সোশ্যাল মিডিয়া কী?
সাধারণত, সোশ্যাল মিডিয়া বলতে, তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ভার্চুয়াল কমিউনিটি গড়ে তোলা কেই বোঝায়। আরেকটু বিশদভাবে বললে সোশ্যাল মিডিয়া হল ইন্টারেক্টিভ প্রযুক্তি যা ভার্চুয়াল কমিউনিটি এবং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তথ্য, ধারনা, আগ্রহ এবং অভিব্যক্তির অন্যান্য রূপ অথবা সৃষ্টি শেয়ারিং কিংবা এক্সচেঞ্জের অনুমতি দেয়। [১]
ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ্লিকেশন যা ইউজারদের কনটেন্ট তৈরি করতে এবং শেয়ার করতে বা সোশ্যাল নেটওয়ার্কিংয়ে অংশগ্রহণ করতে সক্ষম করে৷ – অক্সফোর্ড ডিকশনারি
মিডিয়ার ফর্ম যা মানুষকে ইন্টারনেট বা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে যোগাযোগ এবং তথ্য ভাগ করতে দেয়। – কেমব্রিজ বিজনেস ইংলিশ ডিকশনারি
বর্তমানে দৈনন্দিন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে এই প্লাটফর্ম। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা অন্যদের সাথে যোগাযোগের পাশাপাশি খুব সহজে বিভিন্ন কন্টেন্ট শেয়ার করতে পারে। বিভিন্ন ধরণের পোস্টের মাধ্যমে নিজের অনুভূতি প্রকাশ যায়। অসংখ্য সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম রয়েছে। তাদের মধ্যে ফেসবুক, টুইটার, লিংকডইন, ইউটিউব, পিন্টারেস্ট, ইন্সটাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
সোশ্যাল মিডিয়ার সংজ্ঞায়িত করা অনেকটা চ্যালেঞ্জিং কারণ বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের এবং বিল্ট-ইন সোশ্যাল মিডিয়া সার্ভিস আছে। তবে কিছু কমন ফিটার আছে বৈশিষ্ট্য রয়েছে এইসব প্লাটফর্মের। যেমন:
- সোশ্যাল মিডিয়া হল ইন্টারেক্টিভ ওয়েব ২.০ ইন্টারনেট-ভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশন।
- ইউজার-জেনারেট কনটেন্ট – যেমন: টেক্সট পোস্ট বা কমেন্ট, ডিজিটাল ফটো বা ভিডিও, এবং সমস্ত অনলাইন ইন্টারএকশনের মাধ্যমে উৎপন্ন ডেটা-সামাজিক মিডিয়ার প্রাণশক্তি।
- ইউজাররা ওয়েবসাইট বা অ্যাপের জন্য সার্ভিস-স্পেসিফিক প্রোফাইল তৈরি করে যেগুলি সোশ্যাল-মিডিয়া সংস্থা দ্বারা ডিজাইন এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়।
- সোশ্যাল মিডিয়া অন্যান্য ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর সাথে ব্যবহারকারীর প্রোফাইল সংযুক্ত করে অনলাইন নেটওয়ার্ক নেটওয়ার্কগুলির বিকাশে সহায়তা করে।[১]
একবিংশ শতাব্দীর একেবারের গোঁড়ার দিকে, সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের যোগাযোগের মাধ্যমে ব্যাপক পরিবর্তন আনে। প্রিয়জনের সাথে যুক্ত থাকা কিংবা আগ্রহের বিষয় শেয়ার করা প্রায় পুরোটাই চলে আসে সোশ্যাল প্লাটফর্মে। ২০২০ সালের হিসাবে, একটি আনুমানিক ৩.৬ বিলিয়ন মানুষ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে সক্রিয়। ২০২৫ নাগাদ এই সংখ্যা দাঁড়াবে ৪.৪১ বিলিয়ন। [২]
কেন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং?
“কাস্টমার যে-খানে, মার্কেটিং হবে সে-খনে” মার্কেটিং কম্যুনিকেশনের সেই শুরু থকে এখন অব্দই মানা হয় এই নীতি। সংবাদপত্র থেকে শুরু করে, রেডিও-টিভি-ইন্টারনেট যেখানেই বুঁদ হয়েছে কাস্টমার সেখানেই মার্কেটিং কম্যুনিকেশন নিয়ে হাজির মার্কেটাররা। সোশ্যাল প্লাটফর্মের বিকাশের সাথে মার্কেটারদের তাদের কাস্টমারদের কাছে পৌঁছানোর উপায়ও পরিবর্তন করেছে। লোকে এখন দিনের উল্লেখযোগ্য সময় থাকে সোশ্যাল মিডিয়ার, তাই ব্র্যান্ডগুলোও হাজির সেখানে। সোশ্যাল মিডিয়ার পারসোনাল এলিমেন্ট ব্যবসাগুলিকে তাদের কাস্টমারদের সাথে যোগাযোগ গড়ে তুলতে এবং ব্র্যান্ড লয়ালেটি তৈরি করতে সুযোগ দেয়।।
ব্যবসাগুলি এডভারটাইজমেন্ট মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়াতে নতুন অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছাতে পারে। নির্দিষ্ট কোন বিষয়ে আগ্রহী গ্রুপ বা বিশেষ কোন কমিউনিটির জন্য ডায়নামিক এড তৈরি করে, ব্যবসাগুলি তাদের অফার নিয়ে সম্ভবত আগ্রহী লোকেদের কাছে পৌঁছাতে পারে। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে পটেনশিয়াল কাস্টমারের ডেক্সটপ বা মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে হাজির তাদের প্রোডাক্ট এবং সার্ভিসগুলি প্রদর্শন করে কেনার জন্য আকৃষ্ট করতে পারে। ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্মগুলি এমন কিছু ফিচার ডেভেলপ করেছে যার মাধ্যমে ব্যবসাগুলি তাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মের শপে কিংবা নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রোডাক্ট বিক্রি করতে পারবে। এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়াতে চালানো ক্যাম্পেইন কতটা কার্যকর ছিল সেটা জানা যাবে অডিয়েন্স ইনসাইট থেকে।
প্রতিটা কম্যুনিকেশন চ্যানেলের বিভিন্ন মড্যুলের যেমন স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য আছে, নানান সুবিধা, অসুবিধা আছে, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়েরও ঠিক তাই। যেভাবে লোকে যেভাবে সোশ্যাল প্লাটফর্মে ভিড় বাড়াচ্ছে সেভাবে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংও স্বতন্ত্রভাবে ও শক্তিশালী হচ্ছে। তাই বলাই যায়, সময় এখন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের।
সূত্র
- Wikipedia – “Social media”. https://en.wikipedia.org/wiki/Social_media
- Statista Research Department, Statista (2021). Number of social network users worldwide from 2017 to 2025.
Leave a Reply