তিনটি শব্দ বদলে দিতে পারে ক্যারিয়ারের গতিপথ

সৃষ্টি
সৃষ্টি করতে পারার ক্ষমতা আপনাকে নিয়ে যাবে আপনার লক্ষ্যের চূড়ায়। কোনো কিছু সৃষ্টি করা মানেই নিজের পরিধির বিস্তার করা। বেশিরভাগই মানুষই ভুল করেন এটা ভেবে যে, তারা নিজেদের মানি মেকিং মেশিন করে সময়কে টাকায় রূপান্তরিত করবেন। যেটার আরেক নাম চাকরি। এটা গোটা জীবনটাকেই একটা গোলকধাঁধায় ফেলে দেয়। যদি ওই সময়টাকে আপনি এমন কোনো জিনিসের পেছনে ব্যয় করেন, যাতে সেই জিনিসটির মূল্য বাড়ে, তাহলে সেটিই হবে প্রকৃত বিনিয়োগ; যা আপনাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে। আপনি যখন ঘুমাবেন, তখন সে আপনার হয়ে কাজ করবে। নিজের ভবিষ্যতের ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকবে শুধু একা আপনার – আমি কী করে একজন প্রোগ্রামার হব? প্রোগ্রাম করে? কী করে একজন উদ্যোক্তা হব? কোম্পানি খুলে, সঠিক কিছু বানান। তাহলেই আর সিভি দরকার পড়বে না। এমন কাজ করুন, যা চোখে পড়বে। আপনিও তাহলে চোখে পড়ে যাবে আপনার প্রোগ্রাম কিংবা আপনার কোম্পানি – এসবই আপনার জীবনকে, আপনাকে আরও মূল্যবান করে তুলবে। ঠিক যেন দক্ষতা বাড়ছে।

বৃহৎ
না চাইলেও ক্যারিয়ারে যে কোনো মোড়ে গিয়ে বাজি ধরতে হয়। প্রত্যেকটি বাজিতে সবাই সব সময় জিততে চায়। কিন্তু হয় কি? হোক বা না হোক, বাজিটা সব সময় বড় ধরতে হয়। বড় বাজি ধরার ফর্মুলাটা অবশ্য খুব একটা জনপ্রিয় নয়। কিন্তু তাতে কী? কথা হলো, যা ভাবছি, যেমনটা পরিকল্পনা করেছি, তেমনটা সব সময় হবে না। ইনফ্যাক্ট বেশিরভাগ সময়েতেই হবে না। কিন্তু লক্ষ করলেই দেখা যাবে, কোনো পরিকল্পনা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়ে গেল, এমনটাও হয় না সব সময়। ফলে সাফল্যের রেশটাও থেকে যায় পাশাপাশি। এই প্রক্রিয়ায় স্রেফ বড় বাজি ধরার কারণেই, আপনার স্কিলটাও বাড়বে – এমনটি যদি আপনি করে যান, বারবার, একদিন না একদিন সফল হবেনই। আর একটা বড় সাফল্য তো জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।?

ব্যাখ্যা
দুনিয়াদারির অবশ্যই একটা মানে আছে। কিন্তু আপনি যেভাবে ভাবছেন বা চাইছেন, ঠিক সেইভাবে নয়। কোনো কিছু পাওয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম শেষ কথা নয়, স্মার্ট হওয়াটা শেষ কথা নয় বা অন্তর থেকে কামনা করাটাও শেষ কথা নয়। জীবনের অভিজ্ঞতায় একদিন বুঝে যাবেন এসব সূচক আসলে ভুল। যদি ভেবে বসে থাকেন, আপনার চারপাশের জগৎটা যুক্তি মেনে চলবে, তাহলে আপনি হতাশ হয়ে পড়বেন। কী হওয়া উচিত ছিল, আর কী হলো, তা নিয়ে অঙ্ক কষতে বসলে জীবনভর কষ্ট পাওয়া ছাড়া আর কিছুই হাতে থাকবে না। ফলে কোনো কিছু পাওয়ার জন্য যেটা দরকার, সেটা হলো নিজেকে বোঝা, নিজেকে ব্যাখ্যা করা। আপনি একদিন নিজেই বুঝে যাবেন, কী করতে হবে, কীভাবে করতে হবে, আর কেন সেটা করতে হবে। কোনো কিছু করতে ব্যর্থ হলে, কেন ব্যর্থতা সেটাও বুঝে যাবেন। আমাদের চারপাশে যাদের দেখি, তাদের বেশিরভাগই ব্যর্থতার দায় অন্যের ওপর চাপিয়ে দেয়। ভালো চাকরি হলো না ‘মামা-চাচা নেই’। হয়তো প্রমোশন হলো না, বলে দিল, ‘বস তো আমার ভালো কাজ দেখতে পায় না।’ ব্যবসা খারাপ যাচ্ছে, বলে দিলেন, ‘এ দেশে ব্যবসা করা যায়?’ বাইরের কোনো কিছুর ওপর ব্যর্থতার দায় চাপিয়ে তাৎণিক আরাম হয়তো মেলে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রাপ্তি হয় যন্ত্রণা আর প্রত্যাখ্যান। তাই ব্যর্থতার ক্ষেত্রে অজুহাত নয়, দরকার নিজের ব্যাখ্যা। নিজের কাছে জানতে চাইতে হবে, কেন এমন হলো। গোটা ব্যাপারটিকে কি অন্যভাবে করা যেত না? আর যদি নিজের কাছে ব্যাখ্যায় কোনো কিছু মনে হয়, আপনার আয়ত্তের বাইরে, তাহলে সেটা আপনার জীবন থেকে ছেঁটে দিন।

নিজের মতো করে এগিয়ে চলুন। সৃষ্টি, বৃহৎ আর ব্যাখ্যা এই তিন শব্দকে যদি আপনি করতে পারেন, তাহলে আপনার ক্যারিয়ারের মূল্যবান সময় তিলমাত্র অপচয় হবে না। পুরোটাই আপনার ক্যারিয়ারকে উন্নততর করার কাজে লাগবে।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *