বেশ কিছুদিন আগে বায়োগ্রাফী অনলাইন নামক একটি ওয়েবসাইট জানিয়েছিল ঊনবিংশ, বিংশ এবং একবিংশ শতাব্দীর পৃথিবীর সেরা ১০০জন জনপ্রিয় ব্যাক্তিত্বের তালিকা। আমরা সেখান থেকে তুলে এনেছি সেরা দশ জনকে। চলুন জেনে নেয়া যাক পৃথিবীর সেরা দশ জনপ্রিয় ব্যাক্তির ব্যাপারে।
মেরিলিন মনরো
(জন্ম জুন ১, ১৯২৬ – আগস্ট ৫, ১৯৬২) ছিলেন মার্কিন অভিনেত্রী, মডেল এবং গায়ক। ১৯৫০ ও ১৯৬০ দশকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাণিজ্যিকভাবে সফল চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন
শৈশবের বেশিভাগ সময় শিশুপল্লীতে কাটিয়ে, মনরো মডেল হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন, যা পরবর্তীতে ১৯৪৬ সালে তাকে টুয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি ফক্সের সাথে চুক্তিবদ্ধ করে। তার প্রথমদিকের চলচ্চিত্রে উপস্থিতি খুবই গৌণ ছিল, কিন্তু দ্যা আশফাল্ট জাঙ্গল এবং অল অ্যাবাউট ইভ (দুটিই ১৯৫০ সালে) চলচ্চিত্রে তার কর্মসঞ্চালন সবার মনোযোগ আকর্ষণ করে। ১৯৫২ সালে প্রথম তিনি ডোন্ট বদার টু নক চলচ্চিত্রে এবং ১৯৫৩ সালে নায়াগ্রা শিরোনামের একটি মেলোড্রামাটিক চলচ্চিত্রে প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান, যা চলচ্চিত্র তার মোহময়তা অধিষ্ঠিত করে। তার “মূক স্বর্ণকেশী” ব্যক্তিত্ব পরবর্তী বিভিন্ন চলচ্চিত্রে কমিক প্রভাব বিস্তার করে, যেমন জেন্টলমেন প্রেফার ব্লন্ডস (১৯৫৩), হাও টু ম্যারি অ্যা মিলিওনার (১৯৫৩) এবং দ্য সেভেন উয়ার ইচ (১৯৫৫)। টাইপকাস্টিং দ্বারা সীমাবদ্ধ, মনরো তার পরিসীমা প্রসারিত করতেঅ্যাক্টরস স্টুডিওতে পড়াশোনা করেন। বাস স্টপ চলচ্চিত্রে তার নাটকীয় পারফরম্যান্স সমালোচকদের কর্তৃক প্রশংসিত হয় এবং গোল্ডেন গ্লোব মনোনয়ন অর্জন করে।
অভিনয় জীবন
মনেরোর অভিনয় জীবন শুরু হয় মডেলিং দিয়ে ১৯৪৬সালে। এখানেই মনরো বাদামি বা ব্রাউনিস কালার চুল কে প্লাটিনাম হোয়াইটের এক আভা আনেন যা তার ট্রেডমার্ক বলা চলে। আর তার নামের পরিবর্তে নতুন নাম হয় মেরিলিন মনরো। ১৯৪৭ সালে 20th Century-Fox স্টুডিওর সাথে চুক্তি বদ্ধ হন মনরো এবং দুটি মুভিতে তাকে প্রথমবারের মত দেখা যায়। ১৯৪৯ সালে মনেরো আবার মডেলিংয়ে ফিরে আসেন।
১৯৫০ সালে অল অ্যাবাউট ইভ নামে চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় করেন। ১৯৫৭ সালে মুক্তি পায় বিখ্যাত ছবি দ্য সেভেন ইয়ার ইটচ। এছাড়াও হাউ টু মেরি অ্যা মিলিওনিয়ার, দ্য প্রিন্স অ্যান্ড দ্য শোগার্ল প্রভৃতি ছবিতে অভিনয় করে তিনি বিশ্বকে মন্ত্রমুগ্ধ করেন। সাম লাইক ইট হট ছবিতে অভিনয় করে তিনি গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।
পারিবারিক জীবন
সংক্ষিপ্ত জীবনে তিন তিনবার বিয়ের করেন।
মৃত্যু
১৯৬২ সালের ৫ আগস্ট লস অ্যাঞ্জেলেসের ব্রেন্টউডে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে পরলোকগমন করেন মনরো। ধারণা করা হয়, মাত্রাতিরিক্ত বড়ি খেয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন। মনেরো ছিলেন জনপ্রিয়তার একদম শীর্ষে
আব্রাহাম লিংকন
(জন্ম: ১২ ফেব্রুয়ারি, ১৮০৯ – মৃত্যু: ১৫ এপ্রিল, ১৮৬৫) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৬তম রাষ্ট্রপতি। তিনি রিপাবলিকান পার্টির প্রথম রাষ্ট্রপতি, এবং ১৮৬১ হতে ১৮৬৫ খ্রীস্টাব্দ পর্যন্ত ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিলেন। দাস প্রথার চরম বিরোধী লিংকন ১৮৬০ সালে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হিসাবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ১৮৬৩ সালে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাস প্রথার অবসান ঘটান এবং মুক্তি ঘোষণা (Emancipation Proclamation) এর মাধ্যমে দাসদের মুক্ত করে দেন। দাস প্রথাকে কেন্দ্র করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধের সময় তিনি উত্তরাঞ্চলীয় ইউনিয়ন বাহিনীর নেতৃত্ব দেন, এবং দক্ষিণের কনফেডারেট জোটকে পরাজিত করেন। জন উইল্ক্স বুথ নামক আততায়ীর হাতে তিনি ১৮৬৫ খ্রীস্টাব্দের ১৫ এপ্রিল গুলিবিদ্ধ ও নিহত হন।
আব্রাহাম লিংকন (১২ ফেব্রুয়ারী,১৮০৯ – এপ্রিল ১৫, ১৮৬৫) ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৬ তম প্রেসিডেন্ট। ১৮৬১ সালের মার্চে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ১৫ এপ্রিল ১৮৬৫ সাল পর্যন্ত তিনি সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেন। তার অসাধারণ নেতৃত্ব গুণ,বাগ্মিতা, দূরদর্শীতার বলে তিনি আমেরিকান গৃহযুদ্ধ কালীন সময়েও সফলভাবে সকল প্রতিবন্ধকতাকে জয় করতে সক্ষম হোন। আব্রাহাম লিংকন ছিলেন এই তালিকার ২য় অবস্থানে
মাদার তেরেসা
যাঁর আসল নাম ছিল আনিয়েজ গঞ্জে (আগস্ট ২৫,১৯১০ – সেপ্টেম্বর ৫, ১৯৯৭) ছিলেন একজন আলবেনীয়-বংশোদ্ভুত ভারতীয় ক্যাথলিক সন্ন্যাসিনী। ১৯৫০ সালে কলকাতায় তিনি মিশনারিজ অফ চ্যারিটি নামে একটি সেবাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। সুদীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে তিনি দরিদ্র, অসুস্থ, অনাথ ও মৃত্যুপথযাত্রী মানুষের সেবা করেছেন। সেই সঙ্গে মিশনারিজ অফ চ্যারিটির বিকাশ ও উন্নয়নেও অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। প্রথমে ভারতে ও পরে সমগ্র বিশ্বে তাঁর এই মিশনারি কার্যক্রম ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর মৃত্যুর পর পোপ দ্বিতীয় জন পল তাঁকে স্বর্গীয় আখ্যা দেন; এবং তিনি কলিকাতার স্বর্গীয় টেরিজা (Blessed Teresa of Calcutta) নামে পরিচিত হন।। ম্যালকম মাগারিজের বই ও প্রামাণ্য তথ্যচিত্র সামথিং বিউটিফুল ফর গড তাঁর সেবাকার্যের প্রচারের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিল। ১৯৭৯ সালের ১৭ অক্টোবর তিনি তাঁর সেবাকার্যের জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কার ও ১৯৮০ সালে ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ভারতরত্ন লাভ করেন। মাদার টেরিজার মৃত্যুর সময় বিশ্বের ১২৩টি রাষ্ট্রে এইচআইভি/এইডস, কুষ্ঠ ও যক্ষার চিকিৎসাকেন্দ্র, ভোজনশালা, শিশু ও পরিবার পরামর্শ কেন্দ্র, অনাথ আশ্রম ও বিদ্যালয়সহ মিশনারিজ অফ চ্যারিটির ৬১০টি কেন্দ্র বিদ্যমান ছিল। তালিকার তৃতীয় অবস্থানে জায়গা দেয়া হয়েছিল এই নারীকে
জন এফ. কেনেডি
(মে ২৯, ১৯১৭ – নভেম্বর ২২, ১৯৬৩) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫তম রাষ্ট্রপতি। তিনি JFK নামেও পরিচিত। তিনি ১৯৬১ সাল থেকে ১৯৬৩ সালে নিহত হওয়ার আগে পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। দিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে Motor Torpedo Boat PT-109 এর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তার পিতা, জোসেফ পি. কেনেডি, সিনিয়র, এর উৎসাহ আর সহযোগিতায় তিনি রাজনীতিতে আসেন এবং U.S. House of Representatives এর Massachusetts’s 11th congressional district এ ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৩ পর্যন্ত ডেমক্রেটদের প্রতিনিধিত্ব করেন। পরবর্তিতে তিনি সিনেটে ১৯৫৩ থেকে ১৯৬০ পর্যন্ত ডেমক্রেটদের প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৯৬০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি তৎকালিন উপ-রাষ্ট্রপতি এবং রিপাবলিকান প্রাথী রিচার্ড নিক্সনকে পরাজিত করেন। তিনি থিওডর রুজভেল্ডের পর আমেরিকার দিতীয় কনিষ্টতম রাষ্ট্রপতি, বিংশ শতাব্দীতে জন্ম নেয়া প্রথম রাষ্ট্রপতি, এবং সর্বকনিষ্ট নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি। কেনেডি প্রথম ও একমাত্র ক্যাথলিক এবং প্রথম আইরিশ আমেরিকান রাষ্ট্রপতি। কেনেডি একমাত্র আমেরিকান রাষ্ট্রপতি যিনি পুলিৎজার পুরস্কার জিতেছেন। ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর কেনেডি আততায়ীর গুলিতে নিহত হন। লি হার্ভি অসওয়াল্ডকে এই ঘটনার জন্য অভি্যুক্ত করা হয়। কিন্তু তার বিচার হয়নি কারণ দুইদিন পরেই জ্যাক রুবি নামক একজনের গুলিতে হার্ভি নিহত হয়। এফবিআই,ওয়ারেন কমিশন এবং হাউস সিলেক্ট কমিটি তদন্ত অনুসারে অসওয়াল্ডই ছিল কেনেডির আততায়ী। তিনি ছিলেন তালিকার ৪র্থ অবস্থানে।
মার্টিন লুথার কিং
(জন্মঃ ১৫ই জানুয়ারি, ১৯২৯ – মৃত্যুঃ ৪ঠা এপ্রিল, ১৯৬৮) বিখ্যাতআফ্রিকান-আমেরিকান মানবাধিকার কর্মী। আমেরিকায় নাগরিক ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় অহিংস আন্দোলনের জন্য ১৯৬৪ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন।নোবেল শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে তিনিই সর্বকনিষ্ঠ।
রাজনৈতিক জীবন
মার্টিন লুথার কিং, জুনিয়র তার খ্রীষ্টীয়মতানুসারে অহিংস উপায় নাগররিক অধিকার রক্ষায় অদানের জন্য অধিকজনপ্রিয়তা লাভ করেছেন। সফল এই রাজনীতিবিদ তার মণ্ত্রমূগ্ধকর বক্তৃতাদ্বারা জনমনে স্থায়ী আসন করে নিয়েছেন।
পুরস্কার ও সম্মাননা
নোবেল শান্তি পুরস্কার, ১৯৬৪ সালের ১৪ ই অক্টোবর তিনি তাঁর অহিংস আন্দোলনের জন্য, বিশ্ব শান্তি রক্ষায়, শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন
১৯৬৮ সালের ৪ এপ্রিল শ্বেতাঙ্গ উগ্রপন্থী যুবক জেমস আর্ল রে নামক আততায়ীর হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মার্টিন মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ছিলেন তালিকার ৫ম অবস্থানে।
নেলসন ম্যান্ডেলা
( জন্ম: জুলাই ১৮, ১৯১৮ – ডিসেম্বর ৫, ২০১৩) ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম রাষ্ট্রপতি। তিনি ১৯৯৪ হতে ১৯৯৯ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে ম্যান্ডেলা আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের সশস্ত্র সংগঠন উমখন্তো উই সিযওয়ের নেতা হিসাবে বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। ১৯৬২ সালে তাঁকে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী সরকার গ্রেপ্তার করে ও অন্তর্ঘাতসহ নানা অপরাধের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। ম্যান্ডেলা ২৭ বছর কারাবাস করেন। এর অধিকাংশ সময়ই তিনি ছিলেন রবেন দ্বীপে। ১৯৯০ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি তিনি কারামুক্ত হন। এর পর তিনি তাঁর দলের হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ সরকারের সাথে শান্তি আলোচনায় অংশ নেন। এর ফলশ্রুতিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদের অবসান ঘটে এবং সব বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণে ১৯৯৪ সালে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। দক্ষিণ আফ্রিকায় ম্যান্ডেলা তাঁর গোত্রের দেয়া মাদিবা নামে পরিচিত। গত চার দশকে ম্যান্ডেলা ২৫০টিরও অধিক পুরস্কার পেয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে ১৯৯৩ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার। তাছাড়াও তিনি ১৯৮৮ সালে শাখারভ পুরস্কারের অভিষেক পুরস্কারটি যৌথভাবে অর্জন করেন. ম্যান্ডেলা ছিলেন জনপ্রিয়তার ৬ষ্ঠ অবস্থানে
উইনস্টন চার্চিল
(৩০শে নভেম্বর, ১৮৭৪ – ২৪শে জানুয়ারি, ১৯৬৫) ইংরেজ রাজনীতিবিদ ও লেখক। তিনি যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অধিক পরিচিত। চার্চিলকে যুক্তরাজ্য ও বিশ্বের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে গণ্য করা হয়। প্রথম জীবনে তিনি ব্রিটিশ নৌবাহিনীর সদস্য ছিলেন। ১৯৫৩ সালে তিনিসাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ২০০২ সালে বিবিসির এক জরিপে তিনি সর্বকালের সেরা ব্রিটেনবাসী হিসেবে মনোনীত হন।
সমালোচনা
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বাংলায় যে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হয়েছিল (১৯৪৩ সালে) সেজন্যে অনেকেই চার্চিলের নীতিকে দোষারোপ করে থাকেন।যে দুর্ভিক্ষে প্রায় তিরিশ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। তিনি আছেন তালিকায় সপ্তম অবস্থানে।
বিল গেটস
(জন্ম অক্টোবর ২৮, ১৯৫৫) মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা, চেয়ারম্যান, সাবেক প্রধান সফটওয়্যার নির্মাতা এবং সাবেকসিইও। একাধারে ১৩ বছর যাবৎ তিনি পৃথিবীর সর্বোচ্চ ধনী ব্যক্তি ছিলেন। তিনি ১৯৯৪ সালের ১লা জানুয়ারী তারিখে মেলিন্ডা ফ্রেঞ্চ- কে বিয়ে করেন। বিল গেটস সিয়াটল, ওয়াশিংটনে উচ্চ-মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম উইলিয়াম হেন্রী গেটস সিনিয়র, যিনি একজন প্রসিদ্ধ আইনজীবী (অবসরপ্রাপ্ত)। মাতার নাম মেরি ম্যাক্সয়েল গেটস। গেটসের ক্রিস্টিয়েন নামে এক বড় বোন আর লিব্বি নামের এক ছোট বোন আছে। শৈশবে বাবা-মা তাঁকে আইনজীবী বানাতে চেয়েছিলেন। ১৩ বছর বয়সে তিনি লেকসাইড স্কুলে ভর্তি হন। এখান থেকে ১৯৭৩ সালে পাশ করেন। তিনি স্যাট পরীক্ষায় ১৬০০ এর মধ্যে ১৫৯০ পান এবং ১৯৭৩ এর শরতে হার্ভার্ড কলেজে ভর্তি হন। তিনি ১৯৮৫ সালের ২০ নভেম্বর মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ১.০ সংস্করণ প্রকাশ করে। বর্তমানে উইন্ডোজ পৃথিবীর একটি অন্যতম কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম। বিল গেটস আছেন তালিকার অষ্টম অবস্তানে
মুহাম্মদ আলী
( ১৭ জানুয়ারি ১৯৪২–৩ জুন ২০১৬) একজন মার্কিন পেশাদার মুষ্টিযোদ্ধা ছিলেন, সাধারণভাবে যাকে ক্রীড়ার ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হেভিওয়েট হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। ক্রীড়াজীবনের শুরুর দিকে আলী রিংয়ের ভেতরে ও বাইরে একজন অনুপ্রেরণাদায়ক ও বিতর্কিত ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। স্পোর্টস ইলাস্ট্রেটেড তাঁকে শতাব্দীর সেরা খেলোয়াড় ও বিবিসি তাঁকে শতাব্দীর সেরা ক্রীড়াব্যক্তিত্ব হিসেবে সম্মানিত করেছে।
ক্লে ১২ বছর বয়সে প্রশিক্ষণ শুরু করেন। ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে ২২ বছর বয়সে তিনি সনি লিস্টনকে পরাজিত করে বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে নেন। ফেব্রুয়ারি ২৫ থেকে সেপ্টেম্বর ১৯ পর্যন্ত তিনি অবিতর্কিত হেভিওয়েট বক্সিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে সম্মান পান। এর কয়েকদিন পরে, তিনি নেশন অব ইসলামে যোগদান করে তাঁর নাম পরিবর্তন করেন। ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি সুন্নি ইসলামে ধর্মান্তরিত হন।
১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দে, আলী তাঁর ধর্মীয় বিশ্বাস ও ভিয়েতনাম যুদ্ধে আমেরিকার অংশগ্রহণের বিরোধিতার কারণে মার্কিন সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক যোগদান করতে অস্বীকৃত হন। এর কয়েকদিন পরে তাঁকে এই কারণে দোষী সাব্যস্ত করে তাঁর বক্সিং উপাধি কেরে নেওয়া হয়। তিনি তাঁর জীবনের সেরা সময়ে পরবর্তী চার বছর কোন ধরণের বক্সিং প্রতিযোগিয়ায় নামতে পারেননি। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে তাঁর আপীল সুপ্রিম কোর্টে পেশ হয়, যেখানে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ সরিয়ে নেওয়া হয়। যুদ্ধের বিরুদ্ধে আলীর বিবেকজনিত কার্যকলাপ তাঁকে সংস্কৃতি বিরোধী প্রজন্মের নিকট শ্রদ্ধার পাত্র করে তোলে।বক্সিং জগতে ফিরে এসে আলী ১৯৭৪ ও ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে আবার বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে নেন।
পেশাদার কুস্তিগীর জর্জ ওয়েগনার দ্বারা অনুপ্রাণিত আলী বক্সিং-এর সঙ্গে সম্পর্কহীন বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয়ে সাংবাদিক সম্মেলন ও সাক্ষাতকারে স্পষ্ট মতামত জানাতে দ্বিধা করতেন না। আলী শ্বেতাঙ্গ আমেরিকানদের বিরোধিতা করে আফ্রিকান আমেরিকান ক্রীড়াজগতের অবস্থান পরিবর্তন করতে সক্ষম হন।
২০১৬ খ্রিস্টাব্দের ৩রা জুন, শ্বাসনালীর সংক্রমণে অ্যারিজোনায় মুহাম্মদ আলী মৃত্যুবরণ করেন। তিনি আছেন নবম স্থানে তালিকার।
মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী
(২রা অক্টোবর,১৮৬৯ – ৩০শে জানুয়ারি, ১৯৪৮) অন্যতম প্রধান ভারতীয় রাজনীতিবিদ, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রগামী ব্যক্তিদের একজন এবং প্রভাভশালী আধ্যাত্মিক নেতা। তিনি ছিলেন সত্যাগ্রহ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা। এর মাধ্যমে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে জনসাধারণের অবাধ্যতা ঘোষিত হয়েছিল। এ আন্দোলন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল অহিংস মতবাদ বা দর্শনের উপর এবং এটি ছিল ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম চালিকা শক্তি, সারা বিশ্বে মানুষের স্বাধীনতা এবং অধিকার পাওয়ার আন্দোলনের অন্যতম অনুপ্রেরণা। গান্ধী ভারতে এবং বিশ্ব জুড়ে মহাত্মা (মহান আত্মা) এবং বাপু (বাবা) নামে পরিচিত। ভারত সরকারীভাবে তাঁর সম্মানার্থে তাকে ভারতের জাতির জনক হিসেবে ঘোষণা করেছে । ২রা অক্টোবর তাঁর জন্মদিন ভারতে গান্ধী জয়ন্তী হিসেবে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়। ২০০৭ সালের ১৫ই জুন জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ২রা অক্টোবর-কে আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস হিসেবে ঘোষণা করা। জাতিসংঘের সকল সদস্য দেশ এ দিবস পালনে সম্মতি জ্ঞাপন করে।
একজন শিক্ষিত ব্রিটিশ আইনজীবী হিসেবে, গান্ধী প্রথম তাঁর অহিংস শান্তিপূর্ণ নাগরিক আন্দোলনের মতাদর্শ প্রয়োগ করেন দক্ষিণ আফ্রিকায় নিপীড়িত ভারতীয় সম্প্রদায়ের নাগরিকদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে।
মহাত্মা গান্ধী সমস্ত পরিস্থিতিতেই অহিংস মতবাদ এবং সত্যের ব্যাপারে অটল থেকেছেন। তিনি সাধারণ জীবনযাপন করতেন এবং একটি আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যেটি ছিল স্বয়ংসম্পূর্ণ। তার নিজের পরিধেয় কাপড় ছিল ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় ধুতি এবং শাল যা তিনি নিজেই চরকায় বুনতেন। তিনি সাধারণ নিরামিষ খাবার খেতেন। শেষ জীবনে ফলমূ্লই বেশি খেতেন। আত্মশুদ্ধি এবং প্রতিবাদের কারণে দীর্ঘ সময়ের জন্য উপবাস থাকতেন।
Leave a Reply