বিশ্বের প্রভাবশালী শীর্ষ ১০ চিন্তাবিদ
সম্প্রতি জুরিখভিত্তিক পত্রিকা টাগেনসানজেইগার তাদের ওয়েবসাইটে বিশ্বের প্রভাবশালী শীর্ষ ১০০ চিন্তাবিদের তালিকা প্রকাশ করেছে। শীর্ষ তালিকায় যারা রয়েছেন তাদের চিন্তার মাধ্যমে প্রভাবিত করেছেন পৃথিবীর সামগ্রিক চিন্তাধারাকে। তালিকাটি তৈরির জন্য গবেষণা করেন জুরিখের গতলিয়েব ডাটওয়ালের ইনস্টিউট ফর ইকোনমি অ্যান্ড সোশ্যাল স্টাডিজ এবং ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি)’র গবেষক পিটার গ্লুর। ‘গ্লোবাল থট লিডার্স ২০১৪’ শীর্ষক এ তালিকা করতে তারা এমন সব ব্যক্তিদের উপর গবেষণা করেছেন যারা বিশ্বের সকল শ্রেণির মানুষের চিন্তাধারাকে প্রভাবিত করেছেন। ইংরেজি ভাষার সংবাদ মাধ্যম ও তথ্যদাতা প্রতিষ্ঠানের ওপর জরিপ চালিয়ে জাতীয়তা, লিঙ্গ, বয়স এবং জ্ঞানের পরিধির দিক থেকে বিবেচনা করে বিশ্বের ২৩৬ জন বিশিষ্ট চিন্তাবিদ থেকে পদ্ধতিগত বিশ্লেষণের মাধ্যমে শীর্ষ ১০০ প্রভাবশালী চিন্তাবিদকে নির্বাচিত করে। জরিপটি পরিচালনায় বিশেষ সফটওয়্যারের সাহায্য নেয়া হয়েছে। ১০০ প্রভাবশালী চিন্তাবিদের তালিকা থেকে শীর্ষ ১০ চিন্তাবিদের কথা জানচ্ছেন তামিম আল-সাবা।
The top 100 The most influential contemporaray intellectuals in the world
1. Pope Francis
2. Tim Berners-Lee
3. Amartay Sen
4. Milan Kundear
5. Mohammad Younus
6. Mario Vargas Llosa
7. Murray Gell-mann
8. Paulo Coelho
9. Jane Goodall
10. Naomi Klein
- পোপ ফ্রান্সিস: বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের তালিকার শীর্ষে রয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস। তিনি ১৩ মার্চ ২০১৩ সালে ক্যাথলিক গির্জার ২৬৬তম পোপ নির্বাচিত হন। তিনি বিশ্বব্যাপী ক্যাথলিক চার্চ এবং সার্বভৌম ভ্যাটিকান সিটির প্রধান। এ বছরও বিশ্ব অর্থনীতি, রাজনীতি ও সংকটে তার ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর আগ্রহে দীর্ঘ বৈরীর পর হাত মেলালো কিউবা ও যুক্তরাষ্ট্র। পোপ ফ্রান্সিস গত জুনে তিনি ভ্যাটিকানে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলি নেতাদের। তাদের নিয়ে সর্বধর্ম শান্তি প্রার্থনাও করেন তিনি। ভেনিজুয়েলা সরকার আর বিরোধীদের আলোচনার টেবিলে বসানোর সফল উদ্যোগও নিয়েছিলেন তিনি। এবছরও তার মন্তব্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে অত্যন্ত বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছে। দেশে দেশে গৃহযুদ্ধ ও সন্ত্রাসবিরোধী অবস্থান নিয়ে তার মতামতগুলো অনুসারীদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা লাভ করেছে। মৃদুভাষী এই ধর্মীয় নেতা বিভিন্ন ইস্যুতে যেমন যুগোপযোগী গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন তেমনি অনুসারীদের নিয়ন্ত্রণেও সফল ছিলেন। মান্যবর পোপ ফ্রান্সিসের পূর্ব নাম ছিল, জর্জ মারিও বেরগোগলিও। জন্ম আর্জেন্টিনায় ১৭ ডিসেম্বর ১৯৩৬ সালে।
- টিম বার্নার্স-লি: ‘গ্লোবাল থট লিডার ২০১৪’ জরিপে ২য় নাম ‘ইন্টারনেটের পোপ’ হিসেবে পরিচিত যিনি পেশায় একজন ইংরেজ পদার্থবিদ, কম্পিউটার বিজ্ঞানী, ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি)’র অধ্যাপক, এবং (ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব) ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের জনক এবং ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব কনসোর্টিয়ামের (১৯৯৪ সালে গঠিত) পরিচালকের। তিনি ‘TimBL’ নামেও পরিচিত। ১৯৮৯ সালের মার্চে টিম বার্নার্স-লি পূর্ববর্তী হাইপারটেক্সট সিস্টেম হতে ধারণা নিয়ে, যে প্রস্তাবনা লেখেন তা হতেই উৎপত্তি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের। ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব (সংক্ষিপ্তরূপ দি ওয়েব) হল ইন্টারনেট দিয়ে দর্শনযোগ্য আন্তঃসংযোগকৃত তথ্যাদির একটি ভাণ্ডার। একটি ওয়েব ব্রাউজারের সহায়তা নিয়ে একজন দর্শক ওয়েবপাতা বা ওয়েবপেজ দেখতে পারে এবং সংযোগ বা হাইপারলিঙ্ক ব্যবহার করে নির্দেশনা গ্রহণ ও প্রদান করতে পারে। তার এই আবিষ্কারের মধ্যমে ইন্টারনেটে ওয়েব প্রযুক্তির নতুন দিগন্ত খুলে যায়। স্যার টিমোথি জন বার্নার্স-লি’র জন্ম যুক্তরাজ্যে ১৯৫৫ সালের ৮ জুন। তিনি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব ফাউন্ডেশনের (২০০৯ সালে গঠিত) প্রতিষ্ঠাতা।
- অমর্ত্য সেন: বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের তালিকার শীর্ষ তিনে রয়েছেন তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন ‘ওয়েলফেয়ার ইকোনমিক’ বা ‘জনকল্যাণ অর্থনীতি’খ্যাত ভারতীয় বাঙালি অর্থনীতিবিদ ও দার্শনিক অমর্ত্য সেন। তাঁর জন্ম ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ১৯৩৩ সালের ৩ নভেম্বর। তার আদি নিবাস বর্তমান বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার ওয়ারীতে। তিনি দুর্ভিক্ষ, মানব উন্নয়ন তত্ত্ব, জনকল্যাণ অর্থনীতি ও গণদারিদ্রের অন্তর্নিহিত কার্যকারণ বিষয়ে গবেষণা এবং উদারনৈতিক রাজনীতিতে অবদান রাখার জন্য ১৯৯৮ সালে অর্থনৈতিক বিজ্ঞানে ব্যাংক অফ সুইডেন পুরস্কার (যা অর্থনীতির নোবেল পুরস্কার হিসেবে পরিচিত) লাভ করেন। তিনিই জাতিসংঘের বিভিন্ন দেশের শিক্ষা এবং মানব সম্পদ উন্নয়ন সম্পর্কে ধারনা পাওয়ার জন্য মানব উন্নয়ন সূচক আবিষ্কার করেন। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক না হয়েও তিনিই প্রথম ন্যাশনাল হিউমিনিটিস মেডেল পান। তিনি ১০২টি সম্মানসূচক ডিগ্রি লাভ করেছেন। অমর্ত্য সেনের লিখিত বই বিগত ৪০ বছর ধরে প্রায় ৩০টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
- মিলান কুন্দিয়ার: বিশ্বের প্রভাবশালী চিন্তাবিদদের শীর্ষ তালিকায় রয়েছেন ৪র্থ স্থানে। ‘পৃথিবীব্যাপী জীবিত লেখকদের মধ্যে তিনি অসামান্য। চেক রিপাবলিকের এই লেখকের জন্ম ১৯২৯ সালের পয়লা এপ্রিল। তবে ১৯৭৫ সাল থেকে তিনি ফ্রান্সে নির্বাসিত জীবন যাপন করছেন। ১৯৮১ সালে ফরাসি নাগরিকত্ব পাওয়ার পর তিনি চান, তাঁর লেখালিখি ‘ফরাসি সাহিত্য’ হিসেবেই গণ্য হোক। তাঁর রচিত গ্রন্থের সংখ্যা ২৮টি। এক সময়, তাঁর লেখা অধিকাংশ বই চেকোস্লোভাকিয়ার সমাজতন্ত্রবাদী অঞ্চলসমূহে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল। তাঁর বহুল আলোচিত তিনটি উপন্যাসের নাম যথাক্রমে ‘জোকস’ (১৯৬৭), ‘বুক অফ লাফটার এন্ড ফরগেটিং’ (১৯৭৯) ও ‘দ্য আনবেয়ারেবল লাইটনেস অব বিয়িং’ (১৯৮৪)। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ তাঁর লেখা ও শিক্ষাজীবনকে বারবার ব্যাহত করেছে। কুন্দিয়ারের সাহিত্যকর্ম আনেক বেশি দর্শননির্ভর। শুরুর দিকে তাঁর লেখা ছিল অনেকটা সমাজতন্ত্র পরিপন্থী। চেক সমাজতন্ত্রবাদের অন্তর্নিহিত শূন্যতা ও কপটতা দেখে তিনি প্রচণ্ড ব্যথিত হন এবং রাগে-ক্ষোভে দেশ ছাড়েন।
- মুহাম্মদ ইউনূস: ক্ষুদ্রঋণের প্রবক্তা, গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও সামাজিক ব্যবসা ধারণার পথ প্রদর্শক অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস ‘গ্লোবাল থট লিডার ২০১৪’ জরিপে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী চিন্তাবিদদের তালিকার পঞ্চম স্থানে অবস্থান করছেন। অধ্যাপক ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা। মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক যৌথভাবে ২০০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। তিনি প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে এই পুরস্কার লাভ করেন। তাঁর জন্ম বাংলাদেশের চট্টগ্রামে ২৮ জুন ১৯৪০ সালে। ১৯৮০ সালের পরের অবিধানে ‘মাইক্রো ক্রেডিট’ বা ‘ক্ষুদ্র ঋণ’ শব্দটি যোগ হয় তাঁর হাত ধরে। ড. ইউনূস বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত সর্বোচ্চ বেসরকারি সম্মাননা পদক ‘স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার’ (১৯৮৭), বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার (১৯৯৪), মার্কিন প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম (২০০৯),যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা কংগ্রেশনাল স্বর্ণপদক (২০১০)সহ আরও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছেন। এ ছাড়া তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৪৮টি সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
- মারিও বার্গাস ইয়োসা: ‘গ্লোবাল থট লিডার ২০১৪’ জরিপে ৬ষ্ঠ নামটি পেরুর এই শীর্ষস্থানীয় কথাসাহিত্যিক ও গদ্যকারের, যিনি ২০১০ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তাঁকে ল্যাটিন আমেরিকার “রাজনৈতিক বিবেক” বিবেচনা হয়। তাঁর রচনাবলীতে ল্যাটিন আমেরিকায় ক্ষমতা ও দুর্নীতির চিত্র তীব্রভাবে চিত্রিত। বিংশ শতকের প্রধান হিস্পানী লেখকদের মধ্যে তিনি অন্যতম। তাঁর রচিত উপন্যাস, নাটক এবং গদ্যগ্রন্থের সংখ্যা ৩০-এর অধিক। পর্যবেক্ষকদের মতে আন্তর্জাতিক সাহিত্য পরিমণ্ডলে তাঁর প্রভাব অত্যন্ত গভীর। ১৯৬০-এর দশকে নায়কের কাল, দ্য গ্রিন হাউজ এবং গীর্জায় কথোপকথন উপন্যাসত্রয় কেন্দ্র ক’রে তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়তে থাকে। উপন্যাস, প্রবন্ধ-নিবন্ধ এবং সংবাদপত্রীয় রচনাবলীতে তাঁর অকপট রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি শাসক মহলে বিশেষ তোলপাড় সৃষ্টি করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাঁর রচনা পেরুর জাতীয় ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে রচিত হলেও ক্রমশ তা বিংশ শতকের বিশ্বব্যাপী সাধারণ মানুষের রাজনৈতিক অসহায়ত্ব ও বিপন্নতার প্রতিফলিত হয়েছে। ইয়োসার জন্ম পেরুতে ১৯৩৬ সালের ২৮ মার্চ।
- মারি গেল-মান: মার্কিন এই পদার্থবিজ্ঞানী মৌলিক কণাসমূহের পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে মৌলিক গবেষণার জন্য ১৯৬৯ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তার জন্ম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯২৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর। কোয়ার্ক (১৯৬২) হল একপ্রকার মৌলিক কণিকা। মারি গেল-মান এমন ধরণের মৌলিক কণার অস্তিত্বের প্রস্তাব করেন যারা একসাথে হয়ে প্রোটন ও নিউট্রনের মত যৌগ কণাগুলো গঠন করে। কোয়ার্কের শক্তিশালী বৈদ্যুতিক আধান আছে। প্রোটন ও নিউট্রন প্রত্যেকের মধ্যে তিনটি করে কোয়ার্ক আছে। মারি গেল-মানের লিখিত গ্রন্থের সংখ্যা ৫টি। সেগুলো হল: হোয়ার্ট’স এ পনি? (১৯৬৭), ব্রোকেন স্কেল ইনভারিয়ান্স লাইট কনে (১৯৭১), দ্যা কোয়ার্ক এন্ড টি জাগুয়ার (১৯৯৪), দ্যা এইটফোল্ড ওয়ে (২০০০) এবং কোয়ার্ক এন্ড টি জাগুয়ার বি পিবিপি(২০০৩)। পদার্থ বিজ্ঞানে অসামান্য অবদান রাখা পদার্থবিদ মুরে গেলমান ‘গ্লোবাল থট লিডার ২০১৪’ জরিপে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী চিন্তাবিদদের তালিকার ৭ম স্থানে অবস্থান করছেন।
- পাওলু কোয়েলু: বিশ্বের প্রভাবশালী চিন্তাবিদদের শীর্ষ তালিকায় ৮ম স্থানে রয়েছেন ‘বিশ্ব আত্ম’খ্যাত ব্রাজিলীয় এই ঔপন্যাসিক এবং গীতিকার। তিনি ১৯৪৭ সালের ২৪ আগস্ট ব্রাজিলের রাজধানী রিও ডি জেনেইরোতে জন্মগ্রহণ করেন। তার সবচেয়ে বিখ্যাত উপন্যাসের নাম দ্যা আলকেমিস্ট (১৯৮৮ সালে প্রকাশিত)। তার লেখায় ভালোবাসা, আধ্যাত্মিকতা এবং দর্শনের প্রভাব মুখ্য। ’দ্যা আলকেমিস্ট’ উপন্যাসটিতে গল্পের নায়কের সাথে আফ্রিকায় এক আলকেমিস্টের সাক্ষাৎ হয়। সেখান থেকেই কাহিনীর শুরু। বিখ্যাত এই উপন্যাসটি ৮০টি ভাষায় অনুদিত হয়েছে। বিশ্বজুড়ে ‘দ্যা আলকেমিস্ট’-এর ১৬ কোটি ৫০ লক্ষ কপি বিক্রি হওয়ায়, উপন্যাসটি স্থান করে নিয়েছে সর্বকালের সর্বচ্চ পর্তুগিজ ভাষা গ্রন্থের তালিকায়। তার এই বইটি একটি পাবলিশিং ফেনোমেনা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। মেধা ও সৃজনশীলতার স্বীকৃতি হিসাবে পাওলু কোয়েলু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার, ভূষিত হয়েছেন সম্মাননায় । তার আরেকটি বিখ্যাত উপন্যাসের নাম ব্রিডা (প্রকাশিত ১৯৯০)। এপর্যন্ত তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৩১।
- জেন গোদাল: বিশ্বের প্রভাবশালী চিন্তাবিদদের শীর্ষ তালিকায় ৯ম স্থানে নাম রয়েছেন ব্রিটিশ প্রিমাটোলোজিস্ট, ইথোলেজিস্ট, নৃতত্ববিদ এবং জাতিসংঘের শান্তি দূত ডামি জেন মারিস গোদালের। তাঁর সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি এই সময়ের সর্বশ্রেষ্ঠ শিম্পাঞ্জীর আচরণগত বিশেষজ্ঞ। তিনি ৫৫ বছর ধরে তানজানিয়ার গম্বে স্ট্রিম ন্যাশনাল পার্কে বন্য শিম্পাঞ্জীর সামাজিক ও পারিবারিক মিথষ্ক্রিয়ার উপর গবেষণ করে বিখ্যাত হন। তিনি জেন গোদাল ইন্সটিটিউট (স্থাপিত ১৯৭৭) এবং রুটস ও সূত্স প্রোগ্রামের (স্থাপিত ১৯৯১) প্রতিষ্ঠাতা। এ ছাড়াও তিনি বন সংরক্ষণ এবং পশু কল্যাণ বিষয়ে বিশ্বব্যাপী কাজ করেছেন। এখন পর্যন্ত তাঁর গবেষণা নিয়ে নির্মিত হয়েছে একাধিক প্রমাণ চিত্র এবং টেলিভিশন সিরিজ। জেন গোদালের জন্ম ৩ এপ্রিল ১৯৩৪ সালে। তিনি প্রায় শতাধিক গ্রন্থের রচয়িতা। তাঁর কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ কিয়োটো পুরস্কার (১৯৯০), হুবার্ড পদক (১৯৯৫), পরিবেশগত অ্যাচিভমেন্ট জন্য টিলার পুরস্কার (১৯৯৭), এবং অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার (২০০৪) পেয়েছেন।
- নাওমি ক্লেইন: ১৯৭০ সালে কানাডায় জন্মগ্রহণ করেছেন লেখক, সাংবাদিক ও অ্যাক্টিভিস্টি নাওমি ক্লেইন। ‘নো লোগো’খ্যাত এই লেখিকা বিশ্বের প্রভাবশালী চিন্তাবিদদের শীর্ষ তালিকায় ১০ স্থানে রয়েছেন। তার প্রথম বই নো লোগো প্রকাশিত হয়েছিল ২০০০ সালে। কেউ এ বইটিকে বলেন অ্যান্টি গ্লোবালাইজেশন মুভমেন্টের ম্যানিফেস্টো, কেউ বলেন বাইবেল। এন্টি-গ্লোবালাইজেশন অ্যাক্টিভিস্টদের প্রতিবাদের মুখে যে ডাব্লিউটিও কনফারেন্স ব্যর্থ হয় তার এক মাস পর এ বইটি প্রকাশিত হয়। বইটি বড় কর্পোরেটদের কার্যক্রমকে ব্যাখ্যা করেছে এবং ব্র্যান্ড নির্ভর ক্রয় সংস্কৃতির কড়া সমালোচনা করেছে। গরিব দেশগুলোর শ্রমিকদের কিভাবে ঠকিয়ে এ কর্পোরেটগুলো বিশাল মুনাফা করছে তার বিস্তারিত বিবরণও আছে বইটিতে। বইটি আন্তর্জাতিক ভাবে বেস্টসেলারের মর্যাদা পায়। তাঁর অপর তিনটি গ্রন্থ হল ফেঞ্চেস অ্যান্ড উইনডোজ (২০০২), দি শক ডকট্রিন : দি রাইজ অফ ডিজাস্টার ক্যাপিটালিজম (২০০৭) এবং দিজ চেঞ্জেস এভরিথিং: ক্যাপিটালিজিয়াম ভস. দি ক্লাইমেট (২০১৪)।
লেখার লিঙ্ক:
Leave a Reply