ইন্টারভিউতে চাকরিদাতার যে কয়েকটি মিথ্যা বলেন
চাকরিদাতারা জনসেবা বা দয়া করার জন্য ইন্টারভিউতে ডাকে না। তাদেরও লক্ষ্য রয়েছে – কম টাকায় সেরা প্রার্থীকে বেছে নেয়া। এজন্য যখন কোনো পদে কাউকে নিয়োগ দেয়ার পরিকল্পনা করা হয় তখন সে পদের জন্য বেতন এবং আনুষঙ্গিক প্যাকেজের সীমা সর্বনিম্ন থেকে সর্বোচ্চ পর্যন্ত ঠিক করে রাখা হয়। চাকরিদাতাদের প্রথম প্রায়োরোটি থাকে সেরা প্রার্থী কে তাদের সংস্থার জন্য বেছে নেয়া। এর পরে কীভাবে তার সেরাটা আদায় করে নিতে পারবে এ নিয়ে ইন্টারভিউতে বাজিয়ে দেখা। প্রার্থীকে বাজিয়ে দেখতে চাকরিদাতারা ইন্টারভিউতে কিছু মিথ্যা চাল চালেন। আপনি তাদের সেই ‘কাঙ্ক্ষিত প্রার্থী’ হলে সেটা ধরে ফেলতে পারবেন। এবং স্মার্ট উত্তর দিয়ে নিয়ে নিতে পারনের এপোয়ারমেন্ট লেটার।
মার্কিন ব্যবসা ভিত্তিক সাময়িকী ফোর্বসের প্রতিবেদন অনুযায়ী
সাধারণত, ইন্টারভিউতে চাকরিদাতার যে কয়েকটি মিথ্যা বলেন সেগুলো হল:
এখন যে পরিস্থিতি তে আপনাকে কাজ করতে হবে, তাতে আপনার ওপর অনেক কাজের প্রেসার পড়তে পারে। তবে ভয়ের কিছু নেই। শিগগিরই আপনাকে সহায়তা করার জন্য নতুন কাউকে নেওয়া হবে।
এই চাকরির জন্য কেমন বেতন এবং আনুষঙ্গিক প্যাকেজ দেওয়া হতে পারে এটা এখনো নিশ্চিত নয়।
বেতন হয়তো আপনার প্রত্যাশা অনুযায়ী বেশি না, কিন্তু অন্যান্য সুবিধা অনেক।
দুঃখিত, মনে হচ্ছে আমরা প্রথমে যেমনটা ভেবেছিলাম এখন তেমন বাজেট আমাদের হাতে নেই। শুরুতে সম্ভবত আপনাকে একটু নিচের পজিশনে কাজ করতে হবে। কিন্তু আশংকার কিছু নেই, শিগগিরই আপনাকে উপরের পজিশনে নিয়ে আসা হবে।
হয়তো আপনাকে সিদ্ধান্ত জানাতে পারবো আগামী সপ্তাহের শুরুতে।
চাকরির ইন্টারভিউতে যাওয়ার আগে এই বিষয়গুলো অবশ্যই মাথায় রাখবেন। চাকরিদাতারা সঙ্গে আপনার এই ‘ইঁদুর বিড়াল খেলায়’ আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে। উপরের মিথ্যা চালগুলো মাত করতে আপনাকে কয়েকটা বিষয়ে জানতে হবে।
প্রথমত, ‘আপাতত কাজের অনেক প্রেসার’ নিতে হবে। পরে ‘নতুন কাউকে নিয়োগ’ দেয়া হবে। এ সব বলে নিয়োগদাতা আসলে আপনাকে দীর্ঘদিন খাটিয়ে নেওয়ার কথা ভাবছেন। দুই/তিনজনের কাজ একজনকে দিয়ে করিয়ে নিতে পারলে তো সংস্থার অনেক লাভ আর কি!
দ্বিতীয়ত, সিম্পল লজিক, কোনো নিয়োগদাতাই কর্মীর জন্য মাস গেলে কত টাকা খরচ করবেন সেটা ঠিক না করে জব সার্কুলার দেন না বা কারো সাথে ইন্টারভিউতে বসেন না। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া প্রতিষ্ঠানের জন্য নতুন কাওকে খোঁজা হয় না। এবং তার জন্য কতটুকু বেতন ভাতা বরাদ্দ হবে তাও নির্ধারণ করা থাকে।
তৃতীয়ত, অনেক অনেক সুবিধার কথা বলে আদাতে বেতন কম রাখার চেষ্টা আরকি। সুবিধা যতই হউক ট্যাক্স এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক কর্তন বাদ দিয়ে আপনার ব্যাংক একাউন্টে কত ব্যালেন্স ঢুকছে সেটা দেখবেন।
চতুর্থত, আগেই বলেছি প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য, কম টাকায় সেরা প্রার্থীকে বেছে নেয়া। আপনাকে যত অল্প অর্থে রাখা যায় প্রতিষ্ঠানের ততই লাভ। আপনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর আপনাকে নিয়ে দর কষাকষি চলবে কিছুক্ষণ এই আর কি।
পঞ্চমত, সাধারণত নিয়োগের এই স্টেজে এসে মোটামুটি একটা সিদ্ধান্ত নেয়া হয়ে যায়। যতই বলুক আগামী সপ্তাহ নয়, আপনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়তো নেওয়া হয়ে গেছে এরই মধ্যে।
সাধারণত, প্রার্থীকে বাজিয়ে দেখতে নিয়োগদাতার এই সব ‘মিথ্যা’ বলে একটা প্রতিকুল পরিস্থিতি তৈরি করে থাকেন। এই ধরণের পরিস্থিতি কিভাবে সামলাবেন তার জন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখবেন। যে কোনা প্রতিকুল পরিস্থিতিকে অনুকূল করতে পারার সক্ষমতা অনেক বড় একটা গুণ। আর সেই গুন জ্বলে উঠুক একেবারে চাকরির ইন্টারভিউ বোর্ড থেকে।
Leave a Reply