বিশ্বের মোট এনার্জি কনজাম্পশনের সিংহভাগ এখনো জীবাশ্ম জ্বালানি থেকেই নির্বাহ করা হয়। এখনো কোনো সাস্টেইনেবল প্রযুক্তি আবিষ্কৃত হয়নি, যেটা এনার্জি সাপ্লাইয়ে পেট্রোলিয়াম এন্ড মাইনিং সেক্টরকে রিপ্লেস করতে পারবে। যেহেতু ওয়ার্ল্ডের বড় বড় নামকরা কোম্পানিগুলো পেট্রোলিয়াম ইন্ডাস্ট্রির সাথে জড়িত, সেহেতু ক্যারিয়ার হিসেবে পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে অনেক উজ্জ্বল কিছু করা সম্ভব।
পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার
পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারিং কী
ভূ-অভ্যন্তরস্থ রিজার্ভার থেকে তেল,গ্যাস ও অন্যান্য পেট্রোলিয়াম জাতীয় পদার্থের রিসার্ভ অনুসন্ধান, পরিমাপ ও কূপ খননের কাজ করে থাকেন। এছাড়া কূপ থেকে পেট্রোলিয়াম জাতীয় পদার্থ উত্তোলনের সকল কারিগরি নকশা ও যন্ত্রাংশের রক্ষণাবেক্ষণের যাবতীয় কার্যক্রম পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাঝে পড়ে।
পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কাজের সুযোগ
২০২২ সালের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের টোটাল এনার্জি কনজাম্পশনের ৩১.২% আসে তেল উৎস থেকে, ২৭.২% আসে কয়লার উৎস থেকে, ২৪.৭% আসে প্রাকৃতিক গ্যাস উৎস থেকে। অর্থাৎ, সর্বমোট ৮৩.১% এখনো জীবাশ্ম জ্বালানি থেকেই নির্বাহ করা হয়। বাকি ১৬.৯% এনার্জি সাপ্লাইয়ে হাইড্রোপাওয়ার, নিউক্লিয়ার, সোলার, উইন্ড ও অন্যান্য উৎসগুলো নিয়োজিত রয়েছে।
বিশ্বে এখনো কোনো সাস্টেইনেবল প্রযুক্তি আবিষ্কৃত হয়নি, যেটা এনার্জি সাপ্লাইয়ে পেট্রোলিয়াম এন্ড মাইনিং সেক্টরকে রিপ্লেস করতে পারবে। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত গ্যাসফিল্ড ৩০টি। কয়লা খনি ৫টি। সাম্প্রতিক গ্যাসের রিজার্ভগুলো দেশীয় কোম্পানির দেশীয় ইঞ্জিনিয়ার দ্বারা এক্সপ্লোর ও এক্সট্রাক্ট হচ্ছে। অন প্রোডাকশন কোল মাইনের পাশাপাশি বাংলাদেশে আছে মধ্যপাড়া হার্ড রক (গ্রানাইট) মাইন।
বাংলাদেশের কয়লাগুলোর মান বিটুমিনাস (অতি উৎকৃষ্ট), এবং বাংলাদেশে প্রাপ্ত গ্যাসে মিথেনের পরিমাণ সর্বাধিক এবং সালফারের পরিমাণ সর্বনিম্ন। ওয়ার্ল্ড-এর সবচেয়ে হায়েস্ট পেয়িং জব পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য অনেক বছর ধরেই নির্ধারিত। এই ফিল্ডে জবের সবচেয়ে মজার বিষয়টা হলো- মাসের অর্ধেক সময় ছুটি। অর্থাৎ ১৫ দিন ওয়ার্কিং ডে হলে ১৫ দিন ছুটি।
তবে, জব লোকেশনগুলো একটু রিমোট এলাকায় হয় সাধারণত। যেহেতু ওয়ার্ল্ডের বড় বড় নামকরা কোম্পানিগুলো পেট্রোলিয়াম আর মাইনিং ইন্ডাস্ট্রির সাথে জড়িত, তাই ক্যারিয়ার হিসেবে অনেক উজ্জ্বল কিছু করা সম্ভব। সিনোপেক, মেল, এক্সন মবিল, সাউডি আরামকো, বিপি, টোটাল, সেভরন-এর মতো জায়গায় ক্যারিয়ার তৈরির বিশাল সুযোগ আছে।
গেলেস্কোর এক্সট্রেটা, বিএইসপি বিলিটন, রিও টিনটো, চাইনা সেনহুয়া অ্যানার্জি এগুলো ওয়ার্ল্ড মাইনিং ইন্ডাস্ট্রিকে নেতৃত্ব দিচ্ছে; সেখানেও রয়েছে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ। বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, কয়লা, পাথরের অধিকাংশ রিজার্ভ পেট্রোবাংলা, বাপেক্স ও এদের অধীনে কিছু কোম্পানি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
এদের সাথে চুক্তিবদ্ধ মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি সেভরন, গেজপর্ম, কনকোফিলিক্স, এদের কার্যক্রম আছে। প্লামবারজারের মতো কোম্পানি বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। এসব ইন্ডাস্ট্রিতে পেট্রোলিয়াম অথবা মাইনিং ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ক্যারিয়ারের ভালো স্কোপ আছে। তা ছাড়া আমাদের সমুদ্রে রয়েছে বিশাল সম্ভাবনাময় গ্যাস ব্লক। এগুলো উঠানোর জন্য প্রচুর প্রকৌশলী প্রয়োজন হবে।
পেট্রোলিয়াম অথবা মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারং জব সেক্টর কখনোই হাতের নাগালে থাকে না। হায়েস্ট পেইড ইঞ্জিনিয়ার হতে চাইলে এবাভ এভারেজ কিছু হতে হবে। রেজাল্ট, স্কিল, নলেজ কোথাও না কোথাও, কিংবা সবখানে এগিয়ে থাকতে হবে। এনভায়রনমেন্ট, হেলথ এন্ড সেফটি, মেইন্টেন্যান্স ইত্যাদি পদে বিভিন্ন প্রাইভেট ও সরকারী রিফাইনারী কোম্পানী জব অফার করে।
পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার কী কী কাজ করে থাকেন?
একজন পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার মূলত যেকোনো প্রাকৃতিক এনার্জি ইন্সপেকশন, হাইড্রোকার্বন ডেভেলপমেন্ট, মেইন্টেনেন্স, গ্যাস ও ফুয়েল ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি নিয়ে কাজ করে থাকেন। চলুন জেনে নেয়া যাক একজন পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারের কাজগুলো,
- বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ ও পানির মিশ্রণ থেকে তেল/গ্যাস আলাদা করে উত্তোলনের প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করা;
- হাইড্রোকার্বনের জন্য বিভিন্ন ধরণের এনার্জি অডিটরিং হার্ডওয়্যার ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট করা।
- বিভিন্ন হার্ডওয়্যার ও ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের আপগ্রেড করা।
- বিভিন্ন হার্ডওয়্যারের ইমপ্লিমেন্টেশন স্পিড, পারফর্ম্যান্স ও ফাংশনালিটি বৃদ্ধি করা।
- হার্ডওয়্যার ট্রাবলশ্যুট করা ও কম্প্যাটিবিলিটি টেস্ট করা।
- টেকনিক্যাল এক্সপ্লোয়েশনে দলগতভাবে কাজ করা।
- টেকনিক্যাল অবস্থার দেখাশোনা করা ও গ্যাস ও ফুয়েল মেইন্টেনেন্স করা।
- ন্যাচারাল ডেভেলপমেন্ট সাইডের দেখাশোনা করা ও সমস্যা থাকলে তার সমাধান করা।
- ফুয়েল গজ, উইং ফ্ল্যাপ, প্রেসার ইন্ডিকেটরসহ বিভিন্ন মেকানিক্যাল ইন্সট্রুমেন্টের দেখাশোনা করা।
- ন্যাচারাল সিস্টেম, ওয়াইন্ড ফ্লো, হাইড্রোকার্বনের ইঞ্জিন পাওয়ার এবং মূল ইলেক্ট্রিক্যাল সিস্টেমের মনিটরিং করা।
- এনার্জি সিস্টেমের ফরেনসিক অ্যানালাইসিস করা।
- বিভিন্ন সিস্টেম, সফটওয়্যার, হার্ডও্য়্যার এবং নেটওয়ার্কের সিকিউরিটি প্রদান করা।
- সিস্টেম ও নেটওয়ার্কের অনধিকার প্রবেশ, মডিফিকেশন ও ডেস্ট্রাকশন ফেজ থেকে রক্ষা করা।
- বিভিন্ন স্থান থেকে পেট্রোলিয়াম জাতীয় পদার্থ আহরোণের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা, সঞ্চিত খনিজের পরিমাণ জরিপ এবং উত্তোলন খরচ এর হিসাব করা;
- বিভিন্ন সিস্টেমের কন্ট্রোল স্ট্রাকচার, রিসোর্স ও এক্সেস প্রিভিলিজেস রক্ষা করা।
- সিকিউরিটি আপগ্রেড সম্পর্কে রিসার্চ করা।
- সাইটের সকল কার্যক্রম তদারকি করা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা;
- কম খরচে খনি থেকে পেট্রোলিয়াম জাতীয় পদার্থ উত্তোলনের জন্য যন্ত্রপাতি ডিজাইন ও পদ্ধতি উদ্ভাবন করা;
- তেল ও গ্যাস কূপেও খনন কার্য পরিচালনা করা;
যোগ্যতা
পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করতে চাইলে পেট্রোলিয়াম ও মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং এ স্নাতক/স্নাতকোত্তর ডিগ্রী থাকতে হবে। কেমিক্যাল/মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ স্নাতক করে পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারিং এ স্নাতকোত্তর ডিগ্রী থাকলেও কাজের সুযোগ পাওয়া যায়।
একজন দক্ষ পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার হতে হলে যেসব দক্ষতা ও জ্ঞান প্রয়োজন
একজন পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে, আপনাকে যে সকল বিষয়ে পারদর্শী হতে হবে তা হচ্ছে,
- একজন পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারকে আইটির উপর বেশ ভালো দক্ষতা থাকতে হবে। বিভিন্ন ধরণের হার্ডওয়্যার ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যারের উপর দক্ষ হতে হবে। যেমন IPM, Petrel, Matlab, AutoCAD, Ansis;
- টেকনিক্যাল ও নন-টেকনিক্যাল বিষয় সম্পর্কে অভিজ্ঞ হতে হবে।
- ব্যবসায়িক দক্ষতা থাকতে হবে, কোন স্থান থেকে পেট্রোলিয়াম উত্তোলন লাভবান হবে কিনা এই ধরনের হিসাব-নিকাশে পটু হতে হবে;
- অ্যানালিটিক্যাল দক্ষতা থাকতে হবে।
- দলগতভাবে কাজ করার মানসিকতা এবং দলকে নেতৃত্ব দেবার যোগ্যতা থাকতে হবে;
- যেকোন নকশা সমগ্র দলকে বর্ননা করে বোঝাবার দক্ষতা থাকতে হবে;
- দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে এমনকি বিরুপ পরিবেশেও কাজ করার মানসিকতা থাকতে হবে;
- ক্রিয়েটিভ থিংকিং করার দক্ষতা থাকতে থাকবে।
- নিত্যনতুন টেকনোলজির সাথে আপডেটেড থাকতে হবে।
- অসাধারণ স্ট্র্যাটেজিক ও প্ল্যানিং করার দক্ষতা থাকতে হবে।
- ইলেক্ট্রনিক সার্কিট অ্যানালাইসিস, ডিজিটাল সিগন্যাল প্রসেসিং, ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক্স ইক্যুইপমেন্টের উপর দক্ষ হতে হবে।
- ন্যাচারাল সায়েন্সের উপর যথেষ্ট দক্ষ হতে হবে।
- বিভিন্ন ডিভাইসের জন্য মাইক্রোপ্রসেসর ও অন্যান্য মাইক্রোচিপ ইক্যুইপমেন্ট তৈরি করার দক্ষতা থাকতে হবে।
- গ্যাস ও ফুয়েল ম্যানেজমেন্টের উপর দক্ষ হতে হবে।
উপরের দক্ষতাগুলো ছাড়াও, একজন পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারের কিছু সাধারণ দক্ষতা থাকা উচিৎ। সেগুলো হচ্ছে,
- জটিল বিষয় নিয়ে চিন্তাভাবনা করার দক্ষতা থাকতে হবে।
- বিভিন্ন সমস্যায় দ্রুত সমাধান বের করার ক্ষমতা থাকতে হবে।
- যেকোনো বিষয়ে আস্থা রাখার মতো মন মানসিকতা থাকতে হবে।
- বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক অবস্থায় খাপ খাওয়ানোর দক্ষতা থাকতে হবে।
- অসাধারণ যোগাযোগ দক্ষতা থাকতে হবে।
- যেকোনো বিষয়ে বিচক্ষণতার সাথে নেগোসিয়েশন করার দক্ষতা থাকতে হবে।
- অসাধারণ ইন্টারপার্সোনাল দক্ষতার অধিকারী হতে হবে।
পড়াশোনা
বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেট্রোলিয়াম এন্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং এ স্নাতক ডিগ্রী দেওয়া হয়:
- মিলিটারি ইন্সটিটিউট অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি(MIST);
- শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(SUST);
- চট্রগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(CUET);
- যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(JUST)।
এছাড়া বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে(BUET) স্নাতকোত্তর পড়বার সুযোগ আছে।
উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ
বিশ্বের নামিদামি এবং হ্যায়েস্ট র্যাঙ্কের বিশ্ববিদ্যালয়ে পেট্রলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে উচ্চতর পড়াশোনা হয়। সেসব ইউনিভার্সিটিগুলো পেট্রোলিয়ামের ওপর ব্যাচেলর, মাস্টার্স, পিএইচডি ডিগ্রি দিয়ে থাকে। এছাড়া উন্নত প্রায় সকল দেশেই মাইনিং নিয়ে উচ্চতর গবেষণা হয়ে থাকে। ইঞ্জিনিয়ারিং মানেই হলো বইয়ের নলেজের চেয়ে প্র্যাকটিক্যাল নলেজকে প্রাধান্য দেওয়া। তাই এই ফিল্ডেও রয়েছে নিজেকে মেলে ধরার, ক্যারিয়ার করার বিশাল সুযোগ।
কাজের ক্ষেত্র
বাংলাদেশে পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারদের কাজের সুযোগ অনেকটা সংকুচিত। অনেক স্থানে চাকুরীর জন্য মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে প্রতিযোগিতা করতে হয়। সরকারি প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা ও এর অধীনস্ত অধিকাংশ কোম্পানিতে কাজের সুযোগ আছে। কোম্পানি গুলো হল-
- বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানী লিমিটেড;
- সিলেট গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানী লিমিটেড;
- সিলেট গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানী লিমিটেড;
- তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড;
- বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেমস লিমিটেড;
- জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিষ্ট্রিবিউশন সিস্টেমস লিমিটেড;
- রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানী লিমিটেড;
- পশ্চিমাঞ্চলীয় গ্যাস কোম্পানী লিমিটেড;
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ইন্সটিটিউটে গবেষণার সুযোগ আছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের অধীনস্ত ইস্টার্ন রিফাইনারি, পদ্মা/মেঘনা/যমুনা অয়েল কোম্পানিতে কাজের সুযোগ আছে। এছাড়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে সেভরন, হেলিভারটন, ক্রিস এনার্জি তে পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার প্রয়োজন হয়।
একজন পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারের আয়রোজগার
যদি আপনি একজন পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাহলে আপনার বাৎসরিক বেতন এন্ট্রি লেভেল ও সিনিয়র লেভেলে ভিন্ন ভিন্ন হবে।
একজন পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার সরকারি/ বেসরকারি তেল-গ্যাস অনুসন্ধানকারী কোম্পানি, পেট্রোলিয়াম কোম্পানিতে অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার/ অপারেশনস ইঞ্জিনিয়ার/ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসাবে কর্মজীবণ শুরু করেন। শুরুতে বেতন ২০-৫০ হাজার টাকা হতে পারে। দক্ষ ও যোগ্য হলে ৪/৫ বছরে বেতন এক লাখ টাকাও হতে পারে। সরকারি প্রতিষ্ঠান গুলোতে সহকারী ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নবম গ্রেড এর বেতন দিয়ে শুরু হয়। যেমন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ইন্সটিটিউট এ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে বেতন ২২-৫৩ হাজার টাকা। মেঘোনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডে ৬ বছরের অভিজ্ঞ সিনিয়র অপারেশন্স ইঞ্জিনিয়ারের বেতন ৫৭ হাজার টাকা। ১০/১২ বছরের চাকুরীর অভিজ্ঞতা আর দক্ষতা থাকলে বেতন ২/৩ লাখ টাকা হওয়াও সম্ভব।
পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারের ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে?
বাংলাদেশে পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারের কাজের সুযোগ কম হলেও বিদ্যমান কাজের সুযোগ সব বড় মাপের প্রতিষ্ঠান গুলোতে। পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পেট্রোবাংলা, বাপেক্স সহ গ্যাস কোম্পানিগুলোতে উচ্চ পদে কাজের সুযোগ আছে। এছাড়া বিদ্যুৎ ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন অনুসন্ধানমূলক প্রোজেক্টে দক্ষ ও অভিজ্ঞ পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়াররা কাজ করতে পারেন। বহুজাতিক তেল-গ্যাস অনুসন্ধানকারী কোম্পানিগুলোতে অনেক টাকার বেতন ও সুবিধাসহ চাকুরী করা সম্ভব। তবে এসব কোম্পানি চাকুরী অনেকটা অনিশ্চিত এবং সরকারের সাথে কোম্পানির চুক্তির মেয়াদের উপর নির্ভর করে। তবে বিদেশে পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারদের অনেক চাহিদা। বিদেশে আরো উচ্চমানের ডিগ্রী নিলে কাজের সুযোগ অনেক প্রসারিত হয়।
একজন সিনিয়র লেভেলের পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার পূর্বে আপনার অভিজ্ঞতার ঝুলিতে, মবিলিটি হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, সিস্টেমস অ্যাপ্লিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকানিক্যাল আর্কিটেকচার, মাইক্রোচিপ আর্কিটেকচার, সেমিকন্ডাক্টর আর্কিটেকচারের মতো কিছু পেশার দক্ষতা ও যোগ্যতা থাকলে, পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার হওয়াটা অনেক সহজ হয়ে যাবে আপনার জন্য।
Leave a Reply