামোয় সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী হলেন সরকারের প্রধান। সিঙ্গাপুরের সরকার সবসময়েই একটি স্বচ্ছ, দুর্নীতিমুক্ত সরকার হিসেবে বহির্বিশ্বে পরিচিত। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের মতে সিঙ্গাপুর বহুদিন ধরেই এশিয়ার সবচেয়ে দুর্নীতিমুক্ত দেশ। দ্রুত বর্ধিষ্ণু অর্থনীতির কারণে দেশটি এশিয়ান টাইগারের অন্যতম সদস্য। এশিয়ান টাইগারের অন্যতম দেশ-হংকং দক্ষিণ কোরিয়ার ও তাইওয়ান। সিঙ্গাপুর বন্দর বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ততম বন্দর। বিশ্বের চতুর্থতম বাণিজ্য বিনিময় কেন্দ্র এখানে অবস্থিত। পর্যটন সিঙ্গাপুরের অন্যতম প্রধান শিল্প এবং দেশটির অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখে। প্রতি বছর ১৫ মিলিয়ন পর্যটক দ্বীপরাষ্ট্রটি ভ্রমণ করে। সিঙ্গাপুরের মুদ্রার নাম সিঙ্গাপুরি ডলার।

 

৪.      নরওয়ে

উত্তর পশ্চিম ইউরোপের রাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র নরওয়ে। অফিসিয়াল নাম হচ্ছে কিংডম অব নরওয়ে। এখানে সাংবিধানিকভাবে রাজতন্ত্র প্রচলিত। স্বাধীনতা লাভ করে ১৯০৫ সালের ৭ জুন। রাজধানীর অসলো। নরওয়ের আয়তন হচ্ছে ৩৮৫,২৫২ বর্গ কিলোমিটার (বিশ্বে ৬১তম)। বর্তমান জনসংখ্যা ৪.৯ মিলিয়ন (বিশ্বে ১১৮তম)। রাষ্ট্রভাষা নরওয়েজীয়। ইউরোপের দ্বিতীয় জনবহুল রাষ্ট্র হচ্ছে নরওয়ে। নরওয়ের পূর্বে সুইডেন, দক্ষিণে ফিনল্যান্ড ও পশ্চিমে রাশিয়া অবস্থিত। নরওয়ের উত্তর আটলান্টিক মহাসাগর ও ব্যারেন্টস সাগরে জলসীমা আছে। মাথাপিছু আয় ৫৬,৬৬৯ মার্কিন ডলার বা ৪৩,৬৩,৫১৩ টাকা। ২০১২ সালের হিসাবে নরওয়ের জিডিপি হল ৪৯৯.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ইউরোপের গুটিকতক উন্নত দেশের মধ্যে অন্যতম নরওয়ে। দেশটির প্রধান আয়ের উৎস তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস প্রধান সম্পদ। একমাত্র ২০০৬ সালেই রাশিয়া এবং সৌদি-আরব নরওয়ের চেয়ে বেশি তেল রফতানি করেছিল। প্রতি বছর ২.৫ মিলিয়ন পর্যটক দেশটি ভ্রমণ করে। দেশটি ইউরোপিয়ার ইউনিয়নের সদস্যপদ লাভ করেনি। নরওয়ের মুদ্রার নাম ‘নরওয়েজীয় ক্রোন। নরওয়েরবাসী যে জ্বালানি ব্যবহার করে ৪৬.২৪ শতাংশ নবায়নযোগ্য শক্তি।

 

৫.      ব্রুনাই

দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার একটি রাজতান্ত্রিক ইসলামী দেশ। ১৯৬০-এর দশকের শেষ দিকে এটি এই অঞ্চলের একমাত্র দেশ হিসেবে ব্রিটিশ উপনিবেশ হিসেবে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৮৪ সালের পয়লা জানুয়ারি তারিখে এসে দেশটি স্বাধীন হয়। বন্দর সেরি বেগাওয়ান ব্রুনাইয়ের রাজধানী। তেল সম্পদে সমৃদ্ধ দ্বীপরাষ্ট্রটির আয়তন ৫,৭৬৫ বর্গকিলোমিটার (বিশ্বে ১৭২তম) এবং জনসংখ্যা ৪.১ মিলিয়ন। মাথাপিছু আয় ৫৪,৩৮৯ মার্কিন ডলার বা ৪১,৮৭,৯৫৩ টাকা। ব্রুনাইয়ের সুলতান হলেন একাধারে রাষ্ট্র ও সরকারের প্রধান। ১৯৫৯ সালের সংবিধান অনুযায়ী পাদুকা সেরি বাগিন্দা সুলতান হাজি হাসানাল বোলকিয়াহ মুইযাদ্দিন ওয়াদ্দাউল্লাহ হলেন দেশটির রাষ্ট্র প্রধান। ১৯৬০-এর দশকে একটি বিপ্লবের পর থেকে ব্রুনাইয়ে মার্শাল ল’ জারি হয়ে আছে। মালয় ভাষা ও ইংরেজি সরকারী ভাষা। মুদ্রার নাম ব্রুনায় ডলার। দেশটির প্রধান আয়ের উৎস হল, অশোধিত তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস বিদেশে রপ্তানি। এ খাত থেকে দেশটি ৯০ শতাংশ আয় আসে । এছাড়াও আছে কৃষি, ব্যাংকিং ও পর্যটন খাত। প্রতি বছর ২.৬ মিলিয়ন পর্যটক দেশটি ভ্রমণ করে।

 

৬.      হংকং

চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্যানতুন উপসাগরের উপকূলীয় এলাকায় মূল ভূখণ্ডের পাশ ঘেঁষে কতগুলো দ্বীপের সমন্বয়ে পোনিনসুলা বা দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে হংকং গঠিত। আয়তন ১,০৬২ বর্গ কিলোমিটার। জনসংখ্যা ৭.২ মিলিয়ন। ১৫৬ বছর ব্রিটিশদের অধীনে থাকার পরে ১৯৯৭ সালের পয়লা জুলাই হংকং মূল ভূখণ্ড চীনের সাথে মিলে যায়। বর্তমানে এটি চীনের বিশেষ স্বায়ত্তশাসিত প্রশাসনিক অঞ্চল। রাজধানীর নাম ভিক্টোরিয়া। সরকারি ভাষা চাইনিজ। হংকং এশিয়ার সবচেয়ে কর্মব্যস্ত শিল্প এলাকা। এখানকার শিল্পের মধ্যে রয়েছে সুতার বস্ত্র, বিদ্যুৎ, রেডিও-টেলিভিশনের সরঞ্জাম, প্লাস্টিক, গাড়ির টায়ার ইত্যাদি। এসব উৎপাদনের জন্য প্রায় হাজারোর্ধ্ব মিল কারখানা রয়েছে। শিল্প-বাণিজ্যেও ক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতির কারণে হংকংয়ের অবস্থান শীর্ষদের মধ্যে অন্যতম। যার কারণে হংকংয়ের মাথাপিছু আয় ৫২,২১৮ মার্কিন ডলার বা ৪০,২০,৭৮৬ টাকা যা অধিকাংশ পশ্চিমাদেশের তুলনায় বেশী। দেশটি বিশ্বের অষ্টম বৃহৎ বাণিজ্য কেন্দ্র। ব্যবসায়িক গুরুত্ব ছাড়াও হংকং এর পর্যটন আকর্ষণ কম নয়। প্রতি বছর ৫১.৩ মিলিয়ন পর্যটক এখানে ভ্রমণে আসেন। এর মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব অনেক গুণে বৃদ্ধি পায়।

 

৭.      যুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা উত্তর আমেরিকায় অবস্থিত পঞ্চাশটি রাজ্য ও একটি ফেডেরাল ডিসট্রিক্ট নিয়ে গঠিত এক যুক্তরাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র। আয়তন ৯.৮৩ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার (বিশ্বে চতুর্থ)। জনসংখ্যা প্রায় ৩১১ মিলিয়ন (বিশ্বের তৃতীয়)। বহু দেশ থেকে বিভিন্ন জাতির মানুষের অভিনিবেশের ফলে দেশটি একটি বহুসংস্কৃতিবাদী দেশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি বিশ্বের বৃহত্তম জাতীয় অর্থনীতি। মাথাপিছু আয় ৫১,২৪৮ মার্কিন ডলার বা ৩৯,৪৬,০৯৬ টাকা। সারা বিশ্ব মার্কিন মুদ্রা ‘মার্কিন ডলার’-এ অন্তঃলেনদেন করে থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৭৭৬ সালের ৪ জুলাই স্বাধীন হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই দেশ প্রথম পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর বিশ্বের একমাত্র মহাশক্তিধর রাষ্ট্রে পরিণত হয়। বিশ্বের মোট সামরিক ব্যয়ের দুই-পঞ্চমাংশ খরচ করে এই দেশ। ১৯৩০ এর দশকে ও একবিংশ শতকের প্রথম দশকের শেষে মার্কিন অর্থনীতি ‘অর্থনৈতিক মহামন্দা’র স্বীকার হয়। মার্কিন জ্বালানির ৫.৬৫ শতাংশ নবায়নযোগ্য শক্তি। প্রতিবছর ৫৯.৮ মিলিয়ন পর্যটক যুক্তরাষ্ট্রে আসেন।

 

৮.      সংযুক্ত আরব আমিরাত

মধ্যপ্রাচ্যের সাতটি স্বাধীন রাষ্ট্রের একটি ফেডারেশন। আয়তন ৮৩,৬০০ বর্গকিলোমিটার (বিশ্বে ১১৬তম)। জনসংখ্যা ৯.৩ মিলিয়ন (বিশ্বের ৯৩তম)। আমিরাতের শাসনকর্তার পদবী আমির। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাতটি আমিরাতের নাম হল আবু ধাবি, আজমান, দুবাই, আল ফুজাইরাহ, রাআস আল খাইমাহ, আশ শারিকাহ এবং উম্ম আল ক্বাইওয়াইন। আবু ধাবি শহর ফেডারেশনের রাজধানী এবং দুবাই দেশের বৃহত্তম শহর। ১৯৬১ সালে ১৯ জুন ব্রিটেন থেকে দেশগুলি স্বাধীনতা লাভ করে। পেট্রোলিয়াম আবিষ্কারের আগ পর্যন্ত দেশটি ব্রিটিশ সরকারের অধীন কতগুলি অনুন্নত এলাকার সমষ্টি ছিল। খনিজ তেল শিল্পের বিকাশের সাথে সাথে এগুলির দ্রুত উন্নতি ও আধুনিকায়ন ঘটে। দেশটির খনিজ তেলের বেশির ভাগ অংশ আবু ধাবিতে পাওয়া যায়। সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাথাপিছু আয় ৪৯,৮৯৩ মার্কিন ডলার বা ৩৮,৪১,৭৬১ টাকা। মুদ্রার নাম ইউএই দিরহাম। তেল শিল্পের কারণে এখানকার অর্থনীতি স্থিতিশীল এবং জীবনযাত্রার মান বিশ্বের সর্বোচ্চগুলির একটি। প্রতি বছর ১০ মিলিয়ন পর্যটক এদেশে ভ্রমণে আসেন।

 

৯.      সুইজারল্যান্ড

ইউরোপের দেশ হলেও এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য নয়। আয়তন ৪১,২৮৫ বর্গকিলোমিটার (বিশ্বে ১৩৩মত)। মুদ্রার নাম সুইস ফ্রাঁ এবং মাথাপিছু বাৎসরিক আয় ৪৬,৮৬৪ মার্কিন ডলার বা ৩৬,০৮,৫২৮ টাকা। জনসংখ্যা ৭.৯ মিলিয়ন (বিশ্বে ৯৬তম)। রাজধানীর নাম বার্ন। আল্পস পর্বতমালা ও প্রশস্ত হ্রদ দেশটিকে অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভূষিত করেছে। বিশ্বের পর্যটকদের জন্য এটি বিশেষ আকর্ষণীয় একটি দেশ। প্রতিবছর ৮.৬ মিলিয়ন পর্যটক দেশটি ভ্রমণ করেন। সুইস ব্যাংকসমূহ কালো টাকা নিরাপদের সংরক্ষণের জন্য কুখ্যাত। দেশটির কোন নিয়মিত সেনাবাহিনী নেই। সুইস অর্থনীতি পৃথিবীর অন্যতম স্থিতিশীল অর্থনীতি। দীর্ঘমেয়াদি মুদ্রা নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দেশটির অর্থনৈতিক নীতির অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য, যা সুইজারল্যান্ডকে বৈদেশিক বিনিয়োগের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে পরিচিত করে তুলেছে। বৈদেশিক বিনিয়োগের উপর সুইজারল্যান্ডের অর্থনীতির নির্ভরতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। শিল্প ও বাণিজ্য সুইজারল্যান্ডের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। এছাড়া দেশটির সেবা খাত ক্রমেই অর্থনীতির একটি বড় অংশ হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। সুইসরা যে জ্বালানি ব্যবহার করে ২০.৪২ শতাংশ নবায়নযোগ্য শক্তি।

 

১০.    কুয়েত

আরব রাষ্ট্র কুয়েত ১৯৬১ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ। জনসংখ্যা ২,৭৯,১৩২ জন (বিশ্বে ১৩৯তম)। আয়তন ১৭,৮১৮ বর্গকিলোমিটার (বিশ্বে ১৫৭তম)। রাষ্ট্রভাষা আরবি। মুদ্রার নাম কুয়েতি দিনার। রাজধানী কুয়েত সিটি। মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশ কুয়েতের সরকারী ভাষা ‘আদর্শ আরবি’। ‘আদর্শ আরবি’ ভাষাটি ধ্রুপদী আরবি ভাষার একটি আধুনিকায়িত রূপ। কুয়েতের জনগণের প্রায় ৮৫ শতাংশ ভাব মৌখিক আদান-প্রদানের জন্য উপসাগরীয় আরবি ভাষা ব্যবহার করেন। বিদেশী ভাষা হিসেবে ইংরেজি ভাষা বহুল প্রচলিত। কুয়েতের প্রধান আয়ের উৎস প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলন ও রফতানি। তেল মজুতকারী দেশগুলোর মধ্যে কুয়েত পঞ্চম। বিশ্বের যত তেল মজুত আছে তার শতকরা ১০ ভাগ আছে কুয়েতে। সরকারি রাজস্বের শতকরা ৮৫ ভাগ আসে তেল রফতানি থেকে। এটি কর বিহীন একটি দেশ। মাথাপিছু আয় ৪৩,৭৭৩ দশমিক ৮৮ মার্কিন ডলার। ২০১১ সালের হিসাবে কুয়েতের গ্রোস ডোমেসটিক প্রোডাক্ট (জিডিপি) হল ১৭৬ দশমিক ছয় বিলিয়ন মার্কিন ডলার। মধ্যপ্রাচ্যের দ্বিতীয় মুক্ত অর্থনীতির দেশ হিসেবে ওই অঞ্চলের দ্রুত বর্ধিষ্ণু অর্থনীতির অন্যতম কুয়েতের অর্থনীতি।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *