পাট শিল্প
পাট শিল্প এক সময় এ দেশের একক বৃহত্তম শিল্প ছিল। স্বাধীনাপরবর্তী সময়ে জাতীয় জিডিপি এবং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে এই শিল্পের অবদান হ্রাস পায়। কিন্তু তারপরও এই শিল্প দেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
পাট শিল্প ও বাংলাদেশ – শুরুটা যে ভাবে
প্রাচীনকাল থেকেই বাংলায় পাট উৎপাদিত হত। কিন্তু ১৮৮৫ সালের পূর্বে স্থানীয় তন্তুবায় শ্রেণি দরিদ্র জনগণের জন্য মোটা বস্ত্র তৈরি করত। পাটভিত্তিক শিল্প স্থাপনের অনুপ্রেরণা আসে স্কটল্যান্ডের ডান্ডি থেকে। নেপোলিয়ানের যুদ্ধের সময় ঘন ঘন নৌ-অবরোধের ফলে রাশিয়ার শন জাতীয় গাছের কারখানাগুলি বিকল্প হিসেবে পাট ব্যবহারের সম্ভাবনা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করে।
১৮৩২ সালে বেলফোর ও মেলভিলের কারখানাগুলি কলকাতার বিভিন্ন স্থান থেকে কাঁচাপাট আমদানি করে এবং এই কাঁচাপাটের সঙ্গে তিমির তেল ও পানি মিশিয়ে পাট নরম করে নেয়। ১৯৩৮ সালে এই নতুন প্রক্রিয়া প্রয়োগ করা হয়। এ সময় ডান্ডির মিলগুলি জাভা থেকে আমদানি করা চিনির জন্য ডাচ সরকারের নিকট থেকে বিপুল পরিমাণ ব্যাগ তৈরির কার্যাদেশ পায়। ডাচ সরকার এই তৈরিকৃত পাটের ব্যাগ গ্রহণ করে এবং এই মোটা ক্যানভাস বিশেষ সামগ্রী হিসেবে স্থায়ীরূপ লাভ করে। এই ব্যবস্থা কাপড় ও ব্যাগ উৎপাদনে পাটের ব্যবহার শুরুতে সহায়তা করে। ফলে পাট শিল্পে নতুন প্রেরণার সূচনা হয়।
অবশ্য ক্রিমিয়ার যুদ্ধই (১৮৫৪-৫৬) প্রকৃতপক্ষে পাট শিল্পকে একটি শক্ত ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করে। বিশ্ববাণিজ্য প্রতি বছর শতকরা ৫ ভাগ বৃদ্ধি পেতে শুরু করলে ঔপনিবেশিক অঞ্চল থেকে বিকল্প আঁশ সহজলভ্য হলে ডান্ডির কারখানাগুলি আর অলসভাবে বসে থাকে নি।
আমেরিকার গৃহযুদ্ধ (১৮৬১-৬৫) এই বিকল্প প্রক্রিয়ায় আরো উৎসাহ প্রদান করে। এই যুদ্ধের ফলে আমেরিকা থেকে তুলার সরবরাহ অনেকাংশেই সীমিত হয়ে পড়ে। কারণ পরিখা যুদ্ধকালে ইউনিয়ন এবং কনফেডারেসির সৈন্যদের জন্য মোটা বস্তা ও বালির বস্তা, পাটের আঁশ দিয়ে পাকানো সুতা, দড়ি সরবরাহ বিঘ্নিত হয় এবং মূল্যও বৃদ্ধি পায়। ফলে ডান্ডির টেকসই বিকল্প আঁশের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। উভয় ক্ষেত্রেই এই শিল্প নতুন ব্যবহারকারীর সন্ধান পায় যারা আর কখনো শন বা তুলার ব্যবহারে ফিরে যায় নি। এই স্থায়ী পরিবর্তনের প্রধান কারণ ছিল তুলনামূলকভাবে পাটের সস্তা দামের সুবিধা।
কাঁচাপাট উৎপাদনের একচেটিয়া এলাকা বাংলা হলেও অধিকাংশ পাটচাষ হতো প্রদেশের পূর্ব অংশে। একথা সত্য যে, শুরুর দিকে পাবনা জেলার সিরাজগঞ্জে একটি মিল স্থাপিত হলেও ১৮৯৭ সালে ভূমিকম্পের কারণে এটি ধ্বংস হলে আর চালু করা সম্ভব হয় নি। এই মিলের যন্ত্রপাতিগুলি হুগলীতে এনে ডেলটা জুট মিল স্থাপন করা হয়। বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে নারায়ণগঞ্জে একটি পাটকল স্থাপনের কথা শোনা গেলেও এ ব্যাপারে ঐ শতকের পঞ্চাশের দশকেও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় নি। ফলে অবস্থা এরূপ দাঁড়ায় যে, পশ্চিম বাংলায় সব পাটকল অবস্থিত হলেও অধিকাংশ কাঁচাপাট পূর্ব অঞ্চল থেকেই নেয়া হত।
১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পরে তা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। পাট শিল্প বিকাশের বিষয়টি অত্যাবশ্যক হয়ে পড়ে পূর্ব বাংলার জন্য। পূর্ব বাংলার (পূর্ব পাকিস্তান) প্রথম পাটকল বাওয়া জুট মিলস লিমিটেড ১৯৫১ সালের মাঝামাঝি সময়ে তাদের উৎপাদন শুরু করে। দ্বিতীয় মিলটি ভিক্টোরি জুট প্রডাক্টস লিমিটেড একই বছরের শেষের দিকে উৎপাদন শুরু করে। এগুলি ছিল বেসরকারি খাতের। একই বছর উৎপাদন শুরু করা তৃতীয় মিলটি ছিল আদমজি জুট মিলস। এই মিলটি পাকিস্তান শিল্প উন্নয়ন সংস্থার সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এভাবে সরকারি সংস্থা ও ব্যক্তি উদ্যোক্তাদের মধ্যকার সক্রিয় সহযোগিতায় শিল্প বিকাশের পথ সুগম হয় এবং ১৯৬০ সাল নাগাদ ১৪টি মিলের মধ্যে ১২টি মিল পাকিস্তান শিল্প উন্নয়ন সংস্থার উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৫৯-৬০ সালের মধ্যে এই ১৪টি মিলের কর্মচারীর সংখ্যা ছিল ৫৭০০, তাঁতের সংখ্যা ছিল ৭৭৩৫টি এবং পাটজাত দ্রব্য সামগ্রী উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ২,৬০,৩৯৩ ম্যাট্রিক টন। পরবর্তী দশকে পাট শিল্পের দ্রুত বিকাশ ঘটে এবং ১৯৬৯-৭০ সালের মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানে কিঞ্চিতধিক ২৫ হাজার তাঁত সহ মোট পাটকলের সংখ্যা ছিল ৭৭টি এবং এগুলির কাঁচাপাট ব্যবহার করার ক্ষমতা ছিল ৩৪ লক্ষ বেল। ঐ বছরই সকল পাটকলে কর্মচারীর সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ সত্তর হাজার এবং বিশ্বের ১২০টি দেশে পাটজাত দ্রব্য সামগ্রী রপ্তানি করে ৭৭ কোটি টাকা আয় করা হয়। এভাবে পূর্ব পাকিস্তান পাটজাত দ্রব্যসামগ্রী রপ্তানির শীর্ষ দেশে পরিণত হয়।
১৯৫২-৫৩ সালে পাকিস্তানের অর্জিত মোট বৈদেশিক মুদ্রার মাত্র ০.২% ছিল পাটজাত দ্রব্য সামগ্রী রপ্তানি থেকে। ১৯৬৯-৭০ সালে এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৪৬%।
বিশ শতকের পঞ্চাশের দশকের দিকে পাট উৎপাদন খাতে অ-বাঙালিরাই ছিল বেসরকারি বিনিয়োগকারী, কিন্তু ষাটের দশকের প্রথমদিকে কিছু বাঙালি উদ্যোক্তা এই খাতে বিনিয়োগের উৎসাহ প্রকাশ করে। এই বাঙালি উদ্যোক্তারা নিজস্ব উদ্যোগেই ব্যবসা-বাণিজ্য বা ক্ষুদ্র শিল্প ব্যবসায় নিয়োজিত ছিল, কিন্তু ইতোমধ্যে তারা নানা ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য করে বেশ কিছু পুঁজি সঞ্চয় করে। অধিকন্তু, পূর্ব পাকিস্তানে অবাঙালিদের আধিপত্যমূলক শিল্প বিনিয়োগ রাজনৈতিক অসন্তোষের জন্ম দেয়। মূলত এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এই শিল্পখাতে বাঙালির অংশীদারিত্বের প্রয়োজনীয়তা অনুভব শুরু হয়।
১৯৭০ সালের মধ্যে বাঙালি উদ্যোক্তারা প্রায় ১১,৫০০ তাঁত বা বিভিন্ন শ্রেণীর সমগ্র তাঁতের শতকরা ৩২ ভাগ তাঁত নিয়ে ৪১টি পাটকল স্থাপন করতে সাহায্য করে। মাত্র দুই দশকের মধ্যে এরূপ বৃহৎ পাটশিল্প স্থাপন ছিল প্রকৃতই একটি বড় ব্যাপার। বিশ শতকের পঞ্চাশের দশকে এই বাঙালি উদ্যোক্তারা প্রায় অপরিচিতই ছিলেন।
পাট শিল্প যেভাবে পিছিয়ে পড়ে
স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর অ-বাঙালি এবং দেশ ত্যাগ করে চলে যাওয়া মালিকদের পাটমিলগুলির ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব গ্রহণের জন্য সরকার জুট বোর্ডকে নির্দেশ দেয়। জুট বোর্ড প্রত্যক্ষভাবে বা প্রশাসক বিনিয়োগের মাধ্যমে এই ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করে। ব্যবস্থাপনা-দক্ষতার বাছ-বিচার না করেই রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়। তারা ধীরগতিতে সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ করছিলেন এবং এটিই ছিলো এই শিল্পকে অবহেলার ভিত্তি। মিলের উর্দু ভাষী অনেক কর্মচারী দেশ ছেড়ে চলে গেলে তাদের শূন্য পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল রাজনৈতিক কর্মী অথবা ট্রেড ইউনিয়নের নেতাদের।
সকল জাতীয়করণকৃত মিলগুলির ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বিভিন্ন কর্পোরেশন বা সংস্থাকে দেয়া হয় এবং বাংলাদেশ জুট মিলস কর্পোরেশনকে (বিজেএমসি) পাটকলগুলির পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয়। আর্থিকভাবে টাকার অবমূল্যায়ন শতকরা ৬৬ ভাগ হওয়ার কারণে ১৯৭৫-৭৬ সাল থেকে ১৯৭৮-৭৯ সাল পর্যন্ত বিজেএমসি-র আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ৬০ কোটি ১৯ লাখ টাকা। পরিচালনার ক্ষেত্রে ক্ষতির মূল কারণ ছিল কাঁচাপাটের মূল্য বৃদ্ধি, গুদামজাতকরণের বর্ধিত ব্যয়, খুচরা যন্ত্রাংশের উচ্চমূল্য, মজুরি ও বেতন বৃদ্ধি এবং অবাধ ও অনিয়ন্ত্রিত দুর্নীতি।
১৯৭৯-৮০ সালে বিশেষজ্ঞ বা দক্ষ কমিটির সুপারিশ অনুসারে শিল্প-কল-কারখানার বিরাষ্ট্রীয়করণ শুরু হয়। ৩জন বাংলাদেশি মালিকের পাটকল ফেরত দেয়া হয় এবং এরূপ অন্য ৩টি মিল বাংলাদেশিদের নিকট নিলামে বিক্রয় করা হয়। পরবর্তীকালে সরকার এরূপ মিল প্রতিষ্ঠার জন্য পুরাতন ও ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি আমদানিসহ ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগের পরিমাণ উন্মুক্ত করে দেয়। ১৯৮২ সালে সরকার ৩৫টিরও বেশি পাটকল সাবেক বাংলাদেশি মালিকদের নিকট হস্তান্তর করে। ১৯৮২-৮৪ সালে বেসরকারি খাতের বেশ কিছু পাটকল (বিজেএমসির প্রতিনিধিত্বে) মুনাফা অর্জন করে, কিন্তু পরবর্তীকালে এগুলিও পূর্বের ন্যায় ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
১৯৯১ সালের জুন মাসে পাটকলগুলির ব্যাংকের নিকট পুঞ্জীভূত বা ক্রমবর্ধমান দায় বা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২০৭৫ দশমিক ৩২ কোটি টাকা যার মধ্যে বিজেএমসির মিলের ঋণের টাকার পরিমাণ ১২৯৯ দশমিক ০৫ কোটি টাকা এবং ৩৫টি বিরাষ্ট্রীয়করণ মিলের ঋণের টাকার পরিমাণ ৭৭৪ দশমিক ২৭ কোটি টাকা। ১৯৯১-২০০০ সাল পর্যন্ত বিজেএমসি-এর অধীনে পরিচালিত মিলগুলির মোট লোকসানের পরিমাণ ছিল ৬৯৫ দশমিক ৫৫ কোটি টাকা।
২০০২ সালের জুন মাসে সরকার এই খাতের সর্ববৃহৎ পাটকল আদমজি জুট মিল বন্ধ ঘোষণা করে। নিকট অতীতের অভিজ্ঞতাও প্রায় অনুরূপ। ২০০১-০২ থেকে ২০০৬-০৭ সাল পর্যন্ত বিজেএমসি-এর অধীনে পরিচালিত মিলগুলির প্রায় ১৯১১ কোটি টাকা লোকসান হয়। বেসরকারি খাতের মিলগুলিও খুব একটা ভাল চলছিল না।
১৯৯৮ সালে এই খাতের ৪১টি পাটকলের মধ্যে ৩টি বন্ধ করে দেয়া হয় এবং দুটিকে লে-অফ ঘোষণা করা হয়। ১৯৯৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এসব মিলের পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ ছিল ১২ বিলিয়ন টাকারও বেশি। এভাবে জাতীয়করণকৃত শিল্পসমূহের সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যক্তি মালিকানায় রূপান্তরও কোনো সমাধান দিতে পারেনি।
যেসব কারণে পিছিয়ে পড়েছে এই শিল্প
যুগ যুগ ধরে বাংলাদেশের পাটশিল্প বিভিন্ন সমস্যার মোকাবেলা করে আসছে। এর মধ্যে রয়েছে: স্থবিরতা বা রপ্তানি মূল্য হ্রাসের পরিপ্রেক্ষিতে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি; পুরাতন যন্ত্রপাতির উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস; শ্রমিক সমস্যা; বহুবিস্তৃত দুর্নীতি; অদক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং এর ফলে পুঞ্জীভূত বিশাল পরিচালন লোকসান। এ সব কারণে এক সময়ের একটি প্রধান অর্থকরী শিল্প এখন অনেকটা অতীত ইতিহাস। সোনালি আঁশ তার রং অনেকটা হারিয়ে ফেলেছে।
পাট শিল্পের সম্ভাবনা এবং শক্তি
বর্তমানেও পাটশিল্প জাতীয় অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে: পাটশিল্পের ৪০ শতাংশ উৎপাদন ক্ষমতা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরও এই শিল্প পাটচাষি থেকে শুরু করে রপ্তানিকারকসহ প্রায় ৪ লাখ লোক জড়িত। সর্বমোট ১৪৫টি পাটকল বাংলাদেশ পাটকল সমিতির (বিজেএমএ) অধীনে এবং ২৬টি পাটকল বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশনের (বিজেএমসি) অধীনে পাটজাত দ্রব্য উৎপাদনে নিয়োজিত আছে। এখন এ শিল্প প্রায় দেড় কোটি লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে। বীমার অর্থ হিসেবে ১০০ কোটি টাকা প্রদান করে এবং প্রায় সমপরিমাণ টাকা খরচ হিসেবে কাঁচাপাটের অভ্যন্তরীণ পরিবহণে ব্যয় করতে পারে, এবং ৩০ লক্ষ টাকার কাঁচাপাট ব্যবহার করতে পারে।
বিজেএমইএ সূত্র মতে, ২০১২-১৩ রাজস্ব বছরে পাটজাত থলে রপ্তানি থেকে বাংলাদেশের আয় হয়েছিল ১১.১৪ বিলিয়ন টাকা, অথচ ২০১৩-১৪ রাজস্ব বছরে তা হ্রাস পেয়ে দাঁড়ায় ৯.৫৯ বিলিয়ন টাকায় এবং ২০১৪-১৫ রাজস্ব বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সময়ে এ উৎস থেকে রপ্তানি আয় হয় মাত্র ৩.৪৪ বিলিয়ন টাকা। এভাবে পাটশিল্প লক্ষ লক্ষ পাটচাষীর জন্য কল্যাণ বয়ে আনতে পারে।
প্রয়োজন যে সব পদক্ষেপ
পাট শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের দাবি ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন, ২০১০’ বাস্তবায়নের জন্য। বৈদেশিক বাজারে পাটজাত দ্রব্যের চাহিদা ক্রমাগতভাবে হ্রাস পাওয়া অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে অবস্থার আরও অবনতি হবে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
বাংলাদেশি পাটজাত দ্রব্যের সর্ববৃহৎ ক্রেতা হচ্ছে ভারত। সম্প্রতি ভারতও পাটজাত দ্রব্যের আমদানি কমিয়ে দিয়েছে। পাটজাত থলের বাধ্যতামূলক ব্যবহার পর্যায়ক্রমে হ্রাস করার বিষয়টিও ভারতের সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে। তাছাড়া সিরিয়া, সুদান এবং থাইল্যান্ডেও পাটের থলের চাহিদা হ্রাস পেয়েছে। তাই বাংলাদেশ সরকারকে অবিলম্বে ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন, ২০১০ বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, যেহেতু ভবিষ্যতে বাংলাদেশের পাটজাত দ্রব্য স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। বিদেশি ভোক্তাদের পছন্দ ও রুচি অনুযায়ী পাটজাত দ্রব্য উৎপাদনের জন্য মিলসমূহের যন্ত্রপাতির আধুনিকায়ন করা এবং বহুমুখী উৎপাদন কিংবা উৎপাদিত পণ্যের বহুধাকরণ করাও একান্ত জরুরি। উল্লেখ্য, বিভিন্ন ডিজাইনের শপিং ব্যাগের চাহিদা বিদেশের বাজারে অত্যন্ত বেশি।
Leave a Reply