সোশ্যাল মিডিয়া ল্যান্ডস্কেপ

“সোশ্যাল মিডিয়া” হল অনলাইন সার্ভিসগুলির একটি সেট যা কনটেন্ট পাবলিশ এবং শেয়ার করে নেওয়া, যেকোনো ধরনের বার্তা আদান-প্রদান করা, কনভারসেশন হোস্ট করা, সহযোগিতা করা এবং ব্যক্তিগত বা পেশাগত উদ্দেশ্যে ব্যক্তি ও গ্রুপকে একত্রিত করার পারমিশান দেওয়া।

 

সোশ্যাল মিডিয়া ল্যান্ডস্কেপ যোগাযোগের একটি কলা (Art)। সোশ্যাল মিডিয়া ল্যান্ডস্কেপ ব্যবসাগুলিকে ক্লায়েন্ট বা পোটেনশিয়াল ক্লায়েন্টদের সাথে এনগেজমেন্টের মাধ্যমে তাদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করতে সহায়তা করে। ক্লায়েন্ট বা পোটেনশিয়াল ক্লায়েন্টদের সাথে ব্যবসার সংযোগ করা কাস্টমারদের সাথে ব্যবসার সম্পর্ককে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে, সেইসাথে ব্র্যান্ডের আনুগত্য বাড়ায়।

সোশ্যাল মিডিয়া ল্যান্ডস্কেপ দেখায় কিভাবে মিডিয়ার জগত বিভক্ত এবং কোন বিশেষ মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি এই মুহূর্তে ডিজিটাল বিশ্বে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে আধিপত্য করছে। সহজভাবে এটি সোশ্যাল ‘ইকোসিস্টেম’ যেখানে আমরা এর জন্য টুলগুলিকে আলাদা করতে পারি।

ইন্টারনেটভিত্তক মার্কেটিং কনসালটেন্ট ফরাসি ফ্রেড কাভাজা’র (Fred Cavazza) সোশ্যাল মিডিয়া ল্যান্ডস্কেপ ৪৩টি ক্যাটাগরির ২৪৫টি সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম এবং ৬টি প্রধান ব্যবহার রয়েছে। সেগুলি হলো:

 

  • . পাবলিশিং (Publishing): এই ধরণের প্লাটফর্মে টেক্স (Text) কনটেন্ট প্রকাশের প্রধান টুল হলেও টেক্সটের সাথে ছবি, ভিডিও, অডিও, গ্রাফ, জিআইএফসহ অনেক কিছু ব্যবহার করা যায়।
    • ব্লগের হোস্টিং সার্ভিস: ওয়ার্ডপ্রেস (WordPress), মিডিয়াম (Medium), ওপেন ডায়েরি (Open Diary), ব্লগার (Blogger), টাইপপ্যাড (TypePad) ইত্যাদি।
    • নিউজলেটার পাবলিশিং সার্ভিস: সাবস্ট্যাক (substack), রিভিউ (Review) , গুমরোড (Gumroad) ইত্যাদি।
    • পাবলিশিং সার্ভিস এবং ডিসকভার পডকাস্ট: আপেল পডকাস্ট (Apple Podcast) , গুগল পডকাস্টস (Google Podcasts) ইত্যাদি।
    • উইকি: উইকিপিডিয়া (Wikipedia) Fandom (ফ্যানডম) ইত্যদি
    • হাইব্রিড পাবলিশ / শেয়ার সার্ভিস: টুইটার (Twitter), টুম্বলার (Tumblr), মাইস্পেস (MySpace) ইত্যাদি।
  • শেয়ারিং (Sharing): বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট শেয়ার করার জন্য যে প্লাটফর্ম, এবং তাদের টুলগুলি কাজ করে:
    • মাইক্রো-ভিডিওর এপ্লিকেশ: টিকটক (TiktTok), লাইকি (LiKee) ইত্যাদি
    • ভিডিও প্ল্যাটফর্ম: ইউটিউব (Youtube), ডেইলিমোশন (Dailymotion ), ভিমিও (Vimeo);
    • লাইভ ভিডিও স্ট্রিইমিং প্ল্যাটফর্ম: টুইচ (Twitch), ইউনাও (YouNow), লাইভমি (LiveMe);
    • ফটো শেয়ারিং সার্ভিস: গুগল ফটো (Google Photos), ফ্লিকার (Flickr) ইত্যাদি;
    • ভিজ্যুয়াল ইনস্পিরেশন শেয়ার সার্ভিস: পিন্টারেস্ট (Pinterest), বেহান্স (Behance), ড্রিবল (Dribbble), দেভিয়ান্ট আর্ট (DeviantArt);
    • অ্যানিমেটেড জিআইএফ শেয়ারিং সার্ভিস গিফি (Giphy), গফিকেট Gfycat), ইমগুর (Imgur) ইত্যাদি;
    • রিড শেয়ারিং সার্ভিস গুডরিড (GoodReads) এনবিই (aNobii);
    • ডকুমেন্ট শেয়ারিং সার্ভিস: স্লাইডশেয়ার (Slideshare), স্ক্রিবিডি (Scribd), ইস্যু (Issuu);
    • মিউজিক এবং প্লেলিস্ট শেয়ারিং সার্ভিস: স্পটিফাই (Spotify), সাউন্ডক্লাউড (Soundcloud), ক্যাফেইন (Caffeine) এবং ওয়েব-রেডিও: স্টেশনহেড (Stationhead);
    • ভ্যাকেশন এবং লেইজার ডেস্টিনেশন শেয়ার করে নেওয়ার সার্ভিস ট্রিপএডভাইজার (TripAdvisor) লাইভ৩৬০ (Life360);
    • লিংক এবং কনটেন্ট কিউরেশন সার্ভস: দিগ্গ (Digg), স্কোপ ডট ইট (Scoop.it), ফ্লিপবোর্ড (Flipboard) ইত্যাদি;
    • বায়ো শেয়ারিং সার্ভিস এবং পারসোন্যাল লিংক: লিঙ্কট্রি (LinkTree), ক্যাম্পসাইট (Campsite), বায়ো ডট এফএম (Bio.fm)
  • মেসেজিং (Messaging): মোবাইল, ভিজ্যুয়াল এবং ওয়েবমেইলসহ সব মেসেজিং সার্ভিস:
    • মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশন হোয়াটসঅ্যাপ (WhatsApp), ফেসবুক মেসেঞ্জার ( Facebook Messenger), উইচ্যাট (WeChat), স্ন্যাপচ্যাট (Snapchat ), আইমেসেজ (iMessages), স্কাইপ (iMessages), টেলিগ্রাম ( Telegram), সিগন্যাল (Signal), ইমো (IMO), ভাইবার (Viber), লাইন (Line ),
    • অন্তরঙ্গ মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশন টিটিওয়াইএল (TTYL), কিটি (KiT), হাউসপার্টি (HouseParty) ইত্যাদি;
    • ইমেল সার্ভিস জিমেইল (Gmail), আউটলুক (Outlook), ইয়াহু মেইল (Yahoo Mail), প্রোটনমেইল (ProtonMail)।
  • আলোচনা (Discussing): কনভারসেশন হোস্ট করার জন্য যে সমস্ত টুল রয়েছে:
    • শেয়ার করা এবং আলোচনা করার জন্য মেটা-কমিউনিটি: ফেসবুক গ্রুপ (Facebook Groups), গুগল গ্রুপ (Google Groups), রেডিট (Reddit) ইত্যাদি এবং ফোরাম ৪চান (4chan), ৮কুন (8kun), উইজার্ডচান (Wizardchan);
    • অডিও চ্যাট সার্ভিস ডিসকর্ড (Discord ), টিমস্পিক (TeamSpeak), ক্লাবহাউস (Clubhouse) ইত্যাদি।
    • প্রফেশনাল কনভারসেশন প্ল্যাটফর্ম গিটহাব (Github), স্টকএক্সচেঞ্জ (StackExchange);
    • প্রশ্নউত্তোর সার্ভিস: কোরা (Quora) , এএসকে ডট এফএম ( ASKfm) ইত্যাদি;
    • কমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম: Disqus (ডিসকোর্স), গ্রাফকমেন্ট (GraphComment), ইত্যাদি;
    • সোশ্যাল ভার্চুয়াল পরিবেশ: ফেইসবুক হরাইজন (Facebook Horizon) , সানসার (Sansar), সেকেন্ড লাইফ (Second Life)
  • সহযোগিতা করা (Collaborating), সহযোগিতার টুল:
    • প্রফেশনাল মেসেজিং স্ল্যাক (Slack), অ্যামাজন চিম (Amazon Chime) , গুগল চ্যাট (Google Chat);
    • সামাজিক ইন্ট্রানেটস: ফেসবুক ওয়ার্কপ্লেস (Facebook Workplace), মাইক্রোসফট টিমস (Microsoft Teams), ইয়ামার (Yammer) ইত্যাদি;
    • ভিডিও কনফারেন্সিং সার্ভিস: জুম (Zoom) , ওয়েবেক্স (Webex) , গো টু মিটিং (GoToMeeting) , ব্লুএজেন্স (BlueJeans);
    • সহযোগী টুল কুইপ (Quip), রাইক (Wrike ), স্মার্টশিট (Smartsheet), এয়ারটেবল (airtable), গুগল টেবিল (Google tables), টিমওয়ার্ক (Teamwork);
    • ভিজ্যুয়াল ম্যানেজমেন্ট টুল: ট্রেলো (Trello), মাইক্রোসফট প্ল্যানার (Microsoft Planner), জিরা ওয়ার্ক ম্যানেজমেন্ট (Jira Work Management), ব্যাকলগ (Backlog)
    • ভিজ্যুয়াল সহযোগিতার টুল: লুসিডচার্ট (Lucidchart), গ্লিফি (Gliffy);
    • ডিজিটাল কাজের পরিবেশ: মাইক্রোসফ্ট ভিভা (Microsoft Viva), কনসেপ্ট (Concept), কনফ্লুয়েন্স (Confluence), কিসফ্লো (Kissflow), নিফটি (Nifty);
    • নোট শেয়ারিং টুলস: এভারনোট (Evernote), ওয়াননোট (OneNote), ড্রপবক্স পেপার (Dropbox Paper), Box Note (বক্স নোট), SimpleNote (সিমপ্লেনটা), নোটেজই (Notejoy) , টোডিস্ট (Todoist);
    • অফিস স্যুট: মাইক্রোসফট ৩৬৫ (Microsoft 365), গুগল ওয়ার্কস্পেস (Google Workspace), জোহা (Zoho)।
  • নেটওয়ার্কিং (Networking) (ডেটিং এবং মিটিং প্ল্যাটফর্ম সহ)।
    • সোশ্যাল নেটওয়ার্ক বিটুবি (B2B): লিংকডইন (Linkedin), আপস্ট্রিম (Upstream), যারা সেরা সেট সম্পর্ক সনাক্ত করতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ব্যবহার করে: লিঙ্ক (Lynk ) এবং কমিউনিটি সামাজিক নেটওয়ার্কগুলি আলফা (Elpha), ভ্যালেন্সিয়া (Valencia);
    • যোগাযোগ পরিচালনার টুল: ডেক্স (Dex), হাইহেলো (HiHello);
    • সোশ্যাল নেটওয়ার্ক অ্যাফিনিটি আসমালওয়ার্ল্ড (ASMALLWORLD), নেক্সটডোর (Nextdoor);
    • সামাজিক নেটওয়ার্ক তৈরির টুল নিং (Ning), ট্রাইব (Tribe), ডায়াস্পোরা (Diaspora);
    • জেনেরিক সোশ্যাল নেটওয়ার্ক: ট্যাগেট (Tagged), ভেরো (Vero), ক্লাসমেড (Classmates);
    • ডেটিং অ্যাপ্লিকেশন: টিন্ডার (Tinder), বাম্বল (Bumble) , বাদু (Badoo), ইত্যাদি;
    • শারীরিক বা দূরবর্তী ইভেন্টগুলি পরিচালনার জন্য টুল: ইভেন্টব্রাইট (Eventbrite), মিটআপ (Meetup), ইভাইট (Evite)।

এখানে দেখতে যাচ্ছে, এটি বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফেসবুক, গুগল এবং টুইটার প্ল্যাটফর্মের চারপাশে ছড়িয়ে থাকা অনলাইন পরিষেবাগুলির একটি খুব ঘন ইকোসিস্টেম।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *