আমাদের দেশে সারা বছরই বিভিন্ন ধরণের ফল পাওয়া যায়। ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এই সব ফলের। অল্প পুঁজি নিয়ে যেকোনো ব্যক্তি ফলের ব্যবসা করে স্বাবলম্বী হতে পারেন।
সম্ভাবনা : নানা রকম ফলের চাহিদা সারা বছরই থাকে। ফল হচ্ছে সুস্বাদু ও পুষ্টিকর খাবার। ছোট-বড় সবাই কোনো না কোনো ফল পছন্দ করে। আমাদের দেশে বেশ কিছু মৌসুমি ফল পাওয়া যায়। আম, লিচু, কাঁঠাল, আনারস, জলপাই, কামরাঙা ইত্যাদি মৌসুমি ফলে প্রচুর ভিটামিন পাওয়া যায়। এসবের পাশাপাশি সারা বছর যেসব ফল পাওয়া যায়, সেসব ফলের প্রচুর চাহিদা থাকে। এ ছাড়া অনেক ফল বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। যেমন – আপেল, নাশপাতি, মাল্টা, আঙুর ইত্যাদি। ফল সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। ছোট-বড় সবার কাছেই বিভিন্ন রকম ফল প্রিয়। এসব ফল বিক্রি করে আয় করা সম্ভব।
স্থান নির্বাচন : ফলের দোকান দেওয়ার জন্য উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করতে হবে। বাজারের কেন্দ্র বা যেসব স্থানে লোক সমাগম হয় সে রকম স্থানে ফলের দোকান দিতে হবে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশনের কাছে বা হাসপাতালের সামনে ফলের দোকান দিলে ব্যবসা ভালো চলবে। এ ছাড়া আবাসিক এলাকায় চৌরাস্তার কাছে ফলের দোকান দেওয়া যেতে পারে। আমাদের দেশের শহর-গ্রাম সবখানেই ফলের দোকান দেখা যায়। যে কোনো ব্যক্তি নিজের কর্মসংস্থানের জন্য ফলের ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
মূলধন : ফলের দোকান দেওয়ার জন্য স্থায়ী উপকরণ কিনতে ২-৩ হাজার টাকার প্রয়োজন হবে। এ ছাড়া প্রতি সপ্তাহে ফল কেনার জন্য ৫-৬ হাজার টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। দোকানঘর ভাড়া নিতে চাইলে দোকানঘরের পজিশন ও ভাড়া বাবদ আরও কিছু টাকার প্রয়োজন হবে। যদি ব্যক্তিগত পুঁজি না থাকে, তা হলে মূলধন সংগ্রহের জন্য নিকটাত্মীয়স্বজন, ঋণদানকারী ব্যাংক বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের (এনজিও) সঙ্গে যোগাযোগ করা যেতে পারে। এসব সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (এনজিও) শর্তসাপেক্ষে ঋণ দিয়ে থাকে।
প্রশিক্ষণ : ফলের দোকান দেওয়ার জন্য তেমন কোনো প্রশিক্ষণের প্রয়োজন নেই। তবে অভিজ্ঞ কারো সঙ্গে যোগাযোগ করে ফলের ব্যবসাসংক্রান্ত খুঁটিনাটি জানা যাবে।
ফলের দোকান পরিচালনার নিয়ম : দোকান নির্বাচনের পর দোকানে কাঠের শেলফ বা তাকগুলো দেয়ালঘেঁষে সাজিয়ে নিতে হবে। দোকানের সামনের দিকে কাঠের টেবিল রাখতে হবে। যেসব স্থানে পাইকারি মূল্যে টাটকা ও প্রাকৃতিক উপায়ে পাকা ফল বিক্রি করে, সেখান থেকে ফল সংগ্রহ করতে হবে। কাঠের শেলফ বা তাকে বিভিন্ন ফল একটার ওপর আরেকটা রেখে সাজাতে হবে। এভাবে আপেল, কমলা, নাশপাতি, মাল্টা ইত্যাদি ফল সাজিয়ে রাখা যায়। বড় ফল যেমন – তরমুজ, নারকেল, বাঙ্গি ইত্যাদি টেবিলের ওপর আলাদা আলাদাভাবে সাজিয়ে রাখতে হবে। আমলকী, জলপাই, কামরাঙা, বরই ইত্যাদির মতো ছোট ফল ঝুড়িতে করে টেবিলের ওপর সাজিয়ে রাখতে হবে। যেসব ফল ওজন হিসেবে বিক্রি করা হয়, সেসব ফল বিক্রি করার সময় দাঁড়িপাল্লায় মেপে দিতে হবে। হালি বা ডজন হিসেবে কিছু ফল বিক্রি করা হয়। যেমনÑ কলা, আপেল, কমলা ইত্যাদি। এসব ফল সঠিকভাবে গুনে দিতে হবে। বিক্রি করা ফল কাগজের ঠোঙায় করে বিক্রেতাকে দিতে হবে।
সাবধানতা : ক্রেতার কাছে পৌঁছানোর আগে খুবই সতর্কতার সঙ্গে ফল সংগ্রহ করতে হবে, যেন নষ্ট ফল না থাকে। টাটকা ও পাকা ফল বিক্রি করতে হবে। ফল সাজিয়ে রাখার আগে ভালো করে মুছে রাখতে হবে। প্রাকৃতিক উপায়ে পাকা ফল দোকানে রাখতে হবে। জাঁক দিয়ে পাকা ফল বিক্রি করা উচিত নয়।
আয় ও লাভের হিসাব : প্রতি সপ্তাহে ৫-৬ হাজার টাকার ফল কিনলে সব খরচ বাদ দিয়ে ৭-৮ হাজার টাকা আয় করা যায়। এতে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ২ হাজার টাকা লাভ করা সম্ভব হবে।
Leave a Reply