যেসব ইঙ্গিত বলে ইন্টারভিউ ভালো হয়নি

যেসব ইঙ্গিত বলে ইন্টারভিউ ভালো হয়নি।

অনেক মেধাবী ভালো পার্ফম করেও ইন্টারভিউ বোর্ডে পরীক্ষকদের নজর কাড়তে ব্যর্থ হয়। এই ইন্টারভিউয়ের আশায় আশায় দিন গুনে পরের ইন্টাভিউয়ের প্রস্তুতির জন্য পাওয়া সময় নষ্ট করে। মানুষ অন্তরজামি নয়, মনের ভেতরে কি চলছে তা ১০০ ভাগ বোঝা সম্ভব নয়। তবে পরিপাশ্বির অনেক কিছু বিষয়াদি দেখে অনুমান করা যায় মনের ভেতর কি খিচুড়ি রান্না চলছে। বিশ্ময়কর ব্যাপার কয়েকটা ছোট ছোট বিষয়ে নজর দিলেই বোঝা যায় ইন্টারভিউয়ের রেজাল্ট কি হতে পারে। যেসব ইঙ্গিত দেখে বুঝবেন, ইন্টারভিউ মোটেই ভাল হয়নি – চাকরি আপনি পাবেন না। সেগুলো হল:

• ‘আপনি কেন এই সংস্থায় যোগ দিতে চান?’, ‘ভবিষ্যতে আপনি নিজেকে কোন জায়গায় দেখতে চান’-টাইপের প্রশ্ন না করলে বুঝবেন ইন্টারভিউ ভালো হয়নি।

• প্রতিষ্ঠানের বা যে পদের জন্য আপনাকে বেছে নেওয়া হবে, তা নিয়ে ইন্টারভিউতে আলোচনা অনিবার্য। সেটা হলে ভালো, নইলে বুঝে নিন এ যাত্রায় চাকরিটা আর হলো না।

• ইন্টারভিউয়ের সময় ইন্টারভিয়ার বারবার আপনার রেজিউমে পড়লে বুঝে নিবেন, আপনার জীবনবৃত্তান্তে আপনি যা বলছেন এবং সেখানে যা লেখা রয়েছে, তার মধ্যে বিস্তর ফারাক। এটা কিন্তু পজিটিভ সাইন নয়।

• খেয়াল রাখুন, যিনি ইন্টারভিউ নিচ্ছেন, তাঁর বডি ল্যাংগুয়েজ কেমন? তিনি যদি পিছনে গা এলিয়ে দেন, আপনার কথা শুনেও না শোনার ভান করেন, তাহলে বুঝে নিন যে, আপনার চাকরি হচ্ছে না।

• যদি প্রশ্নকর্তা ‘এই চাকরি অত্যন্ত চাপের’, ‘কী কাজ’, ‘কতক্ষণ কাজ’ গোছের কথাবার্তা বললে – তা, ভাল ইঙ্গিত। ‘বেশ চাপ থাকবে কিন্তু’-টাইপের কথাবার্তা বললে আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। তা নইলে দুশ্চিন্তা বরাদ্দ থাকল।

• ইন্টারভিউয়ের সময় প্রশ্নকর্তা আপনার উত্তর শুনে মাথা নেড়ে সায় দিয়েছেন? বা অন্য কোন ধরণের রেসপন্স? বা, সহমত না হলে আলোচনা করছেন? এগুলি হলে পজিটিভ রেজাল্ট আসতে পারে। নইলে, তিনি যদি আপনার উত্তরে কোনও প্রতিক্রিয়া না দেন, তাহলে বুঝে নিন আপনি বিপদে। আশা ছেড়ে দিতে পারেন এই চাকরির।

• ইন্টারভিউয়ে অন্য প্রার্থীর প্রসঙ্গ উঠে আসা, তিনি কেমন কাজ করলেন, তা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা কিন্তু অস্বাস্থ্যকর লক্ষণ।

• আপনার সক্ষমতা কী? আপনার দক্ষতা কি? তা নিয়ে একটি শব্দও খরচ না করা হলে ধরে নিতে হবে, ইন্টারভিউয়ার মনে করেন না, আপনার ক্ষমতা নিয়ে তাঁর কিছু জানা প্রয়োজন। হয়তো ইতিমধ্যেই আপনি চরম কিছু ভুল করে বসেছেন।

• আপনার প্রতিটি উত্তরেই কি যাঁরা ইন্টারভিউ নিচ্ছেন, তাঁরা পাল্টা যুক্তি খাড়া করছেন? আপনি কিন্তু তা হলে কঠিন পরীক্ষায়। কেননা, আপনাকে এবার যুক্তি দিয়ে যুক্তি মোকাবেলা করতে হবে। নইলে এটাও হাত ছাড়া হয়ে গেল…।

• যা নিয়ে প্রশ্ন করার কথা, তার থেকে অনেক দূরের কিছু অপ্রয়োজনীয় নিয়ে প্রশ্ন আসতে শুরু করেছে? এর অর্থ হল, স্রেফ সময় নষ্ট ছাড়া, আপনার মধ্যে তেমন কিছু পাননি ওঁরা। ।

• পরপর প্রশ্ন ধেয়ে আসছে কি না, সেটা একটা বড় ব্যাপার। যদি ঠিকঠাকভাবে আসে, তা হলে ঠিকই আছে। কিন্তু যদি প্রশ্নের পিঠে প্রশ্ন চাপিয়ে দেওয়া হয়, তা হলে কিন্তু গোলমাল বুঝতে হবে। বুঝে নিন, আপনাকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা চলছে। আপনি হয়তো ওভারস্মার্ট হতে গিয়েছিলেন।

• আবার প্রশ্ন খুব দেরি করে আসে, তা হলেও বিপদ বুঝতে হবে। আপনার উত্তরে তেমন সারবস্তু নেই বলেই ইন্টারভিউয়ার প্রশ্ন করতে দেরি করছেন।

• ইন্টারভিউয়ে আপনাকে আকর্ষণীয় মনে হলে, যাঁরা নিচ্ছেন, তাঁরা চোখে চোখ রেখে কথা বলবেন। আপনার চোখে চোখ রেখে কথা না বললে বুঝতে হবে সমস্যা রয়েছে। হচ্ছে না এই সংস্থার হয়ে কাজ করার।

• ইন্টারভিউ শেষে সাধারণত একটি হাসি বিনিময় হয়। সেই হাসি উজ্জ্বল হলে, ইন্টারভিউ ভালো হয়েছে। কিন্তু খারাপ হলে হাসি হয় স্রেফ নাম-কে-ওয়াস্তে। তখন বুঝে নিতে হবে, চান্স খুব একটা নেই।

• কত সময় ধরে আপনার ইন্টারভিউ নেয়া হয়েছে? সময়টি খেয়াল করুন। সেটা খুব অল্পসময়ের জন্য হলে, বুঝতে হবে, এই চাকরিটি আর হচ্ছে না।

• লক্ষ্য করুন, সামান্য কিছু কথা বলার পরেই যদি আপনাকে বলে দেওয়া হল, ‘‘ধন্যবাদ। আপনার সঙ্গে আমাদের এইচআর ডিপার্টমেন্ট যোগাযোগ করবে।’’ তখন চোখ বন্ধ করে ধরে নিন, স্যালারি-প্যাকেজ ফাইন্যাল করার জন্য এইচআরের সেই ফোন কল আর আসবে না।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *